তিন চীনা নভোচারীর পৃথিবীতে ফেরার পরিকল্পনা স্থগিত করেছে বেইজিং। তাদের বহনকারী মহাকাশযান ‘শেনঝু-২০’ সম্ভবত মহাকাশের ধ্বংসাবশেষের আঘাতে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।
বুধবার (৫ নভেম্বর) চীনের জাতীয় মহাকাশ প্রশাসন (সিএনএসএ) এক বিবৃতিতে জানায়, নভোচারী চেন দং, চেন ঝোংরুই ও ওয়াং জি–এর ছয় মাসের মিশন শেষে সেদিনই পৃথিবীতে ফেরার কথা ছিল। কিন্তু ফেরার ঠিক আগে মহাকাশযানটিতে সম্ভাব্য আঘাতজনিত ঝুঁকি ধরা পড়ায় পরিকল্পনা স্থগিত রাখা হয়েছে।
সিএনএসএ জানায়, এখন চলছে ক্ষতির মাত্রা নির্ধারণ ও ঝুঁকি বিশ্লেষণের কাজ। নভোচারীরা কখন ফিরবেন, সে বিষয়ে কোনো নতুন সময়সূচি এখনো ঘোষণা করা হয়নি।
এই তিন নভোচারী গত এপ্রিল মাসে চীনের অভ্যন্তরীণ মঙ্গোলিয়া অঞ্চল থেকে মহাকাশে যাত্রা করেছিলেন।
এর কয়েক দিন আগে চীন সফলভাবে ‘শেনঝু-২১’ মহাকাশযান উৎক্ষেপণ করে আরও তিন নতুন নভোচারীকে ‘তিয়ানগং’ বা ‘স্বর্গীয় প্রাসাদ’ মহাকাশ স্টেশনে পাঠিয়েছে। নতুন এই দলে আছেন ৩২ বছর বয়সী উ ফেই, যিনি চীনের ইতিহাসে সবচেয়ে তরুণ নভোচারী হিসেবে প্রশংসিত হয়েছেন। নতুন দল স্টেশনের নিয়ন্ত্রণ নেওয়ার পর পুরোনো দলের পৃথিবীতে ফেরার কথা ছিল।
‘শেনঝু-২১’ স্টেশনে পৌঁছানোর পর দুই দলের মধ্যে আনুষ্ঠানিক হস্তান্তর অনুষ্ঠান সম্প্রচার করে চীনের রাষ্ট্রীয় টেলিভিশন। সেখানে চেন দং বলেছিলেন, “আমরা পৃথিবীতে ফেরার প্রস্তুতি নিচ্ছি।” তবে মহাকাশযান পরিদর্শনের পরই ফেরার প্রক্রিয়া আটকে যায়।
চীনা মহাকাশ সংস্থা জানিয়েছে, নভোচারীদের নিরাপত্তা ও শারীরিক সুস্থতা নিশ্চিত করতেই এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।
‘শেনঝু’ কর্মসূচি প্রতি ছয় মাস পরপর পরিচালিত হয় এবং চীনের মহাকাশ অগ্রযাত্রার একটি বড় গর্বের অংশ হয়ে উঠেছে। সাম্প্রতিক বছরগুলোতে চীন মহাকাশ গবেষণায় দ্রুত অগ্রগতি অর্জন করেছে— যা যুক্তরাষ্ট্রে নতুন উদ্বেগের জন্ম দিয়েছে।
তুলনামূলকভাবে, গত বছর মার্কিন নভোচারী সুনি উইলিয়ামস ও বুচ উইলমোর বোয়িংয়ের স্টারলাইনার ত্রুটির কারণে নয় মাস মহাকাশে আটকে ছিলেন। পরে তাঁরা স্পেসএক্সের ক্রু ড্রাগন ক্যাপসুলে করে নিরাপদে পৃথিবীতে ফেরেন।