Friday 04 Jul 2025
Sarabangla | Breaking News | Sports | Entertainment

থানায় হামলা চালিয়ে দুই আসামি ছিনতাই, পুলিশসহ আহত ২০

ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট
৩ জুলাই ২০২৫ ২৩:০৭

আসবাবপত্র, ল্যাপটপ, কম্পিউটার ভাঙচুর করা হয়।

লালমনিরহাট: লালমনিরহাটের পাটগ্রাম থানায় হামলা, ভাঙচুর ও সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে। ভ্রাম্যমাণ আদালতে চাঁদাবাজির মামলায় সাজাপ্রাপ্ত দুই ব্যক্তিকে থানা হেফাজত থেকে ছিনিয়ে নিয়েছে দুর্বৃত্তরা।

বুধবার (২ জুলাই) রাত সাড়ে ১০টার দিকে ঘটা এই সংঘর্ষে পুলিশের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাসহ অন্তত ২০ জন আহত হয়েছেন। থানার জানালার গ্লাস, আসবাবপত্র, ল্যাপটপ, কম্পিউটার এবং একটি পুলিশ গাড়িসহ সরকারি সম্পদের ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে।

জানা যায়, পাটগ্রাম উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) উত্তম কুমার দাস ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালনা করে পাটগ্রাম উপজেলার মমিনপুর এলাকার বেলাল হোসেন ও মির্জারকোর্ট এলাকার সোহেল রানাকে এক মাসের বিনাশ্রম কারাদণ্ড দেন। সাজাপ্রাপ্তদের থানায় আনার পরপরই এলাকায় উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়ে। পরে গ্রেফতার হওয়া ব্যক্তিদের সহযোগীরা সংঘবদ্ধ হয়ে পাটগ্রাম থানায় অতর্কিত হামলা চালায়। তারা থানায় ইট-পাটকেল নিক্ষেপ, জানালা-দরজা ভাঙচুর ও আসবাবপত্র তছনছ করে।

বিজ্ঞাপন

সংঘর্ষের সময় পুলিশ রাবার বুলেট ছুড়লেও পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে বেগ পেতে হয়েছে বলে পুলিশ দাবি করেছে। পরিস্থিতি মোকাবিলায় হাতীবান্ধা থানা থেকে অতিরিক্ত পুলিশ পাঠানো হলেও হামলাকারীদের সহযোগীরা ওই থানার সামনেও মহাসড়ক অবরোধ করে রেখেছিল।

লালমনিরহাটের পুলিশ সুপার তরিকুল ইসলাম জানিয়েছেন, সংঘর্ষে বেশ কয়েকজন পুলিশ সদস্য আহত হয়েছেন।

অন্যদিকে, পাথর-বালু মহালের ইজারাদার মাহমুদ হোসেন দাবি করেন, পুলিশের টিয়ারশেল, রাবার বুলেট ও নির্যাতনে বেশ কয়েকজন শ্রমিক আহত হয়েছেন।

এদিকে বৃহস্পতিবার (৩ জুলাই) সকালে বাংলাদেশ পুলিশ রংপুর রেঞ্জের ডিআইজি আমিনুল ইসলাম ও লালমনিরহাটের পুলিশ সুপার ঘটনাস্থল পরিদর্শনে আসেন। পরিদর্শন শেষে সাংবাদিকদের ডিআইজি বলেন, ‘ভ্রাম্যমাণ আদালতে সাজাপ্রাপ্ত আসামিদের থানা হেফাজত থেকে ছিনিয়ে নিতে দুর্বৃত্তরা হামলা ও ভাঙচুর চালিয়েছে। সিসিটিভি ফুটেজ দেখে হামলাকারীদের শনাক্ত করে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’

লালমনিরহাটের জেলা প্রশাসক এইচ এম রকিব হায়দার বলেন, ‘অবৈধভাবে পাথর উত্তোলন করে ট্রাক প্রতি চাঁদা আদায় করছিল একটি চক্র। নিয়ম বহির্ভূত এমন কার্যকলাপের বিরুদ্ধে প্রশাসন ব্যবস্থা নেবে। তাই দুইজনকে ভ্রাম্যমাণ আদালতে সাজা দেওয়া হয়েছে।’

এদিকে, সাজাপ্রাপ্তদের ‘অন্যায়ভাবে’ গ্রেফতারের অভিযোগ এনে পাথর-বালু মহালের ইজারাদারপক্ষ সংবাদ সম্মেলন করে থানার ওসি ও ইউএনওর বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার দাবি জানিয়েছে।

এই ঘটনায় পাটগ্রাম থানা ও আশপাশ এলাকায় চরম উত্তেজনা বিরাজ করছে। আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি স্বাভাবিক রাখতে থানায় আর্মড পুলিশ (এপিবিএন) ও বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ (বিজিবি) মোতায়েন করা হয়েছে। থানায় হামলা, সরকারি সম্পত্তি ভাঙচুর, আসামি ছিনতাই এবং পুলিশকে আহত করার ঘটনায় ৩২ জনকে এজাহারভুক্ত এবং অজ্ঞাত আরও কয়েকশ আসামি করে একটি মামলা দায়ের করা হয়েছে।

সারাবাংলা/এইচআই

থানায় হামলা পাটগ্রাম থানা ভাঙচুর লালমনিরহাট

বিজ্ঞাপন

আরো

সম্পর্কিত খবর