Saturday 05 Jul 2025
Sarabangla | Breaking News | Sports | Entertainment

ছেলের গলায় ছুরি ধরে গৃহবধূকে ধর্ষণ, ভুক্তভোগীকে ‘আপোসের’ চাপ

ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট
৫ জুলাই ২০২৫ ২২:৪৮ | আপডেট: ৫ জুলাই ২০২৫ ২৩:২৭

প্রতীকী ছবি

পঞ্চগড়: জেলার সদর উপজেলায় দুই বছর বয়সী ছেলের গলায় ছুরি ধরে এক গৃহবধূকে (২৮) দলবদ্ধ ধর্ষণের অভিযোগ উঠেছে। পরে তাকে আপোসের জন্য চাপ দেওয়া হচ্ছে বলেও অভিযোগ করেন ভুক্তভোগী নারী।

শনিবার (৫ জুলাই) বিকেলে এই ঘটনায় ভুক্তভোগী নারী বাদী হয়ে মামলা দায়ের করেন। এর আগে শুক্রবার (৪ জুলাই) দিবাগত রাতে উপজেলার তিন মাইল সুরিভিটা এলাকায় একটি চা বাগান সংলগ্ন এই ঘটনা ঘটে।

জানা যায়, পঞ্চগড় সদর থানায় নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনে চারজনের নাম উল্লেখ করে এবং অজ্ঞাত আরও দুইজনকে আসামি করে একটি এজাহার দায়ের করেন ভুক্তভোগী। এর আগে, শনিবার সকালে পুলিশ উপজেলার জগদল বাজার এলাকায় অভিযান চালিয়ে চারজনকে আটক করে।

বিজ্ঞাপন

গ্রেফতার আসামিরা হলেন- সদর উপজেলার পঞ্চগড় সদর ইউনিয়নের জগদল বাজার এলাকার জনি ইসলাম (২৭), বিপ্লব হোসেন (২৫), মকছেদুল ইসলাম (৩৩) ও সাতমেড়া ইউনিয়নের বদিনাজোত এলাকার সাদেকুল ইসলাম (২৮)।

মামলার এজাহার ও ভুক্তভোগী নারীর সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, ওই গৃহবধূ পঞ্চগড়ের বোদা উপজেলার ময়দানদিঘী ইউনিয়নের জুটমিল এলাকায় বাসা ভাড়া নিয়ে থাকতেন। শুক্রবার রাতে জুটমিল থেকে ইজিবাইকযোগে অসুস্থ দুই বছরের ছেলেকে নিয়ে পঞ্চগড় সদর ইউনিয়নে বাবার বাড়িতে যাচ্ছিলেন। পঞ্চগড় সদর ইউনিয়নের তিনমাইল সুরিভিটা এলাকায় পৌঁছালে তার ইজিবাইকের পেছনে থাকা আরেকটি ইজিবাইকের পরিচিত চালক (জনি) নাম ধরে ডাকতে থাকেন। ইজিবাইক থামতেই জনিসহ ৬ জন তাকে সড়কের পাশের একটি চা বাগান সংলগ্ন এলাকায় নিয়ে যান। সেখানে দুই বছর বয়সী ছেলের গলায় ছুরি ধরে ওই গৃহবধূকে পালাক্রমে ধর্ষণ করা হয়। ধর্ষণের একপর্যায়ে গৃহবধূ অচেতন হয়ে পড়েন।

পরে ধর্ষকেরা তাকে একটি সড়কের ধারে ফেলে পালিয়ে যায়। রাত ১টার দিকে ৯৯৯-এ খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌঁছে গৃহবধূকে উদ্ধার করে। রাত দেড়টার দিকে ছেলেসহ তাকে পঞ্চগড় আধুনিক সদর হাসপাতালে ভর্তি করা হয়।

ভুক্তভোগী নারী অভিযোগ করে বলেন, ‘আমার ছোট্ট ছেলের গলায় ছুরি ধরেছিল তারা। তখন আমি নিরুপায় হয়ে পড়ি। চিৎকার করতে চাইলে আমাকে তারা ভয়ভীতি দেখায়। পরে একে একে ৬ জন আমাকে ধর্ষণ করে। আমি ধর্ষণের শিকার হলাম এখন আমার কাছের লোকজন আপোসের জন্য চাপ দিচ্ছে। আমি এ ঘটনার দৃষ্টান্তমূলক বিচার চাই।’

পঞ্চগড় আধুনিক সদর হাসপাতালের আবাসিক চিকিৎসক আবুল কাশেম জানান, পুলিশ রাতে অচেতন অবস্থায় ওই নারীকে হাসপাতালে নিয়ে আসে। প্রয়োজনীয় আলামত সংগ্রহ করা হচ্ছে এবং ধর্ষণের বিষয়টি পরীক্ষার পর জানা যাবে। আপাতত তিনি শারীরিকভাবে স্থিতিশীল রয়েছেন।

পঞ্চগড় সদর থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) আব্দুল্লা হিল জামান বলেন, ‘খবর পেয়ে ঘটনাস্থল থেকে অচেতন অবস্থায় এক নারী এবং তার সঙ্গে থাকা দুই বছরের শিশুকে উদ্ধার করে হাসপাতালে নিয়ে আসা হয়। নারীর জ্ঞান ফিরে এলে তিনি ঘটনার বিস্তারিত জানান। তার দেওয়া তথ্য অনুযায়ী এখন পর্যন্ত চারজনকে আটক করা হয়েছে। বাকিদের গ্রেফতারে অভিযান চলছে। ওই নারীর স্বাস্থ্য পরীক্ষা প্রক্রিয়াধীন রয়েছে।’

সারাবাংলা/এইচআই

ধর্ষণ পঞ্চগড়

বিজ্ঞাপন

আরো

সম্পর্কিত খবর