Monday 02 Jun 2025
Sarabangla | Breaking News | Sports | Entertainment

বৃষ্টিতে সিলেট ওসমানী হাসপাতালে জমে হাঁটু পানি

ডিস্ট্রিক্ট করসপন্ডেন্ট
১ জুন ২০২৫ ০২:৫৭ | আপডেট: ১ জুন ২০২৫ ১০:২৮

বৃষ্টিতে সিলেট ওসমানী হাসপাতালে জমে হাঁটু পানি। ছবি: সারাবাংলা

সিলেট: টানা ভারী বর্ষণ ও পর্যাপ্ত পানি নিষ্কাশন ব্যবস্থার না থাকায় সিলেট এমএজি ওসমানী মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের নিচতলা ও আশপাশের সম্পূর্ণ এলাকা তলিয়ে যায়। এতে চরম দুর্ভোগে পড়েন হাসপাতালের রোগী, স্বজন ও চিকিৎসকসহ সংশ্লিষ্টরা। ব্যাহত হয় সেবা কার্যক্রম।

শনিবার (৩১ মে) দুপুর ১২টা থেকে বিকেল ৩টা পর্যন্ত নগরীতে ১৫৬ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত রেকর্ড হয়। দুপুরের দিকে ওসমানী হাসপাতাল ও কলেজের নিচতলায় পানি প্রবেশ করতে শুরু করে। পানি ঢুকে পড়ায় সকালে কয়েকটি ওয়ার্ডের শতাধিক রোগীকে স্থানান্তর করা হয়।

সিলেট এমএজি ওসমানী মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের সামনের অবস্থা। ছবি: সারাবাংলা

সিলেট এমএজি ওসমানী মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের সামনের অবস্থা। ছবি: সারাবাংলা

বিশেষ করে জরুরি বিভাগ, বহির্বিভাগ ও বিভিন্ন ওয়ার্ডে পানি উঠে যাওয়ায় চিকিৎসা সেবা কার্যত ব্যাহত হচ্ছে। অনেক রোগীকে হুইলচেয়ার বা স্ট্রেচারে করে পানি পেরিয়ে এক ওয়ার্ড থেকে অন্য ওয়ার্ডে নিতে হয়। পানির মধ্যে বিদ্যুৎ সংযোগের ঝুঁকিও তৈরি হয়েছে, ফলে সতর্কতামূলকভাবে কিছু ওয়ার্ডে বিদ্যুৎ সংযোগ বন্ধ রাখা হয়। এতে করে চিকিৎসা সরঞ্জাম পরিচালনা ও রোগী সেবায় নানাবিধ সমস্যা দেখা দেয়।

বিজ্ঞাপন

রোগীদের স্বজনদের অভিযোগ, হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ আগাম প্রস্তুতি না থাকায় এই দুরাবস্থার সৃষ্টি হয়েছে। কয়েকটি ওয়ার্ডে হাঁটুপানি, চিকিৎসকরা আসতে পারছিলেন না ঠিকমতো। অথচ প্রশাসনের কোনো তৎপরতা চোখে পড়ছে না।

সংশ্লিষ্টরা জানান, হাসপাতালের নিচতলা ও রক্ত পরিসঞ্চালন কেন্দ্রে দুপুর থেকে পানি ঢুকতে শুরু করে। এতে রোগী ও স্বজনরা আতঙ্কিত হয়ে পড়েন। ফ্লোর, বারান্দা ও প্রবেশপথ তলিয়ে যাওয়ায় বিপাকে পড়েন রোগী ও তাদের স্বজনরা। তাই কর্তৃপক্ষ জরুরিভিত্তিতে এখানকার রোগীদের অন্য ওয়ার্ডে স্থানান্তর করে।

হাসপাতাল সূত্রে জানা গেছে, অতিরিক্ত বৃষ্টির পাশাপাশি হাসপাতালের পানি নিষ্কাশন ব্যবস্থার ত্রুটি দীর্ঘদিন ধরেই চিহ্নিত থাকলেও কার্যকর ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি। ফলে প্রতি বছর বর্ষা মৌসুমে একই চিত্র দেখা যায়।

এদিকে সিলেট সিটি করপোরেশন জানিয়েছে, শহরের অন্যান্য এলাকাতেও একই ধরনের জলাবদ্ধতার সমস্যা দেখা দিয়েছে। তবে হাসপাতাল এলাকা অগ্রাধিকার ভিত্তিতে পানি নিষ্কাশনের কাজ চলছে বলে জানানো হয়েছে।

সিলেট এমএজি ওসমানী মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের সামনের অবস্থা। ছবি: সারাবাংলা

সিলেট এমএজি ওসমানী মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের সামনের অবস্থা। ছবি: সারাবাংলা

সিলেট ওসমানী নগর থেকে আসা এক রোগীর স্বজন বলেন, ‘ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল সিলেটের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ হাসপাতাল। এই হাসপাতালের এমন দুরাবস্থা যদি হয় তাহলে আমরা সাধারণ মানুষ কোথায় যাব। কর্তৃপক্ষ যেন দ্রুত পানি নিষ্কাশনের ব্যবস্থা ও হাসপাতালের স্যানিটেশন নিশ্চিত করে। না হলে রোগীদের মধ্যে ডায়রিয়া, চর্মরোগসহ নানাবিধ সংক্রামক রোগ ছড়িয়ে পড়ার আশঙ্কা রয়েছে।’

পানি উন্নয়ন বোর্ড (পাউবো) সিলেটের নির্বাহী প্রকৌশলী দীপক রঞ্জন দাশ বলেন, শুক্রবার সকাল সাড়ে ৮টা থেকে শনিবার সকাল সাড়ে ৮টা পর্যন্ত ২৪ ঘণ্টায় চেরাপুঞ্জিতে ৪১০ মিলিমিটার বৃষ্টি হয়েছে। ভারতে বৃষ্টি হলেই পাহাড়ি ঢল সীমান্তের নদ-নদী দিয়ে সিলেটে আসে। তবে এই প্রতিবেদন লেখার সময় হাসপাতাল চত্বর থেকে পানি নেমে গেছে। ধীরে ধীরে স্বাভাবিক হচ্ছে সেবা কার্যক্রম।

সারাবাংলা/পিটিএম

এমএজি ওসমানী মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতাল টিপ নিউজ সিলেট হাঁটু পানি