Wednesday 13 Aug 2025
Sarabangla | Breaking News | Sports | Entertainment

চানখারপুলে ৬ হত্যা: তৃতীয়দিনের সাক্ষ্য শুরু দুপুরে

স্টাফ করেসপন্ডেন্ট
১৩ আগস্ট ২০২৫ ১১:২৬ | আপডেট: ১৩ আগস্ট ২০২৫ ১৩:১৭

ঢাকা: জুলাই-আগস্ট আন্দোলনে রাজধানীর চানখারপুলে ছয়জনকে হত্যার ঘটনায় মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় সাবেক ডিএমপি কমিশনার হাবিবুর রহমানসহ আট পুলিশ কর্মকর্তার বিরুদ্ধে তৃতীয় দিনের সাক্ষ্যগ্রহণ শুরু হচ্ছে দুপুরে।

বুধবার (১৩ আগস্ট) আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-১ এর চেয়ারম্যান বিচারপতি মো. গোলাম মর্তূজা মজুমদারের নেতৃত্বাধীন তিন সদস্যের বিচারিক প্যানেলে এ সাক্ষ্যগ্রহণ হবে।

ট্রাইব্যুনালের বাকি সদস্যরা হলেন- বিচারপতি মো. শফিউল আলম মাহমুদ ও বিচারক মো. মোহিতুল হক এনাম চৌধুরী।

এর আগে, ১২ আগস্ট দ্বিতীয় দিনের সাক্ষ্যগ্রহণ হয়। এদিন দুপুর পৌনে ১২টা থেকে বিকেল সাড়ে ৪টা পর্যন্ত ট্রাইব্যুনালে সাক্ষ্য-জেরা চলে। তবে মাঝে কিছুক্ষণ বিরতি দেওয়া হয়। এরমধ্যে দুই নম্বর সাক্ষী হিসেবে চানখারপুলের ঘটনা নিয়ে জবানবন্দি দেন আঞ্জুয়ারা ইয়াসমিন। তিনি একটি কলেজের সহযোগী অধ্যাপক। এছাড়া ছেলের হত্যার বিচার চেয়ে তৃতীয় সাক্ষীর জবানবন্দি দেন শেখ জামাল হাসান।

বিজ্ঞাপন

জবানবন্দিতে সাক্ষীরা চব্বিশের জুলাই-আগস্টে ঘটে যাওয়া চানখারপুলসহ আশপাশের এলাকায় ছাত্র-জনতার ওপর আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর নির্মমতার বর্ণনা তুলে ধরেন। একইসঙ্গে সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা, সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল, সাবেক আইজিপি চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুন, ডিএমপির সাবেক কমিশনার হাবিবুর রহমানসহ জড়িতদের সুষ্ঠু বিচার চান সাক্ষী আঞ্জুয়ারা। এছাড়া কান্নাকণ্ঠে ছেলের হত্যাকারী কনস্টেবল সুজনসহ অন্যদের ফাঁসি চেয়েছেন শহিদ শেখ মেহেদী হাসান জুনায়েদের বাবা।

ট্রাইব্যুনালে দ্বিতীয় সাক্ষ্যগ্রহণের সময় প্রসিকিউশনের পক্ষে শুনানি করেন প্রসিকিউটর মিজানুল ইসলাম ও গাজী এমএইচ তামিম। এ সময় উপস্থিত ছিলেন চিফ প্রসিকিউটর মোহাম্মদ তাজুল ইসলাম, প্রসিকিউটর তারেক আবদুল্লাহ, প্রসিকিউটর আবদুস সাত্তার পালোয়ানসহ অন্যরা।

সাক্ষ্যগ্রহণ শেষে দুজনকে জেরা করেন আসামিপক্ষের আইনজীবীরা। এর মধ্যে আরশাদের পক্ষে জেরা করেন আইনজীবী সাদ্দাম হোসেন অভি। সুজন ও নাসিরুলের পক্ষে জেরা করেন আইনজীবী আবুল হাসান ও ইমাজ হোসেন ইমনের পক্ষে আইনজীবী মো. জিয়াউর রশিদ জেরা করেন। সবশেষ পলাতক চার আসামির পক্ষে সাক্ষী পলাশকে জেরা করেনরাষ্ট্রনিযুক্ত আইনজীবী কুতুবউদ্দিন আহমেদ।

এর আগে, ১১ আগস্ট প্রথম দিনের সাক্ষ্যগ্রহণ ও জেরা শেষ হয়। এদিন চিফ প্রসিকিউটর মোহাম্মদ তাজুল ইসলামের সূচনা বক্তব্য শেষে মামলার প্রথম সাক্ষী হিসেবে সাক্ষ্য দেন শহিদ আনাসের বাবা সাহরিয়ার খান পলাশ।

সাক্ষী হয়েই নিজের ছেলেসহ জুলাই গণঅভ্যুত্থানে অন্যান্য নিহত-আহতদের জন্য দায়ীদের ফাঁসি চেয়েছেন এই বাবা।

পলাশের সাক্ষ্যগ্রহণ শেষে কিছু সময় মুলতবি বা বিরতি দেন ট্রাইব্যুনাল। পরবর্তীতে জেরা শুরু হয়। এর মধ্যে আরশাদের পক্ষে জেরা করেন আইনজীবী সাদ্দাম হোসেন অভি। সুজন ও নাসিরুলের পক্ষে জেরা করেন আইনজীবী আবুল হোসেন ও ইমাজ হোসেন ইমনের পক্ষে আইনজীবী মো. জিয়াউর রশিদ জেরা করেন। সবশেষ পলাতক চার আসামির পক্ষে সাক্ষী পলাশকে জেরা করেনরাষ্ট্রনিযুক্ত আইনজীবী কুতুবউদ্দিন।

এদিকে, আজও কারাগার থেকে এ মামলার চার আসামিকে ট্রাইব্যুনালে হাজির করে পুলিশ। তারা হলেন- শাহবাগ থানার সাবেক ওসি (অপারেশন) মো. আরশেদ হোসেন, কনস্টেবল মো. সুজন মিয়া, মো. ইমাজ হোসেন ইমন ‍ও মো. নাসিরুল ইসলাম।

এর আগে, ১৪ জুলাই চানখারপুলের মামলাটির পলাতক চার আসামিসহ আটজনের বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠন করে বিচার শুরুর আদেশ দেন ট্রাইব্যুনাল। ওই দিন আদালতে প্রসিকিউশনের পক্ষে শুনানি করেন চিফ প্রসিকিউটর মোহাম্মদ তাজুল ইসলাম।

গত ৩ জুলাই এ মামলার অভিযোগ গঠন নিয়ে দ্বিতীয় দিনের শুনানি শেষ হয়। সেদিন আসামিপক্ষে শুনানি করেন আইনজীবী সিফাত মাহমুদ শুভ। প্রসিকিউশনের পক্ষে ছিলেন প্রসিকিউটর মিজানুল ইসলাম ও গাজী এমএইচ তামিম।

এ ছাড়া পত্রিকায় বিজ্ঞপ্তি প্রকাশের পরও ট্রাইব্যুনালে হাজির হননি সাবেক ডিএমপি কমিশনার হাবিবুর রহমানসহ চারজন। বাকিরা হলেন- ডিএমপির সাবেক যুগ্ম কমিশনার সুদীপ কুমার চক্রবর্তী, রমনা অঞ্চলের সাবেক অতিরিক্ত উপকমিশনার শাহ আলম মো. আখতারুল ইসলাম ও রমনা অঞ্চলের সাবেক সহকারী কমিশনার মোহাম্মদ ইমরুল।

গত ২৯ জুন আসামিদের বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠন চেয়ে রাষ্ট্রপক্ষের শুনানি শেষ হয়। তবে অভিযোগ থেকে অব্যাহতির আবেদন শুনানির জন্য সময় চান আসামিপক্ষের আইনজীবীরা।

গত ৩ জুন পলাতক চার পুলিশ কর্মকর্তাকে হাজির করতে পত্রিকায় বিজ্ঞপ্তি প্রকাশের নির্দেশ দিয়েছেন ট্রাইব্যুনাল। ২৫ মে এ মামলায় আট পুলিশ কর্মকর্তার বিরুদ্ধে অভিযোগপত্র দাখিল করা হয়। ওই দিন পলাতক চার পুলিশ কর্মকর্তার বিরুদ্ধে গ্রেফতারি পরোয়ানাও জারি করেন ট্রাইব্যুনাল।

উল্লেখ্য, ২০২৪ সালের ৫ আগস্ট চানখারপুল এলাকায় শিক্ষার্থীদের শান্তিপূর্ণ আন্দোলনে গুলি চালায় পুলিশ। এতে বহু হতাহতের ঘটনার পাশাপাশি শাহরিয়ার খান আনাস, শেখ মাহদী হাসান জুনায়েদ, মো. ইয়াকুব, মো. রাকিব হাওলাদার, মো. ইসমামুল হক ও মানিক মিয়া শাহরিক নিহত হন।

সারাবাংলা/আরএম/ইআ

চানখারপুলে ৬ হত্যা

বিজ্ঞাপন

আরো

সম্পর্কিত খবর