ফিলিপাইনে অন্তত ১১৪ জনের প্রাণহানির পর টাইফুন ‘কালমায়েগি’ এখন আঘাত হেনেছে ভিয়েতনামে। ফিলিপাইনের জাতীয় দুর্যোগ সংস্থা জানিয়েছে, এই ঘূর্ণিঝড়ে আরও ১২৭ জন নিখোঁজ এবং লাখো মানুষ গৃহহীন হয়ে পড়েছেন।
পরিস্থিতি মোকাবেলায় রাষ্ট্রপতি ফার্ডিনান্ড মার্কোস জুনিয়র দেশজুড়ে জরুরি অবস্থা ঘোষণা করেছেন এবং আরও একটি আসন্ন সুপার টাইফুনের ব্যাপারে সতর্ক করেছেন।
বৃহস্পতিবার (৬ নভেম্বর) সকাল ১০টায় (স্থানীয় সময়) মার্কিন জয়েন্ট টাইফুন ওয়ার্নিং সেন্টার (JTWC) জানিয়েছে, কালমায়েগি ফিলিপাইন অতিক্রম করার পর পুনরায় শক্তি সঞ্চয় করেছে এবং এটি ক্যাটাগরি–৪ টাইফুনে পরিণত হয়েছে।
সংস্থাটির সর্বশেষ সতর্কতায় বলা হয়েছে, ‘ঝড়টি এখন ভিয়েতনামের উপকূলের দিকে ধেয়ে আসছে এবং তীব্রতার সর্বোচ্চ শিখরে পৌঁছেছে। এটি মধ্য ভিয়েতনামের কুই নহন শহরের উত্তরে স্থলভাগে আঘাত হানছে।’
স্থানীয়ভাবে ‘টিনো’ নামে পরিচিত এই টাইফুনটি মঙ্গলবার (৪ নভেম্বর) ফিলিপাইনের মধ্যাঞ্চলে অন্তত আটটি প্রদেশে ব্যাপক ধ্বংসযজ্ঞ চালায়। এটি চলতি বছরের সবচেয়ে প্রাণঘাতী প্রাকৃতিক দুর্যোগ হিসেবে বিবেচিত হচ্ছে।
বুধবার (৫ নভেম্বর) সেবু প্রদেশে ঝড়ের তীব্রতা কমলেও দেখা যায়, হাজারো ঘরবাড়ি বিধ্বস্ত, রাস্তায় ধ্বংসস্তূপ আর উলটে থাকা যানবাহনের সারি। দুই লাখেরও বেশি মানুষকে নিরাপদ আশ্রয়ে সরিয়ে নেওয়া হয়েছে। অনেকের বাড়িঘর নিশ্চিহ্ন হয়ে গেছে।
দুর্যোগ মোকাবেলায় জরুরি পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতা অভিযান শুরু হয়েছে। স্থানীয় প্রশাসন জানিয়েছে, ধ্বংসস্তূপ সরিয়ে ফেলাই এখন অগ্রাধিকার, যাতে নিখোঁজদের সন্ধান ও ত্রাণ কার্যক্রম দ্রুত পরিচালনা করা যায়।
রাষ্ট্রপতি মার্কোস বলেছেন, ‘কালমায়েগি একটি জাতীয় বিপর্যয়। জরুরি অবস্থা জারি থাকায় সরকার দ্রুত জরুরি তহবিল ব্যবহার করতে পারবে এবং খাদ্যসংকট ও অতিরিক্ত মূল্যবৃদ্ধি প্রতিরোধে পদক্ষেপ নেওয়া হবে।’
এদিকে তিনি সতর্ক করেছেন, উত্তর ফিলিপাইনের দিকে এগিয়ে আসছে আরও শক্তিশালী ঝড় ‘ফুং-ওং’ (স্থানীয় নাম ‘উওয়ান’)। ফিলিপাইনের আবহাওয়া দফতর PAGASA জানিয়েছে, শনিবারের মধ্যে এটি সুপার টাইফুনে রূপ নিতে পারে, যা রাজধানী ম্যানিলা অবস্থিত লুজন দ্বীপের উত্তর বা মধ্যাঞ্চলে আঘাত হানার আশঙ্কা রয়েছে।