Friday 22 Nov 2024
Sarabangla | Breaking News | Sports | Entertainment

ওসি পদে বিসিএস ক্যাডার চায় দুদক


২২ মে ২০১৯ ১৭:৫৬

ঢাকা: থানায় পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) পদে বিসিএস ক্যাডারের কর্মকর্তাদের নিয়োগের সুপারিশ করেছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)। ২০১৮ সালের বার্ষিক প্রতিবেদনে এমন সুপারিশ করেছে প্রতিষ্ঠানটি।

প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, পুলিশি সেবার প্রাণকেন্দ্র হচ্ছে দেশের থানা সমূহ। প্রতিটি থানায় ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন পুলিশের পরিদর্শক (নন-ক্যাডার) পদমর্যাদার কর্মকর্তারা। সেবা প্রার্থী নাগরিকরা থানা থেকে কাঙ্ক্ষিত মাত্রায় সেবা পাচ্ছেন না মর্মে প্রায়ই অভিযোগ পাওয়া যায়। কোনো কোনো ক্ষেত্রে আচরণগত, হয়রানি, ক্ষমতার অপব্যবহার এবং দুর্নীতির অভিযোগও পাওয়া যায়।

বিজ্ঞাপন

এসব সমস্যা সমাধানে বেশ কিছু সুপারিশ করেছে দুদক। সেগুলো হচ্ছে উপজেলা পর্যায়ে অধিকাংশ দফতরেই বাংলাদেশ সিভিল সার্ভিসের বিভিন্ন ক্যাডারের কর্মকর্তারা দায়িত্ব পালন করছেন। তাই থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা হিসেবে বিসিএস (পুলিশ) ক্যাডারের সহকারী পুলিশ সুপার অথবা অতিরিক্ত পুলিশ সুপার পদমর্যাদায় কর্মকর্তাদের পদায়নের ব্যবস্থা করা। এতে পুলিশের প্রতি জনআস্থাকে আরও বিকশিত করা এবং উপজেলা পর্যায়ে আইনশৃঙ্খলা বিষয়ে কার্যকর সমন্বয়ের জন্য থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা পদে বিসিএস (পুলিশ) ক্যাডারের কর্মকর্তা পদায়নের বিষয়টি সরকার বিবেচনা করতে পারে।

ওসি পদে বিসিএস প্রসঙ্গে সাবেক আইজিপি এ কে এম শহীদুল হক সারাবাংলাকে বলেন, ১৯৮৪ সালে আমরা থানায় এএসপি পদে বিসিএস থেকে উত্তীর্ণদের নিয়োগ দেওয়ার কথা চিন্তা করেছিলাম। কিন্তু তখন আমরা সেটি পারিনি। কারণ পুলিশ বাহিনীর সবচেয়ে বড় শক্তি সাব-ইন্সপেক্টর ও অপারেশন ওসি। তারাও পড়ালেখা করে পুলিশ বাহিনীতে এসেছে। এখন সরাসরি পুলিশ বাহিনীতে ওসি পদে যদি বিসিএস কর্মকর্তা নিয়োগ দেওয়া হয় তাহলে শীর্ষ এই বাহিনীটিতে বৈরী প্রভাবের সৃষ্টি হবে।

বিজ্ঞাপন

শহীদুল হক বলেন, ‘ওসি পদে বিসিএস কর্মকর্তা নিয়োগের যে সুপারিশ দুদক করেছে তা কখনো সম্ভব নয়। আর যদি নিতান্তই করতে হয় তাহলে পুলিশের সকল মহলে আলোচনা করেই করতে হবে। নতুবা পুলিশ বাহিনীর মধ্যে এক ধরনের বিশৃঙ্খলা তৈরি হবে। যার কারণে দেশের ওপর বড় প্রভাব পড়বে। সুতরাং যা কিছুই করা হোক না কেন সেটি আলোচনা ছাড়া সম্ভব নয়।’

তবে এ বিষয়ে ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনাল বাংলাদেশ (টিআইবি) এর নির্বাহী পরিচালক ইফতেখারুজ্জামান সারাবাংলাকে বলেন, ‘প্রতিটি থানায় ওসি পদে বিসিএস কর্মকর্তা চাওয়ার যে বিষয়টি দুদক সুপারিশ করেছে সেটি আমার কাছে যুক্তিসঙ্গত মনে হয়েছে। সাম্প্রতিককালে বিসিএস ক্যাডারদের অনেক উন্নতি হয়েছে। পুলিশ বাহিনীতে নিয়োগের ক্ষেত্রে বিভিন্ন অনিয়ম হয়ে থাকে। এখানে রাজনৈতিক প্রভাবের কারণেও অস্থিরতা রয়েছে। ফলে এখানে যদি ওসি পদে বিসিএস ক্যাডারদের পদায়ন করা হয় তাহলে দিনশেষে পুলিশ বাহিনীরই লাভ হবে। কেননা বিসিএস থেকে যারা আসবে এখানে নিরপেক্ষতা, স্বচ্ছতা ও প্রতিযোগিতাসুলভ থাকবে।’

এ বিষয়ে দুর্নীতি দমন কমিশনের চেয়ারম্যান ইকবাল মাহমুদ সারাবাংলাকে বলেন, ‘বর্তমানে বাংলাদেশ সিভিল সার্ভিস বা বিসিএস দিয়ে যারা অফিসার পদে নিয়োগ পাচ্ছেন এবং ভবিষ্যতেও যারা অফিসার নিয়োগ পাবেন তাদের অধিকাংশই সৎ। তাই দেশের সব থানায় অফিসার্স ইনচার্জ (ওসি) হিসেবে পুলিশ ক্যাডার নিয়োগের সুপারিশ করা হয়েছে। কারণ তারা থানায় গেলে থানার পরিবেশ বদলে যাবে। দুর্নীতি বন্ধ হয়ে সাধারণ মানুষ সেবা পাবে। সে জন্য আমরা সুপারিশটি করেছি। তবে সুপারিশটি আমলে নেওয়া এবং না নেওয়ার বিষয়টি রাষ্ট্রের। রাষ্ট্র যেটা ভালো মনে করবে সেটাই করবে।’

সারাবাংলা/এসজে/একে

থানার ওসি দুদক বিসিএস

বিজ্ঞাপন

আরো

সম্পর্কিত খবর