Tuesday 09 Dec 2025
Sarabangla | Breaking News | Sports | Entertainment

বিশ্বজিৎ হত্যার দৃশ্যচিত্র আজও দেশের মানুষকে কাঁদায়: অধ্যাপক রইচ উদ্দীন

জবি করেসপন্ডেন্ট
৯ ডিসেম্বর ২০২৫ ১৮:১৮

বিশ্ববিদ্যালয়ের শহিদ সাজিদ ভবনের নিচতলায় শিক্ষক সমিতির লাউঞ্জে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলন।

জবি: জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক সমিতির সাধারণ সম্পাদক অধ্যাপক ড. মো. রইচ উদ্দীন বলেছেন, ‘বিশ্বজিৎ হত্যার দৃশ্যচিত্র আজও দেশের মানুষকে কাঁদায় এবং আমাদের স্মরণ করিয়ে দেয় যে দণ্ডহীনতার সংস্কৃতি রাষ্ট্র ও সমাজ উভয়ের জন্য একটি মারাত্মক হুমকি।

মঙ্গলবার (৯ ডিসেম্বর) বিশ্ববিদ্যালয়ের শহিদ সাজিদ ভবনের নিচতলায় শিক্ষক সমিতির লাউঞ্জে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে তিনি এসব কথা বলেন।

অধ্যাপক রইচ উদ্দীন বলেন, ‘২০১২ সালের এই দিনে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের সামনে রাজনৈতিক সন্ত্রাসের বর্বরতায় একজন নিরীহ নাগরিককে ভুল পরিচয়ের ভিত্তিতে প্রকাশ্যে কুপিয়ে হত্যা করা হয়। এই নৃশংস ঘটনা বাংলাদেশের বিবেককে আহত করেছে এবং মানবিক ও গণতান্ত্রিক মূল্যবোধকে গভীরভাবে প্রশ্নবিদ্ধ করেছে। বিশ্বজিতের মৃত্যু শুধু একজন মানুষের প্রাণহানি নয়; এটি ছিল মানবতা, ন্যায়বিচার ও গণতান্ত্রিক মূল্যবোধের ওপর বর্বর আঘাত।’

বিজ্ঞাপন

তিনি আরও বলেন, ‘আজকের এই দিনে আমি বিশ্বজিৎকে শ্রদ্ধার সঙ্গে স্মরণ করছি এবং ফ্যাসিবাদের পতনে তার আত্মত্যাগকে গভীরভাবে অনুধাবন করছি। কোনো রাজনৈতিক মতাদর্শ, সংগঠন বা ক্ষমতার ছায়ায় দাঁড়িয়ে নিরীহ মানুষকে হত্যার ন্যূনতম বৈধতাও কারো নেই।’

অধ্যাপক রইচ উদ্দীন পুনরায় উল্লেখ করেন, ‘বিশ্বজিৎ হত্যার দৃশ্য আজও দেশের মানুষকে ব্যথিত করে। এটি আমাদের মনে করিয়ে দেয়— দণ্ডহীনতার সংস্কৃতি রাষ্ট্র ও সমাজের নিরাপত্তার জন্য কতটা ভয়াবহ। আমি গভীর শোকের সঙ্গে স্মরণ করছি নিহত বিশ্বজিৎ দাসকে, তার শোকাহত পরিবারকে এবং ন্যায়বিচারের জন্য সংগ্রামরত সকল মানবাধিকারকর্মীকে।’

তিনি বলেন, “ন্যায়বিচারের পূর্ণ বাস্তবায়ন নিশ্চিত করতে হবে। ফৌজদারি বিচারপ্রক্রিয়া শেষ হলেও দণ্ডপ্রাপ্তদের সাজা কার্যকরে যাতে কোনো বিলম্ব বা শিথিলতা না ঘটে— এটি রাষ্ট্রের প্রতি আমাদের দৃঢ় আহ্বান। রাজনৈতিক সন্ত্রাস ও ছাত্র সংগঠনের সহিংসতা কঠোরভাবে নির্মূল করতে হবে। উচ্চশিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলোকে দলীয় সন্ত্রাসমুক্ত করা শুধু প্রশাসনের দায়িত্ব নয়; আমাদের সকলকেও এ ব্যাপারে সতর্ক ও দায়িত্বশীল থাকতে হবে।”

তিনি আরও যোগ করেন, ‘নিরীহ নাগরিকের নিরাপত্তা নিশ্চিত করা রাষ্ট্রের নৈতিক দায়িত্ব। বিশ্বজিৎ দাসের মতো কেউ যেন আর রাজনৈতিক সংঘর্ষের বলি না হয়, তা নিশ্চিত করতে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীকে আরও পেশাদার, নিরপেক্ষ ও মানবিক ভূমিকা পালন করতে হবে। বিশ্বজিতের স্মৃতি সংরক্ষণে স্থায়ী উদ্যোগ প্রয়োজন। এরইমধ্যে একটি স্মৃতিফলক স্থাপন করা হয়েছে। ভবিষ্যতে আরও বৃহৎ পরিসরে স্থায়ী স্মৃতিস্তম্ভ নির্মাণের উদ্যোগ প্রক্রিয়াধীন— এ বিষয়ে সবার সহযোগিতা কাম্য।’

সংবাদ সম্মেলনে শিক্ষক সমিতির কোষাধ্যক্ষ অধ্যাপক ড. ইমরানুল হক, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ বিলাল হোসাইনসহ সমিতির অন্যান্য নেতারা, বিভিন্ন বিভাগের শিক্ষক, শিক্ষার্থী, ক্রিয়াশীল ছাত্র সংগঠনের নেতৃবৃন্দ ও সংবাদকর্মীরা উপস্থিত ছিলেন।

এর আগে বিশ্বজিৎ দাসের মৃত্যুদিন উপলক্ষে শিক্ষক সমিতির সাধারণ সম্পাদক অধ্যাপক ড. মো. রইছ উদ্দীনের নেতৃত্বে বিশ্বজিৎ চত্বরে পুষ্পস্তবক অর্পণ করা হয়। এতে বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন বিভাগের শিক্ষক, শিক্ষার্থী এবং ছাত্র সংগঠনের নেতারা অংশ নেন।

বিজ্ঞাপন

আরো

সম্পর্কিত খবর