জনগণ আমাদের সবচেয়ে বড় সম্পদ: প্রধানমন্ত্রী
১১ জুলাই ২০১৯ ২০:০৫
ঢাকা: সংসদ নেতা ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, আমরা দেশকে এগিয়ে নিয়ে যাচ্ছি। আর্থ-সামাজিক উন্নয়নের কথা চিন্তা করে দেশকে অর্থনৈতিকভাবে স্বাবলম্বী করতে চাই। কারও কাছে হাত পেতে নয়, ভিক্ষা চেয়ে নয়; আমরা দেশের সম্পদ দিয়ে, দেশের উন্নয়ন করব। আমাদের জনগণ, আমাদের সবচেয়ে বড় সম্পদ।
বৃহস্পতিবার (১১ জুলাই) বিকেলে একাদশ জাতীয় সংসদের তৃতীয় অধিবেশনের সমাপনী বক্তব্যে তিনি একথা বলেন।
তৃতীয় অধিবেশনে বাজেট পাসসহ বিভিন্ন দিক তুলে ধরেন সংসদ নেতা বলেন, ‘১৯৭৫’র ১৫ আগস্ট স্বজন হারানোর বেদনা নিয়েই আমাকে বেঁচে থাকতে হয়েছে। কারণ সেই দিন আমরা পিতা-মাতা ভাইসহ আত্মীয়-স্বজনকে হারিয়েছি। বাংলাদেশের মানুষের আর্থ-সামাজিক উন্নয়নের জন্য দেশের মানুষকে দারিদ্র্যের হাত মুক্তি দেওয়ার জন্য, দেশের মানুষের অর্থনৈতিক মুক্তির জন্যই জাতির পিতা স্বাধীনতা এনে দিয়ে গিয়েছেন। মাত্র সাড়ে তিনবছর তিনি সময় পেয়ে একটা যুদ্ধবিধস্ত দেশ গড়ে তুলেছিলেন। অর্থনৈতিক অগ্রগতির পথে অগ্রযাত্রাও শুরু করেছিলেন কিন্তু সম্পন্ন করতে পারেননি।’
‘এরপর অনেক চড়াই-উৎরাই পার হয়ে আওয়ামী লীগ সরকার যখন গঠন করে তখন থেকে দেশের প্রকৃত উন্নয়নের যাত্রা শুরু। এরপর ২০০১ থেকে ২০০৮ আরেকটি কালো অধ্যায় বাঙালির জীবনে আসে। সেটাও আমরা উত্তরণ ঘটিয়ে ২০০৮’র নির্বাচনে জয়ী হয়ে ২০০৯ থেকে ২০১৯ পর্যন্ত সরকারে আছি। এ দশকে বাংলাদেশ আজকে, একটা উন্নয়নের মহীসোপানে যাত্রা শুরু করেছে। আজকের বাংলাদেশ বিশ্বে একটা উন্নয়নের রোল মডেল হিসেবে চিহ্নিত হয়েছে’ বলেন প্রধানমন্ত্রী।
২০১৯-২০২০ অর্থবছরের বাজেটের লক্ষ্যমাত্রা তুলে ধরে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘আমাদের দ্রুত প্রবৃদ্ধি অর্জন করতে হবে। আমরা প্রবৃদ্ধি অর্জন করেছি ৮ দশমিক ১৩ ভাগ। আমরা যে বাজেট দিলাম এই বাজেটে প্রবৃদ্ধি ৮ দশমিক ২ ভাগে উন্নীত করব সেই লক্ষ্য নিয়েই আমরা কিন্তু আমাদের পরিকল্পনা নিয়েছি এবং এগিয়ে যাচ্ছি সেই লক্ষ্য নিয়ে।’
প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘আমাদের সব সময় লক্ষ্য একটাই। আমরা যদি দেশকে উন্নয়নের পথে এগিয়ে নিয়ে যেতে চাই। এবারের বাজেটের শিরোনাম ছিল সমৃদ্ধ আগামীর পথযাত্রায় বাংলাদেশ, সময় এখন আমাদের, সময় এখন বাংলাদেশের। আন্তর্জাতিক বিশ্বে এটা আজকে প্রমাণিত, সময় এখন বাংলাদেশের। সবচেয়ে বড় কথা আমাদের বাজেটে, আমরা ৯৯ভাগই নিজেদের অর্থায়নে করতে পারি। এখন আর অন্যের কাছে আমাদের হাত পাত তে হয় না।’বৈদেশিক অনুদানের পরিমাণ মাত্র শূন্য দশমিক ৮৮ শতাংশ। আমাদের উন্নয়ন বাজেট আমরা বাস্তবায়ন করি।’
প্রধানমন্ত্রী আরও বলেন, ‘এবারও আমরা প্রায় ৯৪ভাগ বার্ষিক উন্নয়ন কর্মসূচি বাস্তবায়ন করতে সক্ষম হয়েছি। আমাদের দেশকে আমরা এগিয়ে নিয়ে যাচ্ছি। যাতে করে দেশের মানুষের কল্যাণ হয়। একটা আর্থসামাজিক উন্নয়নের কথা চিন্তা করে এবং আমাদের দেশকে আমরা যে অর্থনৈতিকভাবে স্বাবলম্বী করতে চাই। কারও কাছে হাত পেতে নয়, ভিক্ষা চেয়ে নয়। দেশের উন্নয়ন আমরা করব। দেশের সম্পদ দিয়ে। আমাদের জনগণ আমাদের সবচেয়ে বড় সম্পদ। আমাদের মাটি উর্বর।’
সংসদ নেতা বলেন, ‘জাতির পিতা বলেছেন, যে দেশের মাটি এতো উর্বর এবং আমার যে জনগণ আছে তাই আমার সম্পদ। এই দিয়েই আমরা দেশের উন্নতি করতে পারি, সেটা আমরা আজকে প্রমাণ করেছি। আমরা তা করতে পারি।’
আমাদের মাথাপিছু আয় বৃদ্ধি, প্রবৃদ্ধি মূল্যস্ফীতি ধরে রাখা, রপ্তানি আয় বৃদ্ধিসহ বিভিন্ন অর্থনৈতিক সূচকের কথা তুলে ধরেন।
খাদ্য কৃষি, স্বাস্থ্যখাত বিভিন্ন খাতে জনগণের কল্যাণে সরকারের বিভিন্ন পদক্ষেপের কথা তুলে ধরেন প্রধানমন্ত্রী।
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা আরও বলেন, ‘আমাদের প্রতিটি গ্রামকে আমরা শহর করে গড়ে তুলতে চাই। সে লক্ষ্য নিয়ে আমরা কর্মসূচি নিয়েছি। এবং সমগ্র বাংলাদেশে সড়কপথ, নৌপথ রেলপথ এবং আকাশ পথ সব পথের উন্নয়নে ব্যাপক কর্মসূচি হাতে নিয়ে বাস্তবায়ন করে যাচ্ছি।’
সারাবাংলা/এনআর/একে