ঢাকা: অস্থায়ী আবাসন, আবাসিক ভাতা (সম্পূরক বৃত্তি), ছাত্রলীগ ও ফ্যাসিবাদের দোসর শিক্ষার্থী, শিক্ষক ও কর্মকর্তাদের বিচারসহ পাঁচ দফা দাবি জানিয়েছেন জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় (জবি) শাখা ছাত্রদল। এর আগে তারা উপাচার্য ও কোষাধ্যক্ষ বরাবর স্মারকলিপি জমা দেন।
মঙ্গলবার (১২ আগস্ট) দুপরে স্মারকলিপি জমা দিয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের কাঁঠালতলায় সংবাদ সম্মেলন করেন জবি ছাত্রদল।
বিশ্ববিদ্যালয়ের শাখা ছাত্রদলের সদস্যসচিব শামসুল আরেফিনের উপস্থাপনায় দাবি উত্থাপন করেন ছাত্রদলের আহ্বায়ক মেহেদি হাসান হিমেল। এ ছাড়াও যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক শাহরিয়ার হোসেন, মোস্তাফিজ রহমান রুমি, সুমন সর্দার, রবিউল ইসলামসহ অন্যান্য নেতাকর্মীরা উপস্থিত ছিলেন।
সংবাদ সম্মেলনে জানানো হয়, জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রদলের পক্ষ থেকে এরই মধ্যে আপনার নিকট বিভিন্ন দাবি-দাওয়া নিয়ে স্মারকলিপি জমা দেওয়া সত্ত্বেও এখন পর্যন্ত এ বিষয়ে কোনো কার্যক্রম পরিলক্ষিত হয়নি। জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রদলের পক্ষ থেকে পূর্বে প্রদানকৃত সময়ের মধ্যে আপনার নিকট নিম্নোক্ত দাবিগুলো পুরণের জন্য পুনরায় জোর দাবি জানাচ্ছি। দাবিগুলো পূরণে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া না হলে বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রদল বৃহত্তর আন্দোলনের কর্মসূচি নিতে বাধ্য হবে।
জবি ছাত্রদলের দাবিগুলো হলো:
- অবিলম্বে আবাসিক ভাতা (সম্পূরক বৃত্তি) প্রদান করতে হবে এবং ১ জুলাই ২০২৫ থেকে তা কার্যকর করতে হবে। বিশ্ববিদ্যালয়ের মুক্ত মঞ্চে সংবাদ সম্মেলনের মাধ্যমে তা সকল শিক্ষার্থীদের অবহিত করতে হবে।
- বিশ্ববিদ্যালয়ের নিজস্ব ৭ একর জমিতে আগামী ১ মাসের মধ্যে অস্থায়ী আবাসনের কাজ শুরু করতে হবে এবং অবশ্যই তা আগামী ৬ মাসের মধ্যে সম্পন্ন করতে হবে।
- ছাত্রদলের পক্ষ থেকে পূর্বে প্রদানকৃত স্মারকলিপিতে ১ মাসের বেঁধে দেওয়া সময়ের ১০ দিন বাকি রয়েছে। আগামী ১০ দিনের মধ্যে আগের তালিকা অনুযায়ী ছাত্রলীগের শিক্ষার্থীদের ও নতুন প্রদত্ত তালিকা অনুযায়ী ফ্যাসিবাদের দোসর ৬৮ জন শিক্ষক ও ২৩ জন কর্মকর্তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে হবে।
- বিশ্ববিদ্যালয়ে অবৈধ নিয়োগ প্রাপ্তদের বিরুদ্ধে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করতে হবে।
- বিচারের পর স্বচ্ছ প্রক্রিয়ার মাধ্যমে জকসু প্রক্রিয়া তরান্বিত করতে হবে।
এ বিষয়ে সদস্যসচিব শামসুল আরেফিন বলেন, ‘কোনো ধরনের ব্যর্থতার দায় প্রশাসনকে যেন না নিতে হয়। আমরা কতগুলা ব্যবস্থা নিয়েছি। আমাদের বিগত ষোল-সতরো বছরে যারা সাধারণ শিক্ষার্থীদের হয়রানি করেছে বিদ্যমান আইন অনুযায়ী তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে হবে। যারা স্বৈরাচার কে প্রমোট করেছে তাদের বিরুদ্ধে ও প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিতে হবে। জবি সুন্দর, সুষ্ঠু শিক্ষার্থী বান্ধব হবে।‘
আহ্বায়ক মেহেদি হাসান হিমেল বলেন, ‘বিগত ফ্যাসিস্ট সরকারের সময় ছাত্রনেতারা নির্যাতিত হয়েছেন, আমিও বারবার আহত হয়েছি। ক্লাস করতে এসে হামলার শিকার হয়েছি। সেই হামলার সঙ্গে যারা জড়িত, ফ্যাসিস্ট সরকারকে সহায়তায় করেছে ছাত্রলীগের দ্বারা নিয়োগপ্রাপ্ত হয়েছেন তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে হবে। প্রথম ধাপে আমরা এ অভিযোগ দিয়েছি।’
এর আগে, বিশ্ববিদ্যালয়ে নিষিদ্ধ ঘোষিত ছাত্র সংগঠন বাংলাদেশ ছাত্রলীগের ৪২১ নেতাকর্মীর বিরুদ্ধে অভিযোগ এনে ২০ জুলাই বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য, ট্রেজারার, প্রক্টর ও রেজিস্টার স্মারকলিপি দেওয়া হয়।