ঢাকা: ঐতিহাসিক জুলাই জাতীয় সনদে দুদিন পর আনুষ্ঠানিকভাবে সই করেছে গণফোরাম। রোববার (১৯ অক্টোবর) দুপুরে জাতীয় সংসদ ভবনের এলডি হলে দলটির ভারপ্রাপ্ত সভাপতি সুব্রত চৌধুরী ও সাধারণ সম্পাদক মিজানুর রহমান সনদে সই করেন।
সনদ সই অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের সহসভাপতি অধ্যাপক আলী রীয়াজ। আরও উপস্থিত ছিলেন কমিশনের সদস্য সফর রাজ হোসেন, ড. বদিউল আলম মজুমদার ও ড. ইফতেখারুজ্জামান। অনুষ্ঠানটি সঞ্চালনা করেন প্রধান উপদেষ্টার বিশেষ সহকারী (জাতীয় ঐকমত্য) মনির হায়দার।
এর আগে গত শুক্রবার (১৭ অক্টোবর) বিকেলে জাতীয় সংসদের দক্ষিণ প্লাজায় আয়োজিত অনুষ্ঠানে ২৪টি রাজনৈতিক দল ও জোট জুলাই জাতীয় সনদে সই করলেও গণফোরাম, জাতীয় নাগরিক পার্টি (এনসিপি) ও চারটি বামপন্থী দল সই থেকে বিরত ছিল।
সে সময় উপস্থিত থেকেও শেষ মুহূর্তে সনদে সই না করার কারণ হিসেবে গণফোরাম জানায়, খসড়া সনদে সংবিধান থেকে স্বাধীনতার ঘোষণাপত্র বাদ দেওয়ার একটি সুপারিশ ছিল, যা দলটি মেনে নিতে পারেনি।
তবে অনুষ্ঠান শুরুর আগেই ঐকমত্য কমিশন সেই বিতর্কিত সুপারিশ প্রত্যাহার করে নেয়। গণফোরামের দাবি, এ সিদ্ধান্তটি আনুষ্ঠানিকভাবে তাদের জানানো হয়নি বলেই সেদিন তারা সই থেকে বিরত থাকে।
পরে গণফোরামের সাধারণ সম্পাদক মিজানুর রহমান জানান, কমিশনের সঙ্গে আলোচনায় তারা স্পষ্ট আশ্বাস পেয়েছেন যে স্বাধীনতার ঘোষণাপত্র সংবিধান থেকে বাদ দেওয়া হবে না।
তিনি বলেন, ‘সেই নিশ্চয়তা পাওয়ার পরই গণফোরাম সনদে সই করার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।’
সনদে সই শেষে অধ্যাপক আলী রীয়াজ বলেন, ‘গণফোরামের সই রাষ্ট্র সংস্কারের পথে নতুন দিগন্ত খুলে দিয়েছে। এই সনদ কোনো একটি দলের দলিল নয়, বরং জাতির ঐকমত্যের প্রতিফলন।’
গণফোরামের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি সুব্রত চৌধুরী বলেন, ‘বাহাত্তরের সংবিধানের চার মূলনীতি— জাতীয়তাবাদ, গণতন্ত্র, সমাজতন্ত্র ও ধর্মনিরপেক্ষতা— সনদে আরও স্পষ্টভাবে প্রতিফলিত হলে তা পূর্ণতা পেত। তবে কমিশনের পক্ষ থেকে আমাদের আশ্বাস দেওয়া হয়েছে যে স্বাধীনতার ঘোষণাপত্রের মূল্য ও অবস্থান সংরক্ষিত থাকবে। সেই কারণেই আমরা আজ সনদে সই করেছি।’