Sunday 08 Jun 2025
Sarabangla | Breaking News | Sports | Entertainment

ড. ইউনূসের সাক্ষাৎ পেতে অনুরোধ জানিয়ে চিঠি দিলেন টিউলিপ

আন্তর্জাতিক ডেস্ক
৮ জুন ২০২৫ ১৫:২৬ | আপডেট: ৮ জুন ২০২৫ ১৫:৪১

যুক্তরাজ্যের সাবেক সিটি মিনিস্টার টিউলিপ সিদ্দিক বাংলাদেশের অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূসের সঙ্গে বৈঠকের অনুরোধ জানিয়েছেন। এ সংক্রান্ত একটি চিঠি তিনি ড. মুহাম্মদ ইউনূসকে পাঠিয়েছেন।

রোববার (৮ জুন) ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম দ্য গার্ডিয়ানে এ তথ্য প্রকাশিত হয়েছে।

চিঠিতে টিউলিপ বলেছেন, বাংলাদেশের দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) ‘রাজনৈতিক উদ্দেশ্যপ্রণোদিত’ অভিযোগের বিষয়ে এই বৈঠকে ‘ভুল বোঝাবুঝি’ দূর করতে চান তিনি।

টিউলিপ সিদ্দিক বাংলাদেশের সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ভাগ্নি। তার বিরুদ্ধে বাংলাদেশে দুর্নীতির অভিযোগ উঠেছে।

বিজ্ঞাপন

অভিযোগ বলা হয়েছে, তিনি সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার শাসনামলে ক্ষমতার অপব্যবহার করে সুবিধা ভোগ করেছেন। তার খালা শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে সম্প্রতি মানবতাবিরোধী অপরাধের জন্য তার অনুপস্থিতিতে বিচার শুরু হয়েছে। দুদক দাবি করেছে, টিউলিপ বা তার মা ‘ক্ষমতার অপব্যবহার ও প্রভাব খাটিয়ে’ অবৈধভাবে ৭ হাজার ২০০ বর্গফুটের একটি প্লট পেয়েছেন।

সিদ্দিক এসব অভিযোগ অস্বীকার করেছেন। তার আইনি দল অভিযোগগুলোকে ‘রাজনৈতিক উদ্দেশ্যপ্রণোদিত ও ভিত্তিহীন’ বলে উল্লেখ করেছে।

তিনি দাবি করেছেন এসব বিষয়ে তার সঙ্গে বা তার আইনজীবীদের কেউ এখনও আনুষ্ঠানিকভাবে যোগাযোগ করেনি।

চিঠিতে টিউলিপ সিদ্দিক ড. ইউনূসকে লিখেছেন, ‘লন্ডনে আপনার সফরকালে যদি আমাদের সাক্ষাতের সুযোগ হয়, তবে আমার মায়ের বোন সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সঙ্গে সম্পর্কিত কোনো প্রশ্নের উত্তর আমাকে দিতে হবে—তা পরিষ্কার করা সম্ভব হবে।’

চিঠিতে আরও লিখেছেন, ‘এই বৈঠক ঢাকার দুর্নীতি দমন কমিটির সৃষ্ট ভুল বোঝাবুঝি দূর করতে পারে। যেখানে আমার খালা ও সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সঙ্গে জড়িত কিছু প্রশ্নের জবাব দেওয়ার প্রয়োজন আছে বলে আছে বলে ধারণা করা হচ্ছে।’

তিনি আরও লিখেছেন, ‘আমি লন্ডনে জন্মগ্রহণকারী একজন ব্রিটিশ নাগরিক এবং গত এক দশক ধরে হ্যাম্পস্টেড ও হাইগেটের সংসদ সদস্য। বাংলাদেশের প্রতি আমার আবেগ থাকলেও, আমি সেখানে জন্মগ্রহণ করিনি, থাকি না বা কোনো ব্যবসায়িক স্বার্থও নেই।’

টিউলিপ অভিযোগ করেন, তার আইনজীবীরা লন্ডন থেকে দুদকের সঙ্গে যোগাযোগের চেষ্টা করলেও কোনও জবাব পাননি।

উলটো সংস্থাটি ঢাকার একটি ‘অচেনা ঠিকানায়’ কাগজপত্র পাঠিয়ে যাচ্ছে। তিনি চিঠিতে লিখেছেন, এই কল্পিত তদন্তের প্রতিটি পদক্ষেপ সংবাদমাধ্যমে ফাঁস করা হচ্ছে অথচ আমার আইনি দলের সঙ্গে কোনও যোগাযোগ করা হচ্ছে না।

সিদ্দিক আরও বলেন, আপনি নিশ্চয়ই বুঝতে পারবেন, এসব অভিযোগ কীভাবে আমার পার্লামেন্টারি দায়িত্ব ও দেশের প্রতি অঙ্গীকারকে ব্যাহত করছে।

গত বছর যুক্তরাজ্যের মন্ত্রী পর্যায়ের মানদণ্ড বিষয়ক উপদেষ্টা লরি ম্যাগনেস তাকে নির্দোষ ঘোষণা করলেও সিদ্দিক পদত্যাগ করেন। তিনি বলেছিলেন, বিতর্ক কেয়ার স্টারমারের নতুন সরকারের জন্য ‘বিব্রতকর’ হয়ে দাঁড়িয়েছে।

সিদ্দিকের সম্পদ বৈধ উপায় ছাড়া অন্য কোনও উপায়ে অর্জিত হয়েছে এমন কোনও প্রমাণ ম্যাগনাস পাননি, তবে তিনি আরও যোগ করেছেন যে বাংলাদেশের সঙ্গে তার পরিবারের সম্পর্ক থেকে উদ্ভূত সুনামের ঝুঁকির মুখে তিনি আরও বেশি বেঁচে থাকতে পারতেন।

তদন্তে ২০১৩ সালে মস্কোতে তার খালা এবং ভ্লাদিমির পুতিনের মধ্যে একটি পারমাণবিক চুক্তি সইয়ের সময় তার উপস্থিতিও খতিয়ে দেখা হয়েছিল। যার বিষয়ে সিদ্দিকের অর্থ আত্মসাতের অভিযোগ মিডিয়ায় প্রচারিত হয়েছিল। মান উপদেষ্টা তার ব্যাখ্যা মেনে নিয়েছিলেন যে তিনি মস্কোতে সামাজিকভাবে এবং পর্যটক হিসেবে ছিলেন।

গত মাসে জাতীয় অপরাধ সংস্থা সিদ্দিকের খালার সঙ্গে যুক্ত দুই ব্যক্তির লন্ডনের প্রায় ৯০ মিলিয়ন পাউন্ডের বিলাসবহুল সম্পত্তি জব্দ করেছে।

উল্লেখ্য়, বাংলাদেশের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস ৯ জুন লন্ডন সফরে যাচ্ছেন। ব্রিটিশ রাজপরিবারের আয়োজনে তাকে কিং চার্লস হারমনি অ্যাওয়ার্ড-২০২৫ প্রদান করা হবে। এছাড়া, আন্তর্জাতিক থিংক ট্যাংক চ্যাথাম হাউজের সঙ্গে তার কর্মসূচি চূড়ান্ত হয়েছে। ড. ইউনূসের এই সফরে ব্রিটিশ রাজা তৃতীয় চার্লস ও প্রধানমন্ত্রী কেয়ার স্টারমারের সঙ্গে সাক্ষাৎ করার কথা রয়েছে।

সারাবাংলা/এমপি

অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস টিউলিপ সিদ্দিক দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)

বিজ্ঞাপন

আরো

সম্পর্কিত খবর