রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন দুই দিনের রাষ্ট্রীয় সফরে ভারত যাচ্ছেন। সেখানে তিনি প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর সঙ্গে বৈঠক করবেন এবং দুই দেশের বার্ষিক শীর্ষ সম্মেলনে অংশ নেবেন।
বৃহস্পতিবার (৪ নভেম্বর) দিল্লিতে শুরু হতে যাওয়া ২৩তম ভারত–রাশিয়া বার্ষিক শীর্ষ সম্মেলনে দুই দেশের মধ্যে সামরিক সহযোগিতা, বাণিজ্য সম্প্রসারণ, জ্বালানি নিরাপত্তা এবং ভূ–রাজনৈতিক সমন্বয় নিয়ে উচ্চপর্যায়ের আলোচনা হওয়ার কথা রয়েছে।
যুক্তরাষ্ট্র যখন ভারতকে রাশিয়ার তেল কেনা কমানোর জন্য চাপ বাড়িয়েছে, ঠিক সেই সময় পুতিনের এই সফরে দিল্লি ও মস্কোর মধ্যে কয়েকটি গুরুত্বপূর্ণ চুক্তি সই হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। একই সময়ে মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের প্রশাসন রাশিয়া–ইউক্রেন যুদ্ধের অবসান নিয়ে মস্কো ও কিয়েভের সঙ্গে ধারাবাহিক আলোচনা চালিয়ে যাচ্ছে।
দীর্ঘ ঐতিহাসিক সম্পর্কের কারণে ভারত ও রাশিয়া বহুদিন ধরেই ঘনিষ্ঠ কৌশলগত মিত্র। পুতিন ও মোদীর ব্যক্তিগত সৌহার্দ্যও দুই দেশের সম্পর্ককে আরও দৃঢ় করেছে। কেন দুই দেশেরই একে অপরের প্রয়োজন, এবং এই সফরে কোন বিষয়গুলো সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ হতে পারে— তা স্পষ্ট হয়ে উঠছে আলোচনার কেন্দ্রবিন্দু থেকে।
সফরের ঠিক আগে রাশিয়ার পার্লামেন্ট ভারতের সঙ্গে একটি গুরুত্বপূর্ণ সামরিক চুক্তির অনুমোদন দিয়েছে। এই ‘রেসিপ্রোকাল এক্সচেঞ্জ অফ লজিস্টিক সাপোর্ট (RELOS)’ চুক্তির মাধ্যমে দুই দেশের সামরিক বাহিনী একে অপরের দেশে অবস্থানকালে সামরিক স্থাপনা, জ্বালানি, মেরামত ও লজিস্টিক সুবিধা ব্যবহার করতে পারবে। দুই পক্ষ গত ১৮ ফেব্রুয়ারি চুক্তিতে সই করলেও, মঙ্গলবার এটি স্টেট ড্যুমার চূড়ান্ত অনুমোদন পায়।
সংবাদ সংস্থা পিটিআই জানিয়েছে, প্রধানমন্ত্রী মিখাইল মিশুস্তিন গত সপ্তাহে ড্যুমার অনুমোদনের জন্য নথি পাঠান। স্পিকার ভ্যাচেস্লাভ ভলোদিন অধিবেশনের শুরুতেই তার ভাষণে ভারত–রাশিয়া সম্পর্ককে ‘সার্বিক ও কৌশলগত’ বলে বর্ণনা করেন এবং মস্কোর কাছে এই সম্পর্ক কতটা গুরুত্বপূর্ণ তা তুলে ধরেন।
পুতিনের মুখপাত্র দিমিত্রি পেসকভ সফরের আগেই বলেন, ‘দ্বিপাক্ষিক সহযোগিতার পরিধি নির্ভর করবে ভারত কতটা সক্রিয়ভাবে এগিয়ে আসে তার ওপর।’
তিনি জানান, বাণিজ্য, প্রতিরক্ষা, জ্বালানি এবং খনিজ তেলকে এই সফরের কেন্দ্রীয় অগ্রাধিকার হিসেবে দেখা হচ্ছে।