বন্ধের দিনে বদলির আদেশ দিয়েছে, লজ্জাও নেই: হাইকোর্ট
১৮ জুন ২০১৯ ১৭:০৮
ঢাকা: সরকারি দফতরে সচিবদের কর্মকাণ্ড প্রসঙ্গে হাইকোর্ট বলেছেন, ‘সবকিছুতে কেন প্রধানমন্ত্রীকে নির্দেশনা দিতে হয়? সেক্রেটারিরা (সচিব) কি তাদের (ব্যবসায়ীদের) পকেটে ঢুকে গেছে?’
সব ফার্মেসিতে মেয়াদোত্তীর্ণ ওষুধ বিক্রি বন্ধে রিট শুনানিকালে মঙ্গলবার (১৮ জুন) বিচারপতি এফ আর এম নাজমুল আহাসান ও বিচারপতি কে এম কামরুল কাদেরের হাইকোর্ট বেঞ্চ এ কথা বলেন।
ওই মামলায় রিটের পক্ষে শুনানি করেন ব্যারিস্টার এ বি এম আলতাফ হোসেন। শুনানিতে আইনজীবী বলেন, ‘আড়ংয়ে সাতশ টাকার পাঞ্জাবি কত টাকা রাখা হয়েছিল সেটা দেখেছেন। আড়ংয়ের আউটলেট যিনি বন্ধ করেছিলেন তাকে বদলি করে দেওয়া হয়।’
এক পর্যায়ে আদালত বলেন, ‘অফিস বন্ধের সময় বদলির আদেশ দিয়েছে, লজ্জাও নেই? কী বলব, সবকিছুতেই যদি প্রধানমন্ত্রীকে হস্তক্ষেপ করতে হয় তাহলে তাদের এ দেশে থাকার দরকার কী? কত নোংরামি? এ রকম করলে তো সৎ অফিসাররা ডিমরালাইজড হয়ে যাবে। নিরুৎসাহিত হয়ে যাবে। যারা বন্ধের দিনে এ কাজ করেছে তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার দরকার ছিল।
আদালত আরও বলেন, ‘সবকিছুতে প্রধানমন্ত্রীকে কেন ডিরেকশন দিতে হয়? সেক্রেটারিরা কি তাদের পকেটে ঢুকে গেছে।’
আরও পড়ুন: এক মাসের মধ্যে মেয়াদোত্তীর্ণ ওষুধ সরানোর নির্দেশ
ওষুধের প্যাকেটে মেয়াদোত্তীর্ণের তারিখ ব্যবহারের অসঙ্গতি উল্লখ করে হাইকোর্ট বলেন, ‘ওষুধের প্যাকেটে মেয়াদের তারিখ এত ছোট করে দেওয়া হয় দেখাও যায় না। বোঝা যায় না। মনে হয়, মাইক্রোস্কোপ দিয়ে দেখতে হবে। এটা প্রপারলি ভিজিবল হওয়া উচিত।’
এ সময় ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল আব্দুল্লাহ আল মাহমুদ বাশার বলেন, ‘একজন রোগী মূমুর্ষূ অবস্থায় ওষুধ গ্রহণ করে থাকেন। সে সময় যদি মেয়াদোত্তীর্ণ ওষুধ গ্রহণ করেন তাহলে তার জন্য আরও ক্ষতিকর হতে পারে।’
এরপর রিটকারীর আইনজীবী ফার্মেসিতে মেয়াদোত্তীর্ণ ওষুধ বন্ধে আদালতের নির্দেশনা চাইলে আদালত রুলসহ আদেশ দেন। রুলে দেশের সব ফার্মেসি থেকে মেয়াদোত্তীর্ণ ওষুধ একমাসের মধ্যে সরিয়ে ফেলে প্রতিবেদন জমা দেওয়ার নির্দেশ দিয়েছেন হাইকোর্ট। একইসঙ্গে ফার্মেসিতে মেয়াদোত্তীর্ণ ওষুধ বিক্রি ও সংরক্ষণ বন্ধে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের নিষ্ক্রিয়তা কেন অবৈধ ঘোষণা করা হবে না, তা জানতে চেয়ে রুল জারি করা হয়েছে।
স্বাস্থ্য সচিব, স্বরাষ্ট্র সচিব, আইন সচিব, বাণিজ্য সচিব, শিল্প সচিব, স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের মহাপরিচালক, ওষুধ প্রশাসন অধিদফতরের মহাপরিচালক, ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদফতরের মহাপরিচালক ও উপপরিচালক, পুলিশের মহাপরিদর্শক, বাংলাদেশ ওষুধ শিল্প সমিতির সভাপতি ও মহাসচিবকে রুলের জবাব দিতে বলা হয়েছে।
সারাবাংলা/এজেডকে/একে