ঢাকা: ঢাকার উত্তরা দিয়াবাড়িতে মাইলস্টোন স্কুল অ্যান্ড কলেজ ক্যাম্পাসে বিমান বিধ্বস্ত হওয়ার ঘটনায় হাসপাতাল হাসপাতালে চলেছে শোক। জাতীয় বার্ন ইনস্টিটিউটের আইসিইউ’র সামনে গিয়ে দেখা যায় হৃদয় বিদারক চিত্র।
মঙ্গলবার (২২ জুলাই) দুপুরে বার্ন ইনস্টিটিউটের আইসিউর সামনে গিয়ে দেখা যায়, সন্তানের অপেক্ষায় বাবা-মা স্বজরা গেটের পাশে বসে রযেছে। কেউ টেনশনে পায়চারা করছে। কেউ তজবি জপছেন।
সেখানে কথা হয় দগ্ধ ষষ্ঠ শ্রেণির শিক্ষার্থী মোসাব্বির মার্কিনের বাবা মো. মোহসিন আলমের সঙ্গে। তিনি বলেন, তাদের বাড়ি টঙ্গি নয়াবাড়ি এলাকায়। এই স্কুল থেকে তার বড় ছেলে মাহাদি এসএসসি পাশ করেছে। এরপর অন্য কলেজে ভর্তি করা হয়। ছোট ছেলে মোসাব্বির ষষ্ঠ শ্রেণিতে পড়তো। দুপুরে খবর পাই মাইলস্টোন স্কুলে বিমান পরে বিস্ফোরণ হয়ে আগুন ধরেছে।
তিনি বলেন, এক মিনিট দেরি না করে ছুটে গেলাম স্কুলে। কিন্তু সেখানে গিয়ে ছেলেকে না পেয়ে ছুটে গেলাম হাসপাতালে। সেখানে ছেলেকে আবিস্কার করি বিভৎস অবস্থায়। এখন আমার ছেলে আইসিইউতে আছে। মা সেলিনা বেগম ছেলের সুস্থতার জন্য মোনাজাত ধরে আছে। সবাই আমার ছেলের জন্য দোয়া করবেন।
এদিকে দগ্ধ সামিয়া আক্তারের (১০) বাবা আব্দুর রহিম বলেন, তাদের বাসা তুরাগ চন্ডালভোগ এলাকায়। তার মেয়ে সামিয়া চতুর্থ শ্রেণির শিক্ষার্থী। তিন ভাই বোনের মধ্যে সামিয়া দ্বিতীয়। বাসা থেকে স্কুলের দূরত্ব বেশি না মাত্র দুই থেকে তিন মিনিটের রাস্তা। প্রত্যেক দিন দুপুর ১টার সামিয়ার ছুটি হয়। সেই সময় অনুযায়ী, মোটরসাইকেলযোগে সামিয়ার স্কুলের মাঠে যাই। এ সময় আমার বড় ছেলে আমাকে ফোন করে জানায়, অতিরিক্ত ক্লাসের কারণে সামিয়ার ছুটি হবে ২টার দিকে।
তিনি আরও বলেন, স্কুল থেকে তখন বাসার দিকে চলে যাই। দুই থেকে তিন মিনিটের ব্যবধানে বিমান দুর্ঘটনাটি ঘটে। দ্রুত আবার স্কুলে গিয়ে সামিয়াকে খুঁজতে থাকি এবং তাকে স্কুলের বাইরে ঝলসানো অবস্থায় দেখতে পাই। দ্রুত থাকে বার্ন ইনস্টিটিউটে নিয়ে আসি। এখন আমার মেয়ে আইসিইউতে মৃত্যুর সঙ্গে পাঞ্জা লড়ছে।
জাতীয় বার্ন এন্ড প্লাস্টিক সার্জারি ইনস্টিটিউটের আবাসিক সার্জন ডা. শাওন বিন রহমান বলেন, বিমান দুর্ঘটনায় দগ্ধ ৪৪ জন এ পর্যন্ত ভর্তি রয়েছে। এরমধ্যে ১২ জন বর্তমান ইনস্টিটিউটের আইসিইউতে আছে। এদের মধ্যে অধিকাংশই শিশু শিক্ষার্থী। তাদের অবস্থা আশংকাজনক বলেই আইসিইউতে নেওয়া হয়েছে।
তিনি আরও বলেন, এই পর্যন্ত ইনস্টিটিউটে ১০ জন মারা গেছেন। তাদের সকলের লাশ পরিবারের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে।