ঢাকা: গণপ্রতিনিধিত্ব আদেশ (আরপিও)–এর একাধিক অনুচ্ছেদ পরিবর্তন করে সংশোধিত গেজেট প্রকাশ করেছে সরকার। ডাকযোগে ব্যালট গণনা, রিটার্নিং কর্মকর্তার ক্ষমতা, তদন্ত ও বিচারসংক্রান্ত ধারা— এসবকিছুতেই আনা হয়েছে নতুন বিধান।
মঙ্গলবার (৯ ডিসেম্বর) বিজি প্রেস সংশোধিত গেজেট প্রকাশ করে। রাষ্ট্রপতি মো. সাহাবুদ্দিন স্বাক্ষরিত এই অধ্যাদেশটি অবিলম্বে কার্যকর হবে বলে জানিয়েছে আইন মন্ত্রণালয়।
এর আগে ৩ ডিসেম্বর ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন ও গণভোটের তফসিল প্রস্তুতির মধ্যেই আরেক দফা সংশোধনী পাস হয়। নতুন সংশোধনের ফলে ডাকযোগে পাঠানো ব্যালট সাধারণ ভোটের সঙ্গে একইসঙ্গে গণনা করা হবে। এছাড়া একাধিক প্রতীকে সিল থাকলে সেটি বাতিল হিসেবে গণ্য হবে।
ডাকযোগে ব্যালট গণনায় নতুন নিয়ম (Article 27 ও 37A)
সংশোধনে Article 27-এর clause (10) পুরোপুরি প্রতিস্থাপন করা হয়েছে। এতে ডাকযোগে প্রেরিত ব্যালট বাতিলের শর্তগুলো স্পষ্টভাবে নির্ধারণ করা হয়েছে। পাশাপাশি Article 37-এর পর সংযোজিত নতুন Article 37A ডাকযোগে ব্যালট গণনার বিশেষ পদ্ধতি নির্ধারণ করেছে।
যেসব ক্ষেত্রে ডাকযোগে ব্যালট বাতিল হবে:
-
কোনো প্রতীকের বিপরীতে টিক বা ক্রস চিহ্ন না থাকলে
-
একাধিক প্রতীকের বিপরীতে চিহ্ন থাকলে
-
চিহ্ন এমনভাবে দেওয়া হলে যাতে ভোট কার পক্ষে তা নিশ্চিত হওয়া যায় না
-
রিটার্নিং কর্মকর্তা গণনার আগে ব্যালট গ্রহণ না করলে
-
আদালতের নির্দেশে প্রার্থী তালিকায় পরিবর্তন এলে
-
ভোটার প্রয়োজনীয় ঘোষণা (declaration) না দিলে
ডাকযোগে ব্যালট গণনার পদ্ধতি (Article 37A):
-
রিটার্নিং কর্মকর্তার কার্যালয়কে ডাকযোগে ব্যালট গণনার জন্য ‘ভোটকেন্দ্র’ হিসেবে বিবেচনা করা হবে
-
একজন প্রিজাইডিং অফিসারসহ প্রয়োজনীয় পোলিং অফিসার নিয়োগ করা হবে
-
প্রার্থীদের এজেন্টদের উপস্থিতিতে খাম খুলে ভোট গণনা
-
গণনার পরে প্রমাণীকৃত বিবৃতি রিটার্নিং কর্মকর্তার কাছে জমা
-
চূড়ান্ত ফলাফলে (Article 37) ডাকযোগে ব্যালটের গণনা যুক্ত হবে
ফলাফল ঘোষণার নতুন বিধান (Article 39)
Article 39-এর clause (1) ও (2) প্রতিস্থাপিত হয়েছে।
-
বিজয়ী ঘোষণা: সর্বোচ্চ ভোটপ্রাপ্ত প্রার্থীকে বিজয়ী ঘোষণা করে রিটার্নিং কর্মকর্তা গণবিজ্ঞপ্তি জারি করবেন
-
বিজ্ঞপ্তির বিষয়বস্তু: প্রতিটি প্রার্থীর মোট প্রাপ্ত ভোট উল্লেখ থাকবে
তদন্তে নতুন ক্ষমতা (Article 89A)
বিদ্যমান বিধানকে clause (1) হিসেবে ধরে নতুন clause (2) ও (3) যুক্ত করা হয়েছে।
-
তদন্তকারী কর্মকর্তাকে সহায়তা করা বাধ্যতামূলক
-
পুলিশ কমিশনার, পুলিশ সুপার, ওসি ও সংশ্লিষ্ট ফোর্স স্ট্রাইকিং ফোর্সসহ সহায়তা দেবে
-
যুক্তিসঙ্গত কারণ ছাড়া সহায়তা না দিলে ‘অদক্ষতা বা অসদাচরণ’ হিসেবে গণ্য হবে
-
রিটার্নিং কর্মকর্তা ও সহকারী রিটার্নিং কর্মকর্তারাও তদন্তকারীকে সহায়তা করবেন
নির্বাচনী তদন্ত ও বিচার কমিটির নতুন ক্ষমতা (Article 91A ও 91AA)
Article 91A-এ “Electoral Enquiry”–র সাথে “and Adjudication” যুক্ত হয়েছে। এর পর সংযোজিত হয়েছে নতুন Article 91AA।
নতুন ক্ষমতার মূল বিষয়গুলো:
-
সংক্ষিপ্ত বিচার: কমিটি Article 73, 75, 77 এবং Article 91B(3)-এর অধীন অপরাধগুলো দ্রুত বিচার করতে পারবে
-
প্রথম শ্রেণির ম্যাজিস্ট্রেটের ক্ষমতা: ১৮৯৮ সালের ফৌজদারি কার্যবিধি অনুসারে প্রয়োগযোগ্য
-
অন্যান্য অপরাধ আমলে নেওয়া: Article 89A ব্যতীত অন্যান্য অপরাধ আমলে নেওয়া যাবে
-
সহায়তা বাধ্যতামূলক: তদন্তে সহায়তার ক্ষেত্রে Article 89A–এর অনুরূপ বিধান বহাল