ঢাকা: জুলাই-আগস্ট গণঅভ্যুত্থানের বর্ষপূর্তি উপলক্ষে আজ শাহবাগ মোড়ে সমাবেশ করবে জাতীয়তাবাদী ছাত্রদল। রোববার (৩ আগস্ট) দুপুর ২টায় এ সমাবেশ শুরু হবে। এতে ভার্চুয়ালি বক্তব্য দেবেন বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান।
অনুষ্ঠানস্থলে বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর ও ছাত্রবিষয়ক সম্পাদক রকিবুল ইসলাম বকুলসহ দলের শীর্ষ নেতারা উপস্থিত থাকবেন।
এদিকে সমাবেশ ঘিরে ব্যাপক প্রস্তুতি নিয়েছে ছাত্রদল। গঠন করা হয়েছে প্রায় ৯০টি সাংগঠনিক টিম। দেশের সব জেলা ও মহানগরের নেতা-কর্মীরা সমাবেশে অংশ নেবে। সমাবেশে আসার জন্য দুইটা বিশেষ ট্রেন ভাড়া করা হয়েছে।
ছাত্রদলের আজকের সমাবেশ একটু ব্যতিক্রমধর্মী হবে বলে জানানো হয়েছে। সমাবেশে দেখা যাবে না চিরাচরিত মিছিল, ব্যানার আর ফেস্টুনের ভিড়। সমাবেশকে ঘিরে নেতা-কর্মীরা যেন কোনো ধরনের ব্যানার, ফেস্টুন বা প্ল্যাকার্ড না বহন করে, সে ব্যাপারে কেন্দ্রীয় নেতাদের পক্ষ থেকে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
সমাবেশকে কেন্দ্র করে যে কোনো ধরনের জনদুর্ভোগের জন্য সংগঠনটি আগাম দুঃখ প্রকাশ করেছে। সংগঠনটি বলছে, ব্যস্ত রাজধানীর কর্মদিবসে সমাবেশের কারণে জনভোগান্তি সম্পর্কে তারা অবগত। এর পরও নগরবাসীকে বিষয়টি সহানুভূতির সঙ্গে বিবেচনা করতে অনুরোধ জানানো হয়েছে।
সংগঠনের দফতর সম্পাদক (সহসভাপতি পদমর্যাদা) মো. জাহাঙ্গীর আলমের সই করা এক বিবৃতিতে বলা হয়, গত জুন মাসে আমরা আমাদের জুলাই গণঅভ্যুত্থান স্মরণে ৩৬ দিনব্যাপী কর্মসূচি ঘোষণায় শুরুতে ৩ আগস্ট কেন্দ্রীয় শহিদ মিনারে সমাবেশ করার সিদ্ধান্ত ঘোষণা করি; কিন্তু পরে জাতীয় নাগরিক পার্টির নেতারা ৩ আগস্ট শহিদ মিনারে তাদের সমাবেশ করার বিষয়ে আমাদের নেতাদের সঙ্গে ব্যক্তিগতভাবে একাধিকবার যোগাযোগ ও অনুরোধ করেন। শহিদ মিনারের সমাবেশের বিষয়ে আমরা ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর অফিস থেকে অনুমতিও নিয়েছিলাম। এ দিনে শহিদ মিনারে সমাবেশ করার বিষয়ে আমরাই ছিলাম একমাত্র বৈধ দাবিদার; কিন্তু পরে একটি উদার, গণতান্ত্রিক, পরমতসহিষ্ণু, সব মত ও পথের সহাবস্থানে বিশ্বাসী ছাত্রসংগঠন হিসেবে আমরা শহিদ মিনারে সমাবেশ করার সিদ্ধান্ত পরিবর্তন করে শাহবাগে সমাবেশ করার সিদ্ধান্ত নিই।
বিবৃতিতে আরও বলা হয়, ব্যস্ত রাজধানীতে কর্মদিবসে সমাবেশের জনভোগান্তি সম্পর্কে আমরা অবগত। তার পরও জুলাই গণঅভ্যুত্থানের এই গুরুত্বপূর্ণ স্মরণীয় দিনটিতে আমাদের ফ্যাসিবাদবিরোধী শক্তির বৃহৎ ঐক্যের স্বার্থে বৃহত্তম ছাত্রসংগঠন হিসেবে দায়িত্বশীলতা ও উদারতার জায়গা থেকে সমাবেশের স্থান পরিবর্তন করতে হয়েছে। বিবৃতিতে বলা হয়, আমরা বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী ছাত্রদলের নেতাকর্মীরা যে কোনো ধরনের জনদুর্ভোগের জন্য অগ্রিম দুঃখ প্রকাশ করছি। প্রত্যাশা করছি, নগরবাসী বিষয়টি সহানুভূতির সঙ্গে বিবেচনা করবেন।
এদিকে ঢাকায় ছাত্র সমাবেশে অংশগ্রহণ নিয়ে নেতা-কর্মীদের উদ্দেশে শুক্রবার ছয় দফা নির্দেশনা দিয়েছে কেন্দ্রীয় ছাত্রদল। এর মধ্যে রয়েছে—
- সমাবেশে কোনো ধরনের ব্যানার, ফেস্টুন, প্ল্যাকার্ড নিয়ে আসা যাবে না।
- সমাবেশের শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত প্রত্যেক ইউনিটকে থাকতে হবে।
- কাঁটাবন মোড় থেকে আজিজ সুপার মার্কেট ও পিজি হাসপাতালের মাঝের গলি দিয়ে হোটেল ইন্টারকন্টিনেন্টাল পর্যন্ত অ্যাম্বুলেন্সসহ জরুরি সেবায় নিয়োজিত পরিবহনকে চলাচলে সার্বিক সহায়তা করতে হবে।
- ছাত্রদলের নেতাকর্মীকে বহনকারী কোনো ইউনিটের গাড়ি কোনো অবস্থাতেই ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় এলাকায় প্রবেশ করতে পারবে না।
- ব্যক্তিগত শোডাউন ও মিছিল নিয়ে সমাবেশস্থলে আসা যাবে না।
- সমাবেশ শেষে সংশ্লিষ্ট ইউনিটের নির্ধারিত স্থান পরিষ্কার করে যেতে হবে।