১২ দিনের সংঘাতে ইসরায়েলকে রক্ষায় অত্যাধুনিক অ্যান্টি-মিসাইল সিস্টেম বা টার্মিনাল হাই অল্টিটিউড এরিয়া ডিফেন্স (থাড)-এর ক্ষেপণাস্ত্রের বড় অংশ ব্যবহার করেছে যুক্তরাষ্ট্র। ইরানের ক্ষেপণাস্ত্র থামাতে নিজেদের উন্নত প্রতিরক্ষা ব্যবস্থার প্রায় ১৫ থেকে ২০ শতাংশ ব্যবহার করতে হয়েছে যুক্তরাষ্ট্রকে।
শনিবার (২৮ জুন) ভারতীয় গণমাধ্যম এনডিটিভির প্রতিবেদন থেকে এ তথ্য জানা যায়।
ইসরায়েল ও যুক্তরাষ্ট্রের ১২ দিনের সংঘাতে ইরানের বিমান হামলা ঠেকাতে যুক্তরাষ্ট্র তাদের অত্যাধুনিক অ্যান্টি-মিসাইল সিস্টেম বা টার্মিনাল হাই অল্টিটিউড এরিয়া ডিফেন্স (থাড)-এর ১৫ থেকে ২০ শতাংশ ব্যবহার করেছে।
মিলিটারি ওয়াচ ম্যাগাজিনের হিসাব অনুযায়ী, এই সংঘাতে প্রায় ৬০-৮০টি থাড ইন্টারসেপ্টর ব্যবহার করা হয়েছে। একটি থাড ইন্টারসেপ্টর উৎক্ষেপণে ১২-১৫ মিলিয়ন ডলার খরচ হয়। ফলে এসব ইন্টারসেপ্টরের মোট ব্যয় ৮১০ মিলিয়ন থেকে ১ দশমিক ২১৫ বিলিয়ন ডলার বা বাংলাদেশি টাকায় প্রায় ৯ হাজার ৯০০ কোটি ৫২ লাখ টাকা থেকে ১৪ হাজার ৮৫৩ কোটি ৭৫ লাখ টাকার মধ্যে দাঁড়িয়েছে। এটি ইরানের ক্ষেপণাস্ত্র হামলার ব্যয়ের তুলনায় অনেক বেশি। প্রতিরক্ষা ও আক্রমণের এই অসম ব্যয় দীর্ঘমেয়াদে বা বহু-ফ্রন্ট সংঘাতে টেকসই নয় বলে বিশ্লেষকরা মনে করছেন।
ওয়াল স্ট্রিট জার্নাল অনুসারে, যুক্তরাষ্ট্র ২০২৪ সালে ইসরায়েলে স্থাপিত থাড সিস্টেমের মজুদ পূরণ করেছিল।
ইরান তাদের পারমাণবিক ও সামরিক স্থাপনাগুলোতে হামলার প্রতিক্রিয়ায় ইসরায়েলের শহরগুলোতে ব্যাপক ক্ষেপণাস্ত্র হামলা চালায়। এই হামলায় গাদ্র, ইমাদ, খাইবার শেকান এবং ফাত্তাহ-১ হাইপারসনিক ক্ষেপণাস্ত্রের মতো মডেলগুলো ব্যবহৃত হয়। ফাত্তাহ-১ ক্ষেপণাস্ত্র ঘণ্টায় ১৫ ম্যাক গতিতে চলতে সক্ষম হওয়ায় এটি ঠেকানো কঠিন।
ইসরায়েলে থাড মোতায়েন চ্যালেঞ্জের মুখে পড়েছিল। কারণ, সংঘাতপূর্ণ অঞ্চলে মিত্রদের সমর্থন করতে গিয়ে এমন সামরিক সম্পদ ব্যবহার করতে হয়েছে যা যুক্তরাষ্ট্রের সামরিক প্রস্তুতি এবং ভবিষ্যতের মোতায়েনকে প্রভাবিত করতে পারে। থাড সিস্টেমটি মূলত উত্তর কোরিয়া এবং ইরানের মতো দেশগুলোর ক্রমবর্ধমান ক্ষেপণাস্ত্র সক্ষমতা মোকাবিলায় ডিজাইন করা হয়েছিল। কারণ, তারা প্রচলিত বা পারমাণবিক ওয়ারহেড বহন করতে সক্ষম মাঝারি ও মধ্যবর্তী পাল্লার ব্যালিস্টিক ক্ষেপণাস্ত্র তৈরি করছিল।
গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হলো, যুক্তরাষ্ট্র বছরে মাত্র ৫০-৬০টি থাড ইন্টারসেপ্টর উৎপাদন করে। এর অর্থ হলো, মাত্র ১১ দিনে যে পরিমাণ ইন্টারসেপ্টর ব্যয় হয়েছে, তা পুনরায় পূরণ করতে কয়েক বছর সময় লাগতে পারে।