Sunday 22 Jun 2025
Sarabangla | Breaking News | Sports | Entertainment

বাংলাদেশের বিপিও এখন রফতানি সক্ষম: আমীর খসরু

স্টাফ করেসপন্ডেন্ট
২২ জুন ২০২৫ ২১:৫৫ | আপডেট: ২৩ জুন ২০২৫ ০০:৪১

বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ও সাবেক বাণিজ্যমন্ত্রী আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী

ঢাকা: বাংলাদেশের বিপিও এখন রফতানি সক্ষমতা অর্জন করেছে বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ও সাবেক বাণিজ্যমন্ত্রী আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী।

তিনি বলেন, “বাংলাদেশের বিপিও শিল্প কেবল সম্ভাবনার কথা বলে না—এটি আজ বাস্তব রফতানি সক্ষমতা অর্জন করেছে। আমাদের এখনই প্রয়োজন সুনির্দিষ্ট কৌশল, আন্তর্জাতিক অংশীদারদের সঙ্গে গভীর সহযোগিতা, এবং নীতিনির্ভর দক্ষ জনশক্তি তৈরি। এসবের সমন্বয়ে আমরা আগামী দশকে বিপিও খাতকে দেশের রফতানি মূল চালিকাশক্তিতে পরিণত করতে পারি।”

রোববারা (২২ জুন) ঢাকা ক্যান্টনমেন্ট সেনাপ্রাঙ্গণে অনুষ্ঠিত দেশের সবচেয়ে বড় আউটসোর্সিং সম্মেলন ‘বিপিও সামিট বাংলাদেশ ২০২৫’ এর আলোচনা সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।

বিজ্ঞাপন

বাংলাদেশ অ্যাসোসিয়েশন অফ কন্ট্যাক্ট সেন্টার অ্যান্ড আউটসোর্সিং (বাক্কো)-এর আয়োজনে, তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি অধিদফতর এবং বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের অধীনে বিজনেস প্রোমোশন কাউন্সিলের যৌথ সহযোগিতায় অনুষ্ঠিত এই সামিট বিপিও ও আইটিইএস খাতকে এগিয়ে নেওয়ার এক বাস্তব মঞ্চ হিসেবে বিবেচিত হয়েছে।

“বিপ্লব থেকে উদ্ভাবনে” শিরোনামের বিপিও ২.০ সামিট বাংলাদেশে, প্রধান অতিথি ও বিএনপি স্থায়ী কমিটির সদস্য এবং সাবেক বাণিজ্যমন্ত্রী আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী দৃঢ় আত্মবিশ্বাস ব্যক্ত করে বলেন, ‘‘আন্তর্জাতিক কূটনীতি ও অংশীদারিত্ব ছাড়া বাংলাদেশ বৈশ্বিক আউটসোর্সিং খাতে শীর্ষে উঠে দাঁড়াতে পারবে না।’’

তিনি বলেন,“বাংলাদেশের জন্য প্রয়োজন সুদৃঢ় কূটনৈতিক যোগসূত্র ও প্রযুক্তি‑নির্ভর বৈশ্বিক অংশীদারিত্ব,… যাতে এখানে আগ্রহী আন্তর্জাতিক বিনিয়োগ, দক্ষ মানবসম্পদ আর আধুনিক অবকাঠামো একত্রে গড়ে ওঠে।”

আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী বলেন “বিপিও শিল্পে বিনিয়োগ বাড়াতে হলে প্রযুক্তি, মানবসম্পদ ও আন্তর্জাতিক বাজারে প্রবেশ—এই তিনটি ক্ষেত্রেই সমন্বয় করতে হবে।”

এইচআর, প্রযুক্তি ও প্রশিক্ষণ খাতে যৌথ উদ্যোগ নেওয়ার ওপর গুরুত্ব দিয়ে তিনি বলেন, “সরকার ও বেসরকারি খাতকে একসঙ্গে কাজ করতে হবে, আন্তর্জাতিক মানের প্রশিক্ষণ ও নিয়ন্ত্রণ কাঠামো নিশ্চিত করতে হবে।”

শীর্ষ পর্যায়ের অংশীদারিত্বের দিক তুলে ধরে খসরু মন্তব্য করেন,“বিশ্বব্যাংক, এশীয় উন্নয়ন ব্যাংকসহ গুরুত্বপূর্ণ আন্তর্জাতিক সংস্থাগুলোর সমর্থন আমরা চাই। বাংলাদেশের তরুণ-তরুণীরা দক্ষ ও ইংরেজিতে পারদর্শী—এই শক্তিকে আমরা বৈশ্বিক বাজারে তুলে ধরতে পারলে দেশ লাভবান হবে।”

এছাড়া খসরু জানান,“চ্যালেঞ্জ অবশ্য আছে—ডাটার নিরাপত্তা, মান নিয়ন্ত্রণ ও সময়মতো পরিশোধ ইস্যুতে সরকার ও প্রাইভেট খাতের সক্রিয় ভূমিকা দরকার। বাংলাদেশ একটি সম্ভাবনাময় আউটসোর্সিং হাবে পরিণত হবে, যদি কূটনৈতিক কৌশল, আন্তর্জাতিক অংশীদারিত্ব ও প্রযুক্তিতে বিনিয়োগ একসঙ্গে এগোতে পারে।”

২০১৫ সাল থেকে ধারাবাহিকভাবে আয়োজিত এই সামিটের এবারের প্রতিপাদ্য ছিল “BPO 2.0: Revolution to Innovation”, যা বাংলাদেশের সম্ভাবনাময় রূপান্তর ও প্রযুক্তিনির্ভর ভবিষ্যতের ইঙ্গিত বহন করে। এবারের সম্মেলনে দেশি ও আন্তর্জাতিক পর্যায়ের ৩০টিরও বেশি আইটিইএস/বিপিও প্রতিষ্ঠান তাদের পণ্য ও সেবা প্রদর্শনের সুযোগ পায়। দুই দিনব্যাপী সম্মেলনে আয়োজন করা হয় নয়টি থিমভিত্তিক সেমিনার ও কর্মশালা, যেখানে অংশ নেন আন্তর্জাতিক বিশেষজ্ঞ, কর্পোরেট নেতৃবৃন্দ, সরকারী প্রতিনিধি ও তরুণ উদ্যোক্তারা। আলোচনায় উঠে আসে সাইবার নিরাপত্তা, কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা, ভবিষ্যতের কর্মসংস্থান, স্কিল ডেভেলপমেন্ট, এবং তথ্যপ্রযুক্তি নীতিমালার আধুনিকীকরণসহ বিভিন্ন বিষয়।

সেমিনারটিতে আরও উপস্থিত ছিলেন বিভিন্ন দেশের কূটনৈতিক প্রতিনিধি ও আন্তর্জাতিক সহযোগী সংস্থার নীতিনির্ধারকরা, যারা বৈশ্বিক আউটসোর্সিং প্রবণতা, বিনিয়োগবান্ধব পরিবেশ তৈরির কৌশল, আন্তর্জাতিক পেমেন্ট সিস্টেম সহজীকরণ, এবং রফতানিমুখী প্রযুক্তি সেবা খাতে বাংলাদেশের সম্ভাবনা ও চ্যালেঞ্জ নিয়ে গুরুত্বপূর্ণ মতামত তুলে ধরেন। তারা বলেন, ‘একটি দেশ যখন বৈশ্বিক অংশীদারদের আস্থা অর্জনে সক্ষম হয়, তখন সেই দেশের সেবা রপ্তানি খাতও বিশ্বমঞ্চে একটি স্থায়ী অবস্থান তৈরি করতে পারে।’

সারাবাংলা/এফএন/এসআর

আমীর খসরু বাংলাদেশের বিপিও রফতানি সক্ষম