যুক্তরাষ্ট্রের আলাস্কায় মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প ও রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনের বহুল আলোচিত বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়েছে। ইউক্রেন যুদ্ধ বন্ধে একটি যুদ্ধবিরতি চুক্তি হবে বলে প্রত্যাশা থাকলেও, প্রায় তিন ঘণ্টার দীর্ঘ আলোচনার পরও কোনো চুক্তি হয়নি।
শুক্রবার (১৫ আগস্ট) সকাল ১১টা ৩০ মিনিটে জয়েন্ট বেস এলমেনডর্ফ-রিচার্ডসনে শুরু হয় বৈঠক। রেড কার্পেট ও সামরিক বিমানের ফ্লাইওভারের মধ্য দিয়ে দুই নেতাকে আনুষ্ঠানিকভাবে স্বাগত জানানো হয়। বৈঠকে দুই নেতার সঙ্গে উপস্থিত ছিলেন দুজন করে শীর্ষ উপদেষ্টা।
প্রথম বৈঠক চলে প্রায় তিন ঘণ্টা। বৈঠক শেষে পুতিন সাংবাদিকদের বলেন, কিছু বিষয়ে চুক্তি হয়েছে, তবে বিস্তারিত জানাননি। ট্রাম্প বৈঠকটিকে অত্যন্ত ফলপ্রসূ আখ্যা দিলেও যুদ্ধবিরতি প্রসঙ্গে কোনো অগ্রগতি হয়নি। ফলে পরবর্তী বৃহত্তর বৈঠকও বাতিল করা হয়।
আলোচনার পর সাংবাদিকদের প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প বলেন, এখন ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কির ওপর নির্ভর করছে শান্তি চুক্তি হবে কি না। তার ভাষ্যমতে এখন আসল দায়িত্ব প্রেসিডেন্ট জেলেনস্কির এবং ইউরোপীয় দেশগুলোর।

পুতিনকে স্বাগত জানাচ্ছেন ডোনাল্ড ট্রাম্প।
ট্রাম্প আরও বলেন, ‘আমরা বেশিরভাগ বিষয়ে একমত হয়েছি, তবে দু-একটি ইস্যু এখনো রয়ে গেছে। পুতিন চান যুদ্ধ শেষ হোক, কিন্তু শেষ পর্যন্ত ইউক্রেনকেই সম্মতি দিতে হবে।’
অন্যদিকে পুতিন ইউক্রেন যুদ্ধকে রাশিয়ার নিরাপত্তার মৌলিক হুমকির সঙ্গে যুক্ত করে বলেন, ‘দীর্ঘমেয়াদি সমাধান চাইলে যুদ্ধের মূল কারণগুলো দূর করতে হবে। আজকের আলোচনার চুক্তিগুলো শুধু ইউক্রেন সংকটের সমাধানের সূচনা নয়, বরং যুক্তরাষ্ট্র–রাশিয়ার সম্পর্ক স্বাভাবিক করতেও সাহায্য করতে পারে।’
পুতিন আরও উল্লেখ করেন, তিনি ট্রাম্পের এই বক্তব্যের সঙ্গে একমত যে, যদি ট্রাম্প আগেই প্রেসিডেন্ট হতেন তবে ইউক্রেন যুদ্ধে পূর্ণমাত্রার হামলা হতো না।

ট্রাম্প-পুতিনের বৈঠক চলছে।
আলোচনার সময় ট্রাম্প ইঙ্গিত দেন যে, যুদ্ধের সম্ভাব্য সমাধান হতে পারে ভূমি বিনিময় ও যুক্তরাষ্ট্রের পক্ষ থেকে ইউক্রেনকে নিরাপত্তা নিশ্চয়তা দেওয়া। তিনি বলেন, ‘আমাদের মধ্যে অনেক বিষয়ে একমত হয়েছে। আসলে আমরা বেশিরভাগ বিষয়েই একমত হয়েছি। কয়েকটি বড় বিষয় রয়ে গেছে, তবে আমি মনে করি আমরা কাছাকাছি চলে এসেছি।’
এর আগে ট্রাম্প ঘোষণা করেছিলেন, যুদ্ধবিরতি চুক্তি না হলে রাশিয়ার বিরুদ্ধে কঠোর অর্থনৈতিক পদক্ষেপ নেওয়া হবে। কিন্তু বৈঠকের পর তিনি জানান, ‘এখনই সে বিষয়ে ভাবতে হচ্ছে না। দুই-তিন সপ্তাহ পরে হয়তো ভাবতে হবে।’
বৈঠক শেষে পুতিন ট্রাম্পকে মস্কো সফরে আমন্ত্রণ জানান। এই বৈঠক হলে সমালোচনার মুখে পড়তে পারেন বলে জানান ট্রাম্প। তবে বৈঠক হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে বলেও জানান তিনি।