ঢাকা: ব্যাংক ও বীমা খাতে স্বচ্ছতা ফিরিয়ে আনতে বিএনপি সরকারে এলে বড় ধরনের সংস্কার আনা হবে বলে জানিয়েছেন দলের জাতীয় স্থায়ী কমিটির সদস্য আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী। তিনি অভিযোগ করেছেন, গত দেড় দশকে দলীয় বিবেচনায় ব্যাংক ও বীমা কোম্পানি গড়ে তুলে আওয়ামী লীগ দেশের আর্থিক খাতকে অকার্যকর ও ক্ষতিগ্রস্ত করেছে।
বুধবার (২৬ নভেম্বর) দুপুরে রাজধানীর ডিপ্লোমা ইঞ্জিনিয়ারিং ইনস্টিটিউটের মিলনায়তনে পপুলার লাইফ ইনস্যুরেন্স কোম্পানি লিমিটেডের ২৫ বছর পূর্তি অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব মন্তব্য করেন।
আমীর খসরু বলেন, ‘বিগত সরকারের আমলে দলীয় বিবেচনায় যেভাবে ব্যাংক ও ইনস্যুরেন্স কোম্পানি বিতরণ করা হয়েছে, তাতে অর্থনীতি ভয়াবহ ক্ষতির মুখে পড়েছে। এ প্রতিষ্ঠানগুলোর কোনো জবাবদিহি ছিল না, আর তারই খেসারত দিয়েছে সাধারণ মানুষ।’
তিনি আরও বলেন, ‘ইনস্যুরেন্স খাতে নৈরাজ্য এতটাই বিস্তৃত হয়েছে যে এখন অন্তত ২০টি কোম্পানি গ্রাহকের টাকা ফেরত দিতে পারছে না। এসব কোম্পানির অবস্থা দেখলে বোঝা যায় কীভাবে বছরের পর বছর লুটপাট চলেছে।’
বিএনপি নেতা অভিযোগ করেন, যারা ব্যাংক ও বীমা প্রতিষ্ঠান থেকে টাকা লুট করেছে, তারা লাভবান হয়েছে; কিন্তু ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে প্রতিষ্ঠানগুলো এবং তাদের সঙ্গে যুক্ত হাজারো কর্মকর্তা-কর্মচারী।
ক্ষমতায় গেলে ব্যাংক ও বীমা খাত থেকে দলীয়করণ তুলে দিয়ে শক্তিশালী রেগুলেটরি ব্যবস্থা গড়ে তোলার প্রতিশ্রুতি দেন তিনি।
তার ভাষায়, বিএনপি সরকারে গেলে আর্থিক সেক্টরে স্বচ্ছতা নিশ্চিত করা হবে। ব্যাংক ও বীমা খাতে দলীয় নিয়ন্ত্রণ নয়— পেশাদারিত্ব থাকবে, জবাবদিহি থাকবে।
তিনি বলেন, ‘দেশের উন্নয়ন ও বিনিয়োগের নিরাপত্তার সঙ্গে ব্যাংক–ইনস্যুরেন্স খাত সরাসরি সম্পর্কিত। তাই এই খাতে অনিয়ম চলতে দেওয়া হবে না।’
আমীর খসরু জানান, দীর্ঘদিন ধরে ইনস্যুরেন্স খাতের অনেক কোম্পানি গ্রাহকদের ভোগান্তির মধ্যে রেখেছে। গ্রাহকের দাবি মেটাতে ব্যর্থ হওয়া এসব প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়ার কথা বলেন তিনি।
“যারা সাধারণ মানুষের টাকা নিয়ে খেলেছে, তাদের অবশ্যই জবাবদিহির আওতায় আনা হবে,” বলেন বিএনপি স্থায়ী কমিটির এই সদস্য।
পপুলার লাইফ ইনস্যুরেন্সের প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী অনুষ্ঠানে বক্তব্য দিতে গিয়ে তিনি বলেন, আর্থিক খাতের অনিয়ম রোধে রেগুলেটরি সংস্থাগুলোকে পেশাদারিত্বের ভিত্তিতে পুনর্গঠন করতে হবে।
অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন পপুলার লাইফ ইনস্যুরেন্স কোম্পানির চেয়ারম্যান মোহাম্মদ জহিরুল ইসলাম চৌধুরী।