ঢাকা: জনতার হাতে আটক নিষিদ্ধ ছাত্রলীগের সাবেক এক নেতাকে ছাড়াতে গিয়ে ছাত্রদল নেতার এলোপাতাড়ি গুলিতে এক ব্যবসায়ী নিহত হয়েছেন। নিহত ব্যবসায়ীর নাম মামুন ভূঁইয়া (৪০)। তিনি এলপিজি গ্যাসের ব্যবসা করতেন বলে জানা যায়।
মঙ্গলবার (১০ জুন) বিকালের দিকে নারায়ণগঞ্জের রূপগঞ্জে ভুলতা মাঝিপাড়া এলাকায় এ ঘটনা ঘটে।
নিহত মামুনের ভাতিজা মো. মেহেদী জানান, তাদের বাড়ি রূপগঞ্জের ভুলতা মাঝিপাড়া এলাকায়। মামুনের বাবার নাম আব্দুল মান্নান ভূঁইয়া । মামুন দীর্ঘদিন যাবৎ বিদেশে ছিলেন। বর্তমানে দেশে এলপিজি গ্যাসের ব্যবসা করতেন। গুলিবিদ্ধ হওয়ার পর আহত মামুনকে প্রথমে দ্রুত ইউএস বাংলা হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। সেখান থেকে পরে তাকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। সেখানে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মঙ্গলবার রাত ৯টার দিকে মারা যান মামুন।
তিনি আরও জানান, মঙ্গলবার (১০ জুন) দুপুরে নিষিদ্ধ ছাত্রলীগের নেতা সাব্বির হোসেন খোকাকে মাঝিপাড়া এলাকায় দেখতে পেয়ে এলাকাবাসী তাকে আটক করে। ভুলতা ইউনিয়ন ছাত্রলীগের সাবেক সাংগঠনিক সম্পাদক সাব্বির হোসেন সাবেক মন্ত্রী গোলাম দস্তগীর গাজীর ঘনিষ্ঠ বলে এলাকায় পরিচিত। এদিকে সাব্বিরকে আটকে রাখার খবর পেয়ে দলবল নিয়ে ঘটনাস্থলে উপস্থিত হন ছাত্রদল নেতা জাইদুল ইসলাম বাবু। এ সময় সাব্বিরকে ছাড়িয়ে নিতে জনতার দিকে এলোপাতাড়ি গুলি ছোঁড়েন তিনি। ওই গুলিতেই আহত হন মামুন ভূঁইয়া।
এদিকে মামুন নিহতের ঘটনায় মঙ্গলবার (১০ জুন) রাতেই মামুনের ভাই মো. বাদল একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন।
বুধবার (১১ জুন) দুপুরে ঢাকা মেডিকেল কলেজ মর্গে মরদেহের ময়নাতদন্ত সম্পন্ন হয়। ময়নাতদন্ত শেষে মরদেহ স্বজনদের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে।
মরদেহের সুরতহাল করেন শাহবাগ থানার উপ পরিদর্শক (এসআই) মাহমুদ হাসান। তিনি সুরতহাল রিপোর্টে উল্লেখ করেন, বাম কানের নিচে গুলিবিদ্ধ হন মামুন। পরে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যায়।
রূপগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) লিয়াকত আলী জানান, ছাত্রলীগ নেতা সাব্বির হোসেন খোকা ৫ আগস্ট সরকার পতনের পর গা ঢাকা দেন। গতকাল (মঙ্গলবার) বিকেলে তাকে এলাকায় দেখা গেলে ভুলতা ইউনিয়ন যুবদলের সাংগঠনিক সম্পাদক বাদলসহ এলাকাবাসী তাকে আটক করেন। এ খবর পেয়ে ছাত্রদল নেতা জাইদুল তাকে ছাড়িয়ে নিতে পিস্তল দিয়ে গুলিবর্ষণ করেন। এতে গুলিবিদ্ধ হয়ে মারা যান মামুন।
ওসি আরও জানান, গুলিবর্ষণের পর এলাকাবাসী ধাওয়া দিলে পালিয়ে যান ছাত্রদল নেতা বাবু। এরপর উত্তেজিত জনতা ছাত্রলীগ নেতা খোকাকে গণপিটুনি দিয়ে থানায় সোপর্দ করেন। রাতেই মামুনের ভাই মো. বাদল একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন।