Tuesday 20 May 2025
Sarabangla | Breaking News | Sports | Entertainment

চসিকে পদোন্নতিতে অনিয়ম, অভিযানে দুদক

স্পেশাল করেসপন্ডেন্ট
২০ মে ২০২৫ ২০:১৩ | আপডেট: ২১ মে ২০২৫ ০০:১৬

চসিকে পদোন্নতিতে অনিয়ম, অভিযানে দুদক। ছবি: সংগৃহীত

চট্টগ্রাম ব্যুরো: চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশনের বিদ্যুৎ বিভাগে সহকারী প্রকৌশলী পদে পদোন্নতি নিয়ে অনিয়মের অভিযোগ পেয়ে অভিযান করেছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)। অভিযানে দুদক কর্মকর্তারা জানতে পেরেছেন, মৌখিক পরীক্ষায় ফেল করার পরও একজন উপসহকারী প্রকৌশলীকে পদোন্নতি দিয়ে সহকারী প্রকৌশলী করা হয়েছিল। পরবর্তী সময়ে সেই পদোন্নতির আদেশ আবার বাতিল করা হয়েছে।

মঙ্গলবার (২০ মে) দুপুরে নগরীর টাইগারপাসে চসিকের অস্থায়ী কার্যালয়ে দুদকের চট্টগ্রাম জেলা সমন্বিত কার্যালয়-১ এর সহকারী পরিচালক সাঈদ মুহাম্মদ ইমরানের নেতৃত্বে একটি দল অভিযান চালায়। এ সময় তারা চসিক মেয়র ডা. শাহাদাত হোসেন এবং প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা ও সচিবের সঙ্গে কথা বলেন। এছাড়া পদোন্নতি সংক্রান্ত নথিপত্রগুলো সংগ্রহ করেন।

বিজ্ঞাপন

চসিকের বিদ্যুৎ বিভাগের ওই উপ সহকারী প্রকৌশলীর নাম রূপক দাশ। তিনি ২০১১ সালে বিএনপি দলীয় মেয়র এম মনজুর আলমের আমলে চসিকে নিয়োগ পান। রূপক দাশ চট্টগ্রাম পলিটেকনিক ইনস্টিটিউট ছাত্রদলের নেতা ছিলেন বলে জানা গেছে।

দুদক কর্মকর্তারা জানান, রূপক দাশ চসিকে অস্থায়ী ভিত্তিতে ২০১১ সালে যোগ দেয়ার পর ২০১৩ সালে উপসহকারী প্রকৌশলী হিসেবে তার চাকরি স্থায়ী হয়। নিয়ম অনুযায়ী, আট বছর পর তার সহকারী প্রকৌশলী হিসেবে পদোন্নতি পাওয়ার কথা। কিন্তু ২০২৫ সাল পর্যন্ত তিনি পদোন্নতি বঞ্চিত ছিলেন। তবে ২০২৩ সালে তাকে অতিরিক্ত দায়িত্ব হিসেবে সহকারী প্রকৌশলীর দায়িত্ব দেওয়া হয়।

চসিকের বিদ্যুৎ বিভাগে তিনটি সহকারী প্রকৌশলী পদ শূন্য আছে। মেয়র হিসেবে ডা. শাহাদাত হোসেন দায়িত্ব নেওয়ার পর পদোন্নতি দিয়ে সেই পদগুলো পূরণের উদ্যোগ নেন। গত ৬ মার্চ তিনটি পদের বিপরীতে মৌখিক পরীক্ষার জন্য আটজনকে ডাকা হয়। এর মধ্যে একজন অনুপস্থিত ছিলেন, সাতজন মৌখিক পরীক্ষা দেন। সাতজনের মধ্যে তিনজন উত্তীর্ণ হন এবং বাকি চারজন ফেল করেন।

বিজ্ঞাপন

দুদক কর্মকর্তাদের দেওয়া তথ্যানুযায়ী, রূপক দাশও মৌখিকে অনুত্তীর্ণ হন। কিন্তু ফেল করার পরও তাকে পদোন্নতি দিয়ে সহকারী প্রকৌশলী করা হয়। তবে মৌখিকে উত্তীর্ণ আরও তিনজনকে সহকারী প্রকৌশলী পদে পদোন্নতি দেওয়া হয়। এর সঙ্গে রূপক দাশকেও পদোন্নতি দেয়া হলে সেটা নিয়ে পত্রপত্রিকায় সমালোচনা শুরু হয়। ফলে ১৫ মে আরেকটি অফিস আদেশে তাকে দেওয়া পদোন্নতির আদেশ বাতিল করা হয়। এতে রূপক দাশ এখনো উপ-সহকারী প্রকৌশলী হিসেবেই আছেন।

দুদক কর্মকর্তা সাঈদ মুহাম্মদ ইমরান সাংবাদিকদের বলেন, ‘ভাইভাতে ফেল করার পরও রূপক দাশকে পদোন্নতি দেওয়ার বিষয়ে আমরা মেয়র মহোদয়ের সঙ্গে কথা বলেছি। উনি জানিয়েছেন, রূপক দাশ একটা বিশেষ দলের সঙ্গে দীর্ঘদিন সম্পৃক্ত থাকার কারণে, উনার রাজনৈতিক পরিচয়ের কারণে উনাকে ভাইভাতে কম নম্বর দিয়ে অনুত্তীর্ণ করা হয়েছে। রেকর্ডপত্রে আমরা যেটা দেখলাম, ভাইভাতে ১০ নম্বর পেলে উত্তীর্ণ হওয়ার কথা, কিন্তু উনি পেয়েছেন ৯। যে সাতজন মৌখিক পরীক্ষা দিয়েছেন, সাতজনের মধ্যে উনি মেধা তালিকায় চার নম্বরে আছেন।’

‘যদি চারজন নেওয়া হয়ে থাকে, উনাদের প্রয়োজন অনুসারে, তাহলে এখানে সরাসরি অনিয়ম হয়েছে বলা যাচ্ছে না। মেয়র মহোদয়ও বলেছেন, এখানে চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশনে যত কাজ, তিনজন সহকারী প্রকৌশলী দিয়ে আসলে সেটা সম্ভব হচ্ছে না। সেক্ষেত্রে কাজের সুবিধার্থে যদি মেয়র মহোদয় অতিরিক্ত একজন নিয়ে থাকেন, সেক্ষেত্রে সরাসরি অনিয়ম হয়েছে এটা বলা যাচ্ছে না।’

তিনি আরও বলেন, ‘আমরা রেকর্ডপত্রগুলো নিয়েছি। সেগুলো পর্যালোচনা করে আমরা বিস্তারিত প্রতিবেদন দুর্নীতি দমন কমিশনের প্রধান কার্যালয়ে দাখিল করব।’

সারাবাংলা/আরডি/পিটিএম

অভিযোগ চসিক টপ নিউজ দুর্নীতি পদোন্নতি মৌখিক পরীক্ষা

বিজ্ঞাপন

আরো

সম্পর্কিত খবর