১১ সপ্তাহের অবরোধ শেষে সীমান্ত পেরিয়ে ত্রাণবাহী ট্রাক ঢুকলেও গাজায় এখনো কোনো ত্রাণ বিতরণ হয়নি বলে জানিয়েছে জাতিসংঘ।
ইসরায়েলি কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, মঙ্গলবার (২০ মে) ৯৩টি ট্রাক গাজায় প্রবেশ করেছে, যাতে ময়দা, শিশুখাদ্য, চিকিৎসা সরঞ্জাম ও ওষুধ ছিল। তবে জাতিসংঘ জানিয়েছে, কেরেম শালোম ক্রসিংয়ের ফিলিস্তিনি পাশে ট্রাক পৌঁছালেও কোনো ত্রাণ বিতরণ শুরু হয়নি।
জাতিসংঘের মুখপাত্র স্তেফান দুজারিক বলেন, তাদের একটি দল ঘন্টার পর ঘণ্টা অপেক্ষা করেও ইসরায়েলি অনুমতি না পাওয়ায় ত্রাণ তাদের গুদামে স্থানান্তর করতে পারেনি।
রোববার (১৮ মে) ইসরায়েল সীমিত পরিমাণ খাদ্য প্রবেশে সম্মত হয়। যদিও বিশ্বজুড়ে বিশেষজ্ঞরা গাজায় দুর্ভিক্ষের আশঙ্কা প্রকাশ করেছেন।
যুক্তরাজ্য বলেছে, গাজায় ইসরায়েলের নৈতিকভাবে অগ্রহণযোগ্য সামরিক অভিযান চালানোর প্রতিবাদে তারা বাণিজ্য আলোচনা স্থগিত করছে। প্রধানমন্ত্রী কিয়ার স্টারমার এ পরিস্থিতিকে সহ্য করার অযোগ্য বলেছেন।
ইউরোপীয় ইউনিয়নের পররাষ্ট্র নীতিবিষয়ক প্রধান কায়া কালাস জানিয়েছেন, ইসরায়েলের সঙ্গে বাণিজ্য চুক্তি পর্যালোচনা করা হবে।
দুজারিক জানান, ইসরায়েল জাতিসংঘকে ত্রাণ ফিলিস্তিনি পাশে নামিয়ে আবার আলাদাভাবে লোড করতে বলেছে, যা কার্যক্রমকে জটিল করে তুলছে। তিনি বলেন, কিছু ত্রাণ ঢোকা একটি ইতিবাচক পদক্ষেপ, তবে তা প্রয়োজনের তুলনায় এক ফোঁটা জল মাত্র।
জাতিসংঘের হিসাবে গাজার মানবিক সংকট মোকাবেলায় প্রতিদিন প্রায় ৬০০টি ট্রাকের প্রয়োজন।
জাতিসংঘের মানবিক প্রধান টম ফ্লেচার বিবিসিকে বলেন, ইসরায়েল এখনই ত্রাণ প্রবেশ করতে না দিলে পরবর্তী ৪৮ ঘণ্টায় ১৪ হাজার শিশু মারা যেতে পারে।
পরে জাতিসংঘের মানবিক সহায়তা বিষয়ক দফতর জানায়, গাজায় মারাত্মক অপুষ্টিতে ভোগা ১৪ হাজার শিশুকে বাঁচাতে জরুরি ভিত্তিতে সহায়তা পৌঁছাতে হবে।
ইউএনওসিএইচএ মুখপাত্র জেন্স লারকে বলেন, ‘আমরা নিশ্চিতভাবে জানি, কিছু শিশু জীবন বাঁচাতে ত্রাণের অপেক্ষায় আছে, কারণ তাদের মায়েরা নিজেরাও খাবার পাচ্ছেন না।’
গত সপ্তাহে হামাস-শাসিত গাজার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, গত ১১ সপ্তাহে অপুষ্টিতে অন্তত ৫৭ শিশু মারা গেছে।
সোমবার (১৯ মে) যুক্তরাজ্য, ফ্রান্স ও কানাডার নেতারা এক বিবৃতিতে ইসরায়েলকে সামরিক অভিযান বন্ধ ও তাৎক্ষণিকভাবে মানবিক ত্রাণ প্রবেশে অনুমতি দেওয়ার আহ্বান জানান। যুক্তরাজ্য একই সঙ্গে কয়েকজন প্রভাবশালী ইসরায়েলি বসতি স্থাপনকারী ও সংশ্লিষ্ট গোষ্ঠীর ওপর নিষেধাজ্ঞা জারি করে।