৩০ লাখ টাকা যৌতুকের দাবিতে গৃহবধূকে হত্যার অভিযোগ
৩ নভেম্বর ২০২৪ ২০:২৫
লক্ষ্মীপুর: ‘আমি যাবো না মা, যৌতুকের ৩০ লাখ টাকা না দিলে তারা আমাকে মেরে ফেলবে। ওই টাকা দিতে না পারায় নির্মম নির্যাতন চালিয়ে হত্যা করা হয় জান্নাতুল ফারহানা হাসিকে। তার স্বামী পুলিশ সদস্য হুমায়ুন কবীরসহ শ্বশুর-শ্বাশুড়ি এ হত্যাকাণ্ডের সঙ্গে জড়িত। কিন্তু পুলিশ মামলাও নিচ্ছে না, কাউকে গ্রেফতারও করছে না। দ্রুত এ হত্যার সঙ্গে জড়িতিদের আইনের আওতায় এনে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দিতে হবে’।
রোববার (৩ নভেম্বর) দুপুরে লক্ষ্মীপুর প্রেস ক্লাবের সামনে মেয়ে হত্যার বিচারের দাবিতে মানববন্ধনে দাঁড়িয়ে এভাবেই কথাগুলো বলেন হাসির মা রোজিনা আক্তারসহ স্বজনরা। এসময় ছয় বছরের শিশু আরাবি মায়ের হত্যার বিচার চেয়ে জড়িতদের গ্রেফতারের দাবিতে ফেস্টুন হাতে মানববন্ধনে অংশ নেয়। নিপীড়ন বিরোধী ছাত্র-সমাজের ব্যানারে এ মানববন্ধনের আয়োজন করা হয়েছে।
হাসি লক্ষ্মীপুর সরকারি কলেজের ব্যবস্থাপনা বিভাগের তৃতীয় বর্ষের ছাত্রী ছিল। সে সদর উপজেলার চন্দ্রগঞ্জ ইউনিয়নের দেওপাড়া গ্রামের শহিদুল ইসলামের মেয়ে।
এদিকে হত্যার সঙ্গে জড়িতদের গ্রেফতার না করলে আরও কঠোর কর্মসূচির ঘোষণা দেয় নিপীড়ন বিরোধী ছাত্র-সমাজ।
হাসির মাসহ পরিবারের লোকজন জানায়, প্রায় ৭ বছর আগে নোয়াখালীর বেগমগঞ্জ উপজেলার মহেশপুর গ্রামের জাহের মিয়ার ছেলে হুমায়ুনের সঙ্গে হাসির বিয়ে হয়। হুমায়ুন লক্ষ্মীপুর জজকোর্টে দায়িত্বরত পুলিশ কনস্টেবল। বিয়ের পর থেকে স্বামীসহ শশুর পক্ষের লোকজন তার কাছ থেকে যৌতুক দাবী করে আসছিলেন। তা দিতে অপারগতা প্রকাশ করায় শ্বশুর বাড়ির লোকজন নির্মম নির্যাতন চালিয়ে হাসিকে হত্যা করে।
হাসির মা রোজিনা আক্তার বলেন, বাড়িতে আসতে বললে হাসি আসতো না ভয়ে। সে বলেছে, মা ৩০ লাখ টাকা যৌতুক না দিলে তারা আমাকে মেরে ফেলবে। ওই টাকা না পাওয়ায় ২৯ অক্টোবর শ্বশুর বাড়িতে নির্যাতন চালিয়ে হাসিকে হত্যা করা হয়েছে। এ ঘটনায় তার স্বামী ও শ্বশুর-শ্বাশুড়ি জড়িত। এখনো পর্যন্ত মামলা নেওয়া হয়নি। কাউকে গ্রেফতার করেনি। এ হত্যার সঙ্গে জড়িতদের দ্রুত গ্রেফতার করে বিচারের আওতায় আনার দাবি জানাচ্ছি।
মানববন্ধনে অংশগ্রহণকারী ছাত্র প্রতিনিধি সরোয়ার হোসেন, পিংকি পাটওয়ারী, রাহিমা ইসলাম সেতু ও রেদওয়ান হোসেন বক্তব্যে বলেন, হত্যার ঘটনায় অভিযুক্ত হুমায়ুন পুলিশের লোক। এজন্য এখনও পর্যন্ত মামলা নেওয়া হয়নি। এখনো পর্যন্ত পুলিশ কোন তদন্তও করছে না। আমরা এ হত্যার ঘটনায় দ্রুত পুলিশ প্রশাসনের কার্যকরী ভূমিকা দেখতে চাই। তা না হলে আরও কঠোর কর্মসূচি গ্রহণ করা হবে।
এ ব্যাপারে বক্তব্য জানতে বেগমগঞ্জ থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মো. লিটন দেওয়ানকে একাধিকবার কল করেও কথা বলা সম্ভব হয়নি।
সারাবাংলা/এসআর