Saturday 06 Dec 2025
Sarabangla | Breaking News | Sports | Entertainment

মাহমুদুর রহমানকে খেলাপি ঋণ পরিশোধে ইসলামী ব্যাংকের চূড়ান্ত নোটিশ

স্টাফ করেসপন্ডেন্ট
৬ ডিসেম্বর ২০২৫ ১২:৪১

নাগরিক ঐক্যের আহ্বায়ক মাহমুদুর রহমান মান্না।

ঢাকা: ইসলামী ব্যাংক বাংলাদেশ লিমিটেডের বগুড়ার বড়গোলা শাখা আফাকু কোল্ড স্টোরেজ লিমিটেডের নামে নেওয়া ৩৮ কোটি ৪ লাখ ৭৬ হাজার টাকার খেলাপি ঋণ পরিশোধে নাগরিক ঐক্যের আহ্বায়ক মাহমুদুর রহমান মান্না এবং তার অংশীদার আওয়ামী লীগ নেতা এ বি এম নাজমুল কাদির শাজাহান চৌধুরীকে চূড়ান্ত ‘কল ব্যাক নোটিশ’ জারি করেছে। বুধবার (৩ ডিসেম্বর) শাখা ব্যবস্থাপক মো. তৌহিদ রেজার সই করা নোটিশটি পাঠানো হয়।

নোটিশে বলা হয়েছে, আগামী ১৮ ডিসেম্বরের মধ্যে সম্পূর্ণ বকেয়া পরিশোধ না করলে ব্যাংক কর্তৃপক্ষ আইনি পদক্ষেপ নিতে বাধ্য হবে।

ব্যাংকের নোটিশ অনুযায়ী, ২০১০ সালে প্রতিষ্ঠানটিকে ২২ কোটি টাকার বিনিয়োগ অনুমোদন দেওয়া হয়েছিল। কিন্তু মুনাফা, চার্জ ও জরিমানা নিয়মিত পরিশোধ না করায় বকেয়ার পরিমাণ বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৩৮ কোটি ৪ লাখ ৭৬ হাজার টাকায়। ব্যাংক দাবি করেছে—লাভজনক প্রকল্প হওয়া সত্ত্বেও ঋণগ্রহীতারা ইচ্ছাকৃতভাবে দায় পরিশোধ করেননি।

বিজ্ঞাপন

ইসলামী ব্যাংক আরও জানিয়েছে, ঋণগ্রহীতাদের আবেদনের প্রেক্ষিতে ছয়বার পুনঃতফসিল করা হলেও তারা প্রতিশ্রুতিমতো কিস্তি প্রদান করেননি। নিয়মিত কিস্তি দিলে ২০১৭ সালের মধ্যেই ঋণ পরিশোধ হওয়ার কথা ছিল—কিন্তু ‘সদিচ্ছার অভাবেই’ দায় বর্তমান অঙ্কে পৌঁছেছে বলে নোটিশে উল্লেখ রয়েছে।

নোটিশে আরও বলা হয়, বহুবার মৌখিক ও লিখিত তাগাদা দেওয়া হলেও মান্নারা কোনো অর্থ পরিশোধ করেননি। এ পরিস্থিতিতে ব্যাংকের পক্ষে তাদের সঙ্গে ব্যবসায়িক সম্পর্ক বজায় রাখা সম্ভব নয় বলেও মন্তব্য করা হয়েছে।

স্থানীয় রাজনৈতিক সূত্র এবং পুলিশের বিশেষ শাখার তথ্যের বরাতে অভিযোগ উঠেছে—প্রকল্পের বিনিয়োগের একটি উল্লেখযোগ্য অংশ মান্না ও তার অংশীদার শাজাহান চৌধুরী আত্মসাৎ করেছেন। জানা গেছে, প্রতিষ্ঠানের ব্যবস্থাপনা পরিচালক শাজাহান চৌধুরী গত বছরের ১৯ আগস্ট যুক্তরাষ্ট্রে পালিয়ে যান এবং তার মাধ্যমেই বিপুল পরিমাণ অর্থ বিদেশে পাচার হয়েছে বলে সন্দেহ করছে স্থানীয় মহল।

আগামী ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে বগুড়া-২ (শিবগঞ্জ) আসনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করতে চান মাহমুদুর রহমান মান্না। কিন্তু গণপ্রতিনিধিত্ব আদেশ (আরপিও) অনুযায়ী ঋণখেলাপি হলে কোনো ব্যক্তি নির্বাচনে অযোগ্য বিবেচিত হন। ফলে মান্নার প্রার্থিতা নিয়েও অনিশ্চয়তা দেখা দিয়েছে।

রাজনৈতিক অঙ্গনে প্রশ্ন উঠেছে—দীর্ঘদিন আওয়ামী লীগবিরোধী অবস্থান নেওয়া মান্না কীভাবে সেই দলের একজন প্রভাবশালী নেতার সঙ্গে ব্যবসায়িকভাবে যুক্ত ছিলেন, যার বিরুদ্ধে জুলাই গণহত্যার ঘটনায় ৯টি মামলা রয়েছে। বিষয়টি স্থানীয় জনগণের মধ্যেও ক্ষোভ সৃষ্টি করেছে।

সারাবাংলা/টিএম/এমপি
বিজ্ঞাপন

আরো

সম্পর্কিত খবর