ঢাকা: ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের (ডিএসসিসি) মেয়র পদে শপথ না পড়ালে নিজেই শপথ পড়ে চেয়ারে বসার হুঁশিয়ারি দিয়েছেন বিএনপি নেতা ইশরাক হোসেন।
তিনি বলেন, ‘এই সরকারকে এখন বাধ্য হয়ে বলতে হচ্ছে, অবিলম্বে মেয়র পদে শপথের ব্যবস্থা করুন। নইলে ঢাকার ভোটারদের নিয়ে নিজেই শপথ পড়ে চেয়ারে বসবো।’
মঙ্গলবার (৩ জুন) বিকেলে রাজধানীর গুলিস্তানের নগর ভবনে ইশরাক হোসেনকে মেয়র পদে শপথ পড়ানোর দাবিতে অবস্থান কর্মসূচিতে অংশ নিয়ে এ ঘোষণা দেন তিনি।
ইশরাক বলেন, ‘নগর ভবন কীভাবে চলবে, তা ঢাকাবাসী নির্ধারণ করবে। কোনো বহিরাগত উপদেষ্টা বা প্রশাসক দিয়ে এই ভবন চালাতে দেওয়া হবে না।’
তিনি বলেন, ‘মেয়র পদে বসানো নিয়ে যেভাবে টালবাহানা করা হচ্ছে, এতে এই সরকারের অধীনে সুষ্ঠু নির্বাচন নিয়ে জনমনে সন্দেহ তৈরি হয়েছে। এই সরকার নিরপেক্ষতা হারিয়েছে। বর্তমান উপদেষ্টা পরিষদ দিয়ে সরকারের নিরপেক্ষতা বজায় রাখা সম্ভব নয়।’
ডিএসসিসি মেয়র হিসেবে বিএনপি নেতা ইশরাক হোসেনের শপথ ইস্যুতে সাংবিধানিকভাবে নির্বাচন কমিশন সিদ্ধান্ত নেবে বলে জানিয়েছেন আপিল বিভাগ। ২৯ মে ইশরাককে মেয়র ঘোষণার গেজেট জারির বিষয়ে ইসির বক্তব্য শুনে এ আদেশ দেন প্রধান বিচারপতি ড. সৈয়দ রেফাত আহমেদের নেতৃত্বাধীন সাত বিচারপতির পূর্ণাঙ্গ আপিল বেঞ্চ। একইসঙ্গে পর্যবেক্ষণসহ আপিল নিষ্পত্তি করা হয়।
গত ২২ মে ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের (ডিএসসিসি) মেয়র হিসেবে ইশরাক হোসেনকে শপথ না পড়ানোর নির্দেশনা চেয়ে করা রিট খারিজ করেন হাইকোর্ট। হাইকোর্টের বিচারপতি মো. আকরাম হোসেন চৌধুরী ও দেবাশীষ রায় চৌধুরীর সমন্বয়ে গঠিত বেঞ্চ এ আদেশ দেন।
হাইকোর্ট বলেছেন, ‘রিট করার এখতিয়ার না থাকায় খারিজ করা হয়েছে। একইসঙ্গে নির্বাচনি ফোরামের মামলা অন্য ফোরামে না গিয়ে এখানে আসা ঠিক হয়নি।’
গত ১৪ মে বিএনপির এই নেতাকে ঢাকা দক্ষিণের মেয়র হিসেবে শপথ না পড়ানোর নির্দেশনা চেয়ে হাইকোর্টে রিট আবেদন করা হয়। হাইকোর্টের সংশ্লিষ্ট শাখায় রিটটি করেন ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের বাসিন্দা মো. মামুনুর রশিদ। আবেদনকারীর আইনজীবী কাজী আকবর আলী।
২০২০ সালের ১ ফেব্রুয়ারি ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের নির্বাচন হয়। এতে মেয়র হিসেবে নির্বাচিত হন আওয়ামী লীগের প্রার্থী শেখ ফজলে নূর তাপস। ২ ফেব্রুয়ারি ভোটের ফলের গেজেট প্রকাশ করে নির্বাচন কমিশন। এরপর শপথ নিয়ে দায়িত্ব পালন করে আসছিলেন তিনি। জানা গেছে, গত বছর ৩ আগস্ট ঢাকা ছাড়েন তাপস।
সেই নির্বাচনে ঢাকা দক্ষিণের মেয়র পদে তাপস পেয়েছিলেন সোয়া চার লাখ ভোট। তার নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী বিএনপির ইশরাক পান দুই লাখ ৩৬ হাজার ভোট। নির্বাচনে অনিয়ম ও দুর্নীতির অভিযোগ তুলে ফল বাতিল চেয়ে ২০২০ সালের ৩ মার্চ মামলা করেন ইশরাক।