ঢাকা: বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের ব্যবহারের জন্য বিদেশ থেকে আমদানি করা একটি ‘হার্ড জিপ’ দেশে এসেছে। টয়োটা ল্যান্ড ক্রুজার প্রাডো এলসি ২৫০ মডেলের এই গাড়িটি বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দলের (বিএনপি) নামে নিবন্ধিত করা হয়েছে।
বিএনপির শীর্ষ নেতাদের নির্বাচনী প্রচারণায় নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে আমদানি করা নতুন বুলেটপ্রুফ গাড়িটির রেজিস্ট্রেশন ও ফিটনেস সনদ অনুমোদন করেছে বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন কর্তৃপক্ষ (বিআরটিএ)। মঙ্গলবার (২ ডিসেম্বর) আনুষ্ঠানিকভাবে রেজিস্ট্রেশন সম্পন্ন হওয়ায় গাড়িটি এখন সড়কে চলাচলের জন্য সম্পূর্ণভাবে উপযোগী।
এর আগে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় বেগম খালেদা জিয়া ও তারেক রহমানের নিরাপত্তার কথা বিবেচনা করে বিএনপিকে দুটি বুলেটপ্রুফ গাড়ি কিনতে অনুমতি দেয়। প্রথম গাড়ির অনুমতি পাওয়া যায় গত জুনে এবং দ্বিতীয়টির অনুমতি মেলে অক্টোবর মাসে।
বিআরটিএ সূত্রে জানা গেছে, সাদা রঙের সাত আসনবিশিষ্ট গাড়িটি চলতি বছর জাপানে তৈরি হলেও আমদানি করা হয়েছে সংযুক্ত আরব আমিরাত থেকে। ‘ভেলোস অটোমোটিভ এক্সপোর্টিং এলএলসি’ নামের প্রতিষ্ঠান থেকে গাড়িটি সংগ্রহ করে ঢাকার তেজগাঁও শিল্পাঞ্চলভিত্তিক ‘এশিয়ান ইমপোর্টস লিমিটেড’। ১ নভেম্বর চট্টগ্রামের ‘মা অ্যাসোসিয়েটস’-এর মাধ্যমে গাড়িটি দেশে পৌঁছে।
আমদানির বিল অনুযায়ী, ২ হাজার ৮০০ সিসির জিপটির ক্রয়মূল্য ধরা হয়েছে ৩৭ হাজার মার্কিন ডলার। জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর) ডলারের মূল্য ১২২.৪১ টাকা ধরে গাড়িটির ভিত্তিমূল্য নির্ধারণ করেছে প্রায় ৪৫ লাখ ২৯ হাজার টাকা। কাস্টমস কর্তৃপক্ষ গাড়িটির অ্যাসেসমেন্ট মূল্য ঠিক করেছে ৪১ হাজার ডলার। শুল্ক, ভ্যাট ও অন্যান্য কর বাবদ সরকারকে দিতে হয়েছে ২ কোটি ৩১ লাখ ১৬ হাজার ৯৪২ টাকা। সব মিলিয়ে আমদানির মোট খরচ দাঁড়িয়েছে ২ কোটি ৭৬ লাখ ৪৬ হাজার ১১২ টাকা।
গাড়িটি কোনো ব্যক্তির নয়, নিবন্ধিত হয়েছে বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল (বিএনপি)-র নামে। মালিকানা ঠিকানা হিসেবে ব্যবহার করা হয়েছে দলের কেন্দ্রীয় কার্যালয় ২৮/১ নয়াপল্টন। নতুন জিপটির রেজিস্ট্রেশন নম্বর ‘ঢাকা মেট্রো-ঘ ১৬-৬৫২৮’। রেজিস্ট্রেশনের দিনই ঢাকা মেট্রো-১ সার্কেলের মোটরযান পরিদর্শক সাবিকুন নাহার গাড়িটির ফিটনেস সনদ অনুমোদন করেন। ফিটনেস সনদের মেয়াদ রাখা হয়েছে ২০২৯ সালের ডিসেম্বর পর্যন্ত, আর ট্যাক্স টোকেনের মেয়াদ এক বছরের জন্য, যা আগামী ১ ডিসেম্বর শেষ হবে।
বিল অব এন্ট্রির তথ্যে দেখা যায়, গাড়িটির সাধারণ ওজন ২ হাজার ৭৯০ কেজি এবং সর্বোচ্চ ওজন ৩ হাজার ৮৫ কেজি।
অত্যাধুনিক এই গাড়িটিতে উন্নত নিরাপত্তা প্রযুক্তি থাকলেও গাড়িটি অবশ্য বুলেট প্রুফ না। তবে ব্যবহারকারী চাইলে গাড়িটিতে বুলেট প্রুফ প্রযুক্তি সংযোজন করে নিতে পারবেন।
বুলেট প্রুফ না হলেও গাড়িটিতে আছে সর্বাধুনিক সেন্সর, ক্যামেরা সিস্টেম ও সুরক্ষা কাঠামো। টয়োটা এই গাড়িটিকে তাদের প্রাডো সিরিজের সবচেয়ে নিরাপদ সংস্করণ হিসেবে দাবি করছে।
প্রাডো এলসি ২৫০ মডেলের গাড়িটিতে যুক্ত করা হয়েছে নয়টি এয়ারব্যাগ, যাতে সামনের পাশাপাশি পাশ ও কার্টেন এয়ারব্যাগও অন্তর্ভুক্ত। ফলে দুর্ঘটনা ঘটলে যাত্রীদের মাথা, বুক ও কোমর সুরক্ষায় এসব এয়ারব্যাগ অনেক বেশি কার্যকর ভূমিকা রাখবে।
গাড়িটি নির্মিত হয়েছে টয়োটার শক্তিশালী GA-F প্ল্যাটফর্মে। নতুন এই প্ল্যাটফর্ম গাড়িটির কাঠামোগত স্থিতিশীলতা অনেক বাড়িয়েছে ফলে সংঘর্ষের সময় এর আঘাত শোষণক্ষমতা অনেক বেশি।
জানতে চাইলে বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা বীর মুক্তিযোদ্ধা আবদুস সালাম সারাবাংলাকে বলেন, এই গাড়ি সম্পর্কে আমার কিছু জানা নেই।