Wednesday 03 Dec 2025
Sarabangla | Breaking News | Sports | Entertainment

তলবের ১০ মিনিটেই হাজির পান্না, ট্রাইব্যুনালে চাইলেন নিঃশর্ত ক্ষমা

স্টাফ করেসপন্ডেন্ট
৩ ডিসেম্বর ২০২৫ ১৪:৪০

ঢাকা: আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে নিঃশর্ত ক্ষমা চেয়েছেন সুপ্রিম কোর্টের জ্যেষ্ঠ আইনজীবী জেড আই খান পান্না। জোরপূর্বক গুম, খুন ও নির্যাতনের অভিযোগে মানবতাবিরোধী অপরাধের পৃথক মামলায় শেখ হাসিনার পক্ষে আইনি লড়াইয়ের ঘোষণা দিয়ে না আসায় তাকে তলব করা হয় ট্রাইব্যুনালে। পরে ট্রাইব্যুনালে গিয়ে নিঃশর্ত ক্ষমা চান তিনি।

বুধবার (৩ ডিসেম্বর) ট্রাইব্যুনাল-১–এ এ শুনানির সময় রাষ্ট্রনিযুক্ত আইনজীবী জেডআই খান পান্নার অনুপস্থিতি লক্ষ্য করা গেলে তাকে তলব করেন আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল।

দুপুর পৌনে ১২টার দিকে চেয়ারম্যান বিচারপতি মো. গোলাম মর্তূজা মজুমদারের নেতৃত্বে তিন সদস্যের প্যানেলের কার্যক্রম শুরু হয়। শুরুতেই প্রসিকিউশনের পক্ষে বক্তব্য দেন চিফ প্রসিকিউটর মোহাম্মদ তাজুল ইসলাম। শুনানির মধ্যেই ট্রাইব্যুনাল স্টেট ডিফেন্সের আইনজীবী জেডআই খান পান্নাকে ফোন করে হাজির হওয়ার নির্দেশ দেয়। মাত্র ১০ মিনিট পর হুইলচেয়ারে অন্য আইনজীবীদের সহায়তায় উপস্থিত হন তিনি।

বিজ্ঞাপন

পান্না আদালতে পৌঁছালে প্রসিকিউশনের বক্তব্য থামিয়ে তার ব্যাখ্যা শোনেন ট্রাইব্যুনাল। তার শারীরিক অবস্থার খোঁজ নিয়ে ট্রাইব্যুনাল জানতে চান, শেখ হাসিনার পক্ষে নিয়োগ পাওয়ার পরও তিনি কেন হাজির হননি। জবাবে পান্না বলেন, তিনি অসুস্থ ছিলেন এবং মামলায় না দাঁড়ানোর বিষয়ে রেজিস্ট্রার কার্যালয়ে চিঠি পাঠিয়েছেন।

এ সময় ট্রাইব্যুনাল বলেন, “আপনার ক্লায়েন্ট হাজির হবেন না, আপনিও আসবেন না—এটা কি গ্রহণযোগ্য? আপনি নিজেই আগ্রহ দেখিয়ে আইনজীবী হওয়ার আবেদন করেছেন। এখন না চাইলে আপনাকে সরাসরি ট্রাইব্যুনালে এসে জানাতে হবে।”

ট্রাইব্যুনাল আরও উল্লেখ করে যে, পান্না এক ভিডিও বার্তায় জানিয়েছেন— তার ক্লায়েন্ট আদালত মানেন না, সেজন্য তিনিও মানেন না। এ বক্তব্য সম্পর্কে ব্যাখ্যা চাইলে পান্না বলেন, “আমি নিঃশর্ত ক্ষমা চাই।”

এরপর ট্রাইব্যুনাল জানতে চায়, তিনি কি এই মামলায় লড়তে আগ্রহী। পান্না ‘না’ জবাব দিলে তার স্থলাভিষিক্ত হিসেবে কাকে নিয়োগ দেওয়া যেতে পারে—সে বিষয়ে মতামত চাওয়া হয়। তবে পান্না কোনো নাম না দিলে ট্রাইব্যুনাল মো. আমির হোসেনকে স্টেট ডিফেন্স আইনজীবী হিসেবে নিয়োগ দেন। তিনি এর আগেও শেখ হাসিনার পক্ষে কাজ করেছেন।

গত ২৩ নভেম্বর এই মামলার অভিযোগ গঠনের জন্য আজকের দিন নির্ধারণ করা হয়েছিল। সেদিনই পান্না শেখ হাসিনার পক্ষের আইনজীবী হতে আবেদন করেন এবং তাকে স্টেট ডিফেন্স হিসেবে নিয়োগ দেওয়া হয়।

ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মো. জাহাঙ্গীর আলম, তোফায়েল মোস্তফা সারোয়ার, মো. কামরুল হাসান, মো. মাহাবুব আলম, কর্নেল কেএম আজাদ, কর্নেল আবদুল্লাহ আল মোমেন, কর্নেল আনোয়ার লতিফ খান (অব.), কর্নেল মো. মশিউর রহমান, লেফটেন্যান্ট কর্নেল সাইফুল ইসলাম সুমন ও লেফটেন্যান্ট কর্নেল মো. সারওয়ার বিন কাশেম।

সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা, সাবেক প্রতিরক্ষাবিষয়ক উপদেষ্টা মেজর জেনারেল (অব.) তারিক আহমেদ সিদ্দিক, সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল, সাবেক আইজিপি বেনজির আহমেদ, র‌্যাবের সাবেক ডিজি এম খুরশিদ হোসেন, সাবেক মহাপরিচালক ব্যারিস্টার হারুন অর রশিদ ও সাবেক পরিচালক লেফটেন্যান্ট কর্নেল (অব.) খায়রুল ইসলাম।

চলমান এই মামলার পরবর্তী কার্যক্রমের দিকে এখন সবার দৃষ্টি।

বিজ্ঞাপন

আরো

সম্পর্কিত খবর