ঢাকা: গ্রাহকদের কাছ থেকে প্রতারণার মাধ্যমে প্রায় ৪০০ কোটি টাকা আত্মসাৎ ও মানিলন্ডারিং এর অভিযোগে আল আকাবা বহুমুখী সমবায় সমিতির পরিচালকদের বিরুদ্ধে মানিলন্ডারিং আইনে মামলা করেছে সিআইডি।
বৃহস্পতিবার (২১ আগস্ট) দুপুরে সিআইডির বিশেষ পুলিশ সুপার (মিডিয়া) জসীম উদ্দিন খান এ তথ্য জানিয়েছেন।
তিনি বলেন, ব্যাংকের চেয়ে উচ্চ মুনাফার লোভ দেখিয়ে গ্রাহকদের কাছ থেকে প্রতারণা করে ৪০০ কোটি টাকা হাতিয়ে নেওয়ায় আল আকাবা বহুমুখী সমবায় সমিতির পরিচালকদের বিরুদ্ধে মানিলন্ডারিং আইনে মামলা করেছে সিআইডি। জামালপুর জেলার মাদারগঞ্জ থানায় বুধবার (২০ আগস্ট) মানিলন্ডারিংয়ের এই মামলাটি করা হয়।
জসীম উদ্দিন বলেন, ‘জামালপুর জেলার মাদারগঞ্জ উপজেলা সমবায় কার্যালয়ের রেজিস্ট্রেশন নিয়ে গড়ে উঠেছে বিভিন্ন নামের সমবায় সমিতি। এসব সমিতির মধ্যে উল্লেখযোগ্য স্থানে রয়েছে মাদারগঞ্জ আল-আকাবা বহুমুখী সমবায় সমিতি লিমিটেড। সমিতিটি জামালপুর জেলার বিভিন্ন থানা এবং পার্শ্ববর্তী জেলার বিভিন্ন এলাকার দরিদ্র জনগোষ্ঠীকে স্বল্প সময়ে অধিক মুনাফার প্রলোভন দেখিয়ে গ্রাহকদের আকৃষ্ট করতো। ব্যাংকের চেয়ে বেশি হারে মুনাফার লোভ দেখিয়ে প্রায় ১৩ থেকে ১৪ হাজার গ্রাহকের কাছ থেকে বিপুল পরিমাণ টাকা সংগ্রহ করে। প্রতি লাখে মাসে ১২০০-১৫০০ টাকার মুনাফার কথা বলে অর্থ সংগ্রহ করে শুরুতে সীমিত পরিসরে লাভ প্রদান করলেও পরবর্তীতে তা বন্ধ করে দিয়ে সমিতির মালিক ও কর্মকর্তা-কর্মচারীরা অফিস তালাবদ্ধ করে গা-ঢাকা দেয়।’
তিনি বলেন, ‘অনুসন্ধানে জানা যায়, মানিলন্ডারিং করে সমিতির পরিচালকরা তাদের নিজ নিজ নামে বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান খুলে ৩১১৩ শতাংশ সম্পত্তি ক্রয় করে। এসব সম্পত্তির মধ্যে জামালপুর জেলার সদর থানাধীন গহেরপাড়া মৌজায় প্রায় ১৫ একর জমির ওপর আলফা অটো ব্রিকস নামে একটি ইট ভাটা, গাজীপুর দক্ষিণ সালনা মৌজায় প্রায় ৩৫০ শতাংশ জমির উপর আলফা ড্রেসওয়ার নামে একটি গার্মেন্টস কারখানা রয়েছে। তাছাড়া আলফা ডেভলপার, আলফা ড্রেসওয়ারের নামে বসুন্ধরা আবাসিক প্রকল্পে ৯টি প্লট রয়েছে। বাকি সম্পত্তিগুলো ঢাকা, নারায়ণগঞ্জ, গাজীপুর ও জামালপুর জেলা সমূহের বিভিন্ন লোকেশনে রয়েছে।’
তিনি আরও বলেন, ‘আবেদনের প্রেক্ষিতে জামালপুর দায়রা জজ আদালত ওই ভূ-সম্পত্তির স্থাপনা, প্রতিষ্ঠান ও অন্যান্য অবকাঠামোর উপর ক্রোকাদেশ প্রদান করেন। এছাড়াও ইতোপূর্বে অভিযোগ সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিদের বিদেশ গমনাগমন রোধের জন্য আদালত আদেশ দিয়েছেন। নিবিড় তদন্তের মাধ্যমে প্রকৃত দোষীদের বিচারের আওতায় নিয়ে আসার জন্য সিআইডির ফাইন্যান্সিয়াল ক্রাইম ইউনিট নিরলস কাজ করে যাচ্ছে।’