ঢাকা: রাজনৈতিক নেতৃত্বের কঠোর কমিটমেন্ট ছাড়া সমাজ থেকে দুর্নীতি বন্ধ করা সম্ভব নয় বলে মন্তব্য করেছেন অর্থ উপদেষ্টা ড. সালেহউদ্দিন আহমেদ।
মঙ্গলবার (৯ ডিসেম্বর) সকালে আন্তর্জাতিক দুর্নীতিবিরোধী দিবস উপলক্ষে শিল্পকলা একাডেমিতে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক) আয়োজিত আলোচনা সভায় তিনি এ মন্তব্য করেন।
ড. সালেহউদ্দিন বলেন, ‘রাজনৈতিক সদিচ্ছা থাকতে হবে। রাজনীতিবিদরা ঠিক থাকলে সমাজে পচন ধরবে না; বরং দুর্নীতি কমবে।’
তিনি আরও বলেন, ‘দুর্নীতি রোধে সামাজিক আন্দোলন গড়ে তুলতে হবে। আগে দুর্নীতিগ্রস্ত ব্যক্তিদের সমাজ এড়িয়ে চলত, ঘৃণা করত, এমনকি তাদের পরিবার সামাজিকভাবে সমস্যায় পড়ত। কিন্তু বর্তমানে উল্টো প্রবণতা দেখা যাচ্ছে—দুর্নীতিবাজ ব্যক্তিদের সম্মান জানানো হয়, তাদের ঘিরে সামাজিক গ্রহণযোগ্যতা তৈরি হয়।’
অর্থ উপদেষ্টা বলেন, ‘আর্থিক খাতে স্বচ্ছতা ও জবাবদিহিতা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। হাজার হাজার কোটি টাকার দুর্নীতি হয়েছে—কাকে কী শাস্তি দেবেন? তারা দেশের যে ক্ষতি করেছে, তা পূরণ করা সম্ভব নয়। সমাজের সব স্তর থেকে দুর্নীতির তথ্য তুলে ধরতে হবে।’
সভায় বিশেষ অতিথি বাংলাদেশ ইনস্টিটিউট অব ডেভেলপমেন্ট স্টাডিজের (বিআইডিএস) মহাপরিচালক ড. এ কে এনামুল হক বলেন, শুধু শাস্তির মাধ্যমে বিশ্বের কোথাও দুর্নীতি নির্মূল হয়নি। সামাজিক সচেতনতা তৈরি করা জরুরি। তিনি বলেন, দেশে ১৪–১৫ ধরনের দুর্নীতি বিদ্যমান, কিন্তু আলোচনায় মূলত ঘুষকেই গুরুত্ব দেওয়া হয়, অথচ দুর্নীতি এখন বিজ্ঞান—প্রতিদিন নতুন কৌশল যুক্ত হচ্ছে।
অনুষ্ঠানে দুদক কমিশনার (অনুসন্ধান) ব্রিগেডিয়ার জেনারেল (অব.) হাফিজ আহসান ফরিদ বলেন, ‘সরকারি প্রকল্পগুলোর সমস্ত তথ্য অনলাইনে প্রকাশ করতে হবে। কোনো তথ্য পরিবর্তন বা আপডেট হলেও তা জনগণকে জানানো বাধ্যতামূলক করা উচিত। কারণ, টাকা একবার চুরি হয়ে গেলে তা উদ্ধার করা অত্যন্ত কঠিন—তাই আগেই সতর্কতা জরুরি।’
দুদক চেয়ারম্যান মোহাম্মদ আবদুল মোমেনের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে কমিশনার (তদন্ত) মিঞা মুহাম্মদ আলি আকবার আজিজী, দুদক সচিব মোহাম্মদ খালেদ রহীমসহ সংস্থার ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।