ঢাকা: বেসরকারি খাতের আস্থা ফেরানো এখনও সরকারের জন্য বড় চ্যালেঞ্জ বলে মন্তব্য করেছেন অর্থ উপদেষ্টা ড. সালেহউদ্দিন আহমেদ।
তিনি বলেন, আগামী ফেব্রুয়ারিতে নতুন সরকার ক্ষমতা গ্রহণের পর তারা কী ধরনের নীতি নেবে, এর ওপর প্রাইভেট সেক্টরের আস্থা ফেরানোর বিষয়টি নির্ভর করছে। ব্যবসায়ীরা বিভিন্ন ইস্যুতে ২-৩ মাস আগেও বেশ হইচই করতো, যা এখন কমে গেছে। শতভাগ নিশ্চয়তা পৃথিবীর কোন ব্যবসাতেই নেই।
মঙ্গলবার (১২ আগস্ট) সচিবালয়ে অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের এক বছরে অর্থ মন্ত্রণালয়ের কাজের অগ্রগতি তুলে ধরতে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে তিনি এসব কথা বলেন।
অর্থ উপদেষ্টা বলেন, সারা পৃথিবীটাই এখন অনিশ্চিত হয়ে পড়েছে। ট্রাম্প ইজ দ্য বিগেস্ট প্লেয়ার অব দ্য আনসারটেনিটি।
ব্যাংক খাতে সঙ্কটের কথা উল্লেখ করে তিনি বলেন, অনেক ব্যাংক এখনও আমানতকারীদের টাকা ফেরত দিতে পারছে না। আমানতকারীদের ফেরত দেওয়ার জন্য একটি ব্যাংককে অনেক টাকা দেওয়া হয়েছে, তারপরও ব্যাংকটি গ্রাহকদের টাকা ফেরত দিতে পারছে না। সেই টাকা কোথায় গেল, সেটিও আমরা দেখব।
গত এক বছরের অর্থনৈতিক চিত্র তুলে ধরে অর্থ উপদেষ্টা বলেন, এক বছর পেছনে ফিরে তাকালে আমরা দেখতে পাই যে, এখনকার অর্থনৈতিক পরিস্থিতি মোটামুটি সন্তোষজনক, স্থিতিশীল। মূল্যস্ফীতি কমেছে, ব্যাংক খাতে স্থিতিশীলতা ফিরেছে। ব্যালেন্স অব পেমেন্ট, এক্সচেঞ্জ রেটে স্থিতিশীলতা ফিরে আসছে, বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ বাড়ছে।
তিনি বলেন, গত এক বছরে আমরা সব করে ফেলেছি, তা নয়। তবে আমরা সঠিক পথেই যাত্রা শুরু করেছি। খাদের কিনারা থেকে ফিরে এসেছি। অর্থনীতি এখনো নিরাপদ পাহাড়ের চূড়ায় পৌঁছায় নি। তবে স্বস্তি এসেছে অর্থনীতিতে, কিন্তু এখনো তৈরি হয়নি আত্মতুষ্টির জায়গা। আরও দ্রুত গেলে ভালো হতো। আমাদের কাজে কোন ভুল-ত্রুটিও থাকতে পারে।
পাচারকৃত টাকা ফেরত আনা প্রসঙ্গে অর্থ উপদেষ্টা বলেন, আমরা ১২টা দেশের সঙ্গে নেগোসিয়েশন করে পাচার হওয়া অর্থ ফেরত আনতে চেষ্টা করছি। টাকা পাচার যারা করে তাদের সক্ষমতা আমার, আপনার চেয়ে দ্বিগুণ। বাংলাদেশ ব্যাংকের রিজার্ভ চুরির যে অর্থ ফিলিপিন্সে চলে গেছে- তা ফেরত আনতে জান বের হয়ে যাচ্ছে।
সংবাদ সম্মেলনে প্রধান উপদেষ্টার বিশেষ সহকারী আনিসুজ্জামান চৌধুরী, জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের (এনবিআর) চেয়ারম্যান মো. আবদুর রহমান খান, অর্থ সচিব ড. মো. খায়েরুজ্জামান মজুমদার, আর্থিক প্রতিষ্ঠান বিভাগের সচিব নাজমা মোবারেক, অর্থনৈতিক সম্পর্ক বিভাগের (ইআরডি) সচিব মো. শাহরিয়ার কাদের ছিদ্দিকী প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।