ঢাকা: দীর্ঘ দেড় যুগ পর বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের স্বদেশ প্রত্যাবর্তনকে ঘিরে দেশজুড়ে ব্যাপক আলোড়ন ও জনগণের আগ্রহের মধ্যে, তার নিরাপত্তা ব্যবস্থা নিয়ে বিস্তারিত তথ্য জানিয়েছে বিএনপি। দলটির প্রধান নিরাপত্তা কর্মকর্তা ব্রিগেডিয়ার জেনারেল (অব.) শামসুল ইসলাম জানিয়েছেন, তারেক রহমানের নিরাপত্তায় সরকারের কাছে স্পেশাল সিকিউরিটি ফোর্স (এসএসএফ) মোতায়েনের কোনো অনুরোধ করা হয়নি। তবে তিনি জোর দিয়ে বলেন, সরকারের পক্ষ থেকে সর্বোচ্চ পর্যায়ের নিরাপত্তা ও লজিস্টিক সহযোগিতা নিশ্চিত করা হয়েছে।
বুধবার (২৪ ডিসেম্বর) দুপুরে রাজধানীর গুলশানে বিএনপি চেয়ারপারসনের রাজনৈতিক কার্যালয়ে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে এসব কথা বলেন শামসুল ইসলাম। তিনি জানান, তারেক রহমানের দেশে ফেরাকে ঘিরে যে পরিমাণ নিরাপত্তা ঝুঁকি মূল্যায়ন করা হয়েছে, বাস্তবে তার চেয়েও বেশি প্রস্তুতি নেওয়া হয়েছে।
দল ও রাষ্ট্রের সমন্বয়ে বহুমাত্রিক নিরাপত্তা বলয়
সংবাদ সম্মেলনে শামসুল ইসলাম বলেন, তারেক রহমানের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে একটি সমন্বিত ও বহুমাত্রিক নিরাপত্তা কৌশল গ্রহণ করা হয়েছে। এই কৌশলের আওতায় বিএনপির নিজস্ব অভ্যন্তরীণ নিরাপত্তা বোর্ড ও স্বেচ্ছাসেবক বাহিনীর পাশাপাশি সরকারের আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীগুলো সমন্বিতভাবে কাজ করছে।
তিনি আরও বলেন, ‘আমরা শুরু থেকেই বিশ্বাস করি-নিরাপত্তা শুধু একটি বাহিনীর ওপর নির্ভরশীল হলে তা কার্যকর হয় না। জনগণ, রাজনৈতিক কর্মী এবং রাষ্ট্রীয় বাহিনীর সম্মিলিত উদ্যোগেই একটি শক্তিশালী নিরাপত্তা বলয় তৈরি করা সম্ভব।’
তার ভাষায়, সরকার সার্বিকভাবে নিরাপত্তা, ট্রাফিক ব্যবস্থাপনা, রুট সিকিউরিটি ও জরুরি সেবা নিশ্চিতে প্রয়োজনীয় সব ধরনের সহায়তা দিচ্ছে। তবে এসএসএফ কোনো নির্দিষ্ট দায়িত্বে নিয়োজিত নয়, এবং এ বিষয়ে বিএনপির পক্ষ থেকেও কোনো আনুষ্ঠানিক আবেদন করা হয়নি।
তারেক রহমানের আগমন উপলক্ষ্যে রাজধানীতে বিপুল জনসমাগমের সম্ভাবনা রয়েছে-এ কথা স্বীকার করে শামসুল ইসলাম বলেন, জনদুর্ভোগ কমাতে বিশেষ ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। এর মধ্যে রয়েছে নির্ধারিত স্থানে সীমিত সময়ের জন্য সংক্ষিপ্ত কর্মসূচি, বিকল্প রুট ব্যবহারের পরিকল্পনা এবং আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সঙ্গে ঘনিষ্ঠ সমন্বয়।
তিনি আরও জানান, দলীয় স্বেচ্ছাসেবকদের স্পষ্ট নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে যেন তারা শান্তিপূর্ণ আচরণ বজায় রাখে এবং আইনশৃঙ্খলা বাহিনীকে সর্বাত্মক সহযোগিতা করে।
এসএসএফ না চাওয়াটা কোনো দুর্বলতা নয় উল্লেখ করে শামসুল ইসলাম বলেন, ‘এটি কোনোভাবেই নিরাপত্তার ঘাটতি বা দুর্বলতার ইঙ্গিত নয়। বরং বর্তমান বাস্তবতায় যে কাঠামো তৈরি করা হয়েছে, তা আগের যে-কোনো সময়ের চেয়ে বেশি কার্যকর ও বিস্তৃত।’
তার মতে, স্বেচ্ছাসেবকদের শৃঙ্খলা এবং রাষ্ট্রীয় বাহিনীর পেশাদারিত্ব-এই তিনের সমন্বয়ই তারেক রহমানের নিরাপত্তার মূল ভিত্তি।
সংবাদ সম্মেলনের শামসুল ইসলাম আরও বলেন, তারেক রহমানের এই প্রত্যাবর্তন শুধু রাজনৈতিক নয়, সামাজিকভাবেও অত্যন্ত তাৎপর্যপূর্ণ। সে কারণেই নিরাপত্তা ইস্যুতে কোনো ধরনের ঝুঁকি নেওয়া হচ্ছে না।
তিনি আশাবাদ ব্যক্ত করে বলেন, ‘আমরা বিশ্বাস করি, জনগণের সহযোগিতা এবং রাষ্ট্রীয় বাহিনীর পেশাদার ভূমিকার মাধ্যমে তারেক রহমানের আগমন শান্তিপূর্ণ ও সুশৃঙ্খলভাবে সম্পন্ন হবে।’