চট্টগ্রাম ব্যুরো: চট্টগ্রাম জুড়ে গ্যাস সরবরাহে মারাত্মক সংকট সৃষ্টি হয়েছে। অধিকাংশ আবাসিক এলাকায় গত দুই দিন ধরে গ্যাস সরবরাহ প্রায় বন্ধ আছে। শিল্প-কারখানাগুলোও গ্যাস পাচ্ছে না।
কর্ণফুলী গ্যাস ডিস্ট্রিবিউশন কোম্পানি লিমিটেডের (কেজিডিসিএল) কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, মৌসুমী বায়ুর সক্রিয় থাকায় এখন বঙ্গোপসাগর উত্তাল অবস্থায় আছে। সাগরের ঢেউয়ের কারণে কক্সবাজারের মহেশখালীতে ভাসমান এলএনজি (তরলীকৃত প্রাকৃতিক গ্যাস) টার্মিনাল থেকে সরবরাহ প্রায় বন্ধ হয়ে গেছে। এতে চট্টগ্রামে গ্যাস সংকট দেখা দিয়েছে। গৃহস্থালির পাশাপাশি বিদ্যুৎকেন্দ্র, সার কারখানা, শিল্প কারখানা, সিএনজি স্টেশন, হোটেল-রেস্টুরেন্টেও গ্যাস সরবরাহে বিঘ্ন ঘটছে।
জানা গেছে, বুধবার (১৮ জুন) সকাল থেকে চট্টগ্রাম নগরীর বিভিন্ন এলাকায় বাসাবাড়িতে গ্যাসের চাপ কমতে শুরু করে। দুপুর থেকে নগরীর শিল্পকারখানাগুলোতে গ্যাস সরবরাহ প্রায় বন্ধ হয়ে যায়। তখন আবাসিক এলাকায় গ্যাসের চাপ কিছুটা বাড়ে।
কিন্তু সন্ধ্যার পর থেকে নগরীর কিছু এলাকায় বাসাবাড়িতে গ্যাস সরবরাহ পুরোপুরি বন্ধ হয়ে যায় আর কিছু এলাকায় চাপ কমে যায়। রাত ১২টার পর সীমিত আকারে সরবরাহ শুরু হলেও ভোর হওয়ার আগেই আবার বন্ধ হয়ে গেছে।

ছবি: সারাবাংলা
আকস্মিক গ্যাস সংকটের কারণে গৃহস্থালি ও বাণিজ্যিক- উভয় খাতের গ্রাহকেরা ব্যাপক ভোগান্তিতে পড়েছেন।
নগরীর আসকার দিঘীর পাড়ের বাসিন্দা সিতারা আহমেদ সারাবাংলাকে বলেন, ‘গতকাল (বুধবার) সকাল থেকে গ্যাসের সমস্যা হচ্ছে। প্রেসার একেবারে কম। সন্ধ্যা থেকে গভীর রাত পর্যন্ত ছিল না। সকালেও দেখি গ্যাস নেই।’
তৈরি পোশাক মালিকদের সংগঠন বিজিএমইএ’র পরিচালক রাকিবুল আলম চৌধুরী বলেন, ‘গতকাল দুপুর থেকে গ্যাসের চাপ নেই। আজকেও (বৃহস্পতিবার) একই অবস্থা। প্রোডাকশনে খুব প্রভাব পড়ছে।’
কর্ণফুলী গ্যাস ডিস্ট্রিবিউশন কোম্পানি লিমিটেডের (কেজিডিসিএল) ইঞ্জিনিয়ারিং সার্ভিসেস ডিভিশনের মহাব্যবস্থাপক প্রকৌশলী মোহাম্মদ শফিউল আজম খান বলেন, ‘সাগর উত্তাল থাকায় মহেশখালীতে এলএনজিবাহী জাহাজ থেকে গ্যাস সরবরাহ প্রায় বন্ধ হয়ে গেছে। যেখানে আমরা প্রতিদিন ২৮০ মিলিয়ন ঘনফুট পেতাম, সেটা এখন ১৬০-১৭০ এ নেমে এসেছে। এজন্য সমস্যা হচ্ছে। আমরা চেষ্টা করছি। আজ বিকেল থেকে পরিস্থিতির উন্নতি হতে পারে।’
উল্লেখ্য, চট্টগ্রামে মহেশখালীর এলএনজি টার্মিনাল ছাড়া বিকল্প কোনো উৎস থেকে গ্যাস সরবরাহের সুযোগ নেই।