ঢাকা: বহুল আলোচিত একুশে আগস্ট গ্রেনেড হামলার মামলায় বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানসহ সব আসামির খালাসের রায়ের বিরুদ্ধে চলছে রাষ্ট্রপক্ষের আপিল শুনানি।
মঙ্গলবার (১৯ আগস্ট) সকাল ১০টার কিছুক্ষণ আগে প্রধান বিচারপতি ড. সৈয়দ রেফাত আহমেদের নেতৃত্বাধীন ছয় বিচারপতির আপিল বেঞ্চে এ শুনানি শুরু হয়। এ নিয়ে তৃতীয় দিনের শুনানি চলমান।
আদালতে রাষ্ট্রপক্ষে শুনানি করছেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল ব্যারিস্টার আবদুল্লাহ আল মাহমুদ মাসুদ। আসামিপক্ষে রয়েছেন জ্যেষ্ঠ আইনজীবী এসএম শাহজাহান ও আইনজীবী মোহাম্মদ শিশির মনির।
এদিন সকালে নিজের ভেরিফায়েড ফেসবুক অ্যাকাউন্টে এ মামলা সংক্রান্ত একটি পোস্ট করেন আইনজীবী শিশির মনির। দীর্ঘ ও তথ্যবহুল যুক্তিতর্ক অনুষ্ঠিত হওয়ার কথাও ইঙ্গিত করেন তিনি।
এর আগে, ৩১ জুলাই প্রধান বিচারপতির নেতৃত্বাধীন একই বেঞ্চে দ্বিতীয় দিনের শুনানি শেষ হয়। পরে ১৩ আগস্ট পর্যন্ত মুলতবি করা হয়। গত ১৭ জুলাই এ বিষয়ের ওপর আপিল শুনানি করে রাষ্ট্রপক্ষ। পেপারবুক থেকে পাঠ করেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল ব্যারিস্টার আবদুল্লাহ আল মাহমুদ মাসুদ। ওই দিন বিএনপির পক্ষে ছিলেন জ্যেষ্ঠ আইনজীবী ব্যারিস্টার জমির উদ্দিন সরকার, জয়নুল আবেদীন, ব্যারিস্টার মাহবুব উদ্দিন খোক ও ব্যারিস্টার কায়সার কামাল।
এ ছাড়া এ মামলায় পলাতকদের পক্ষে স্টেট ডিফেন্স নিয়োগের আবেদন করে আসামিপক্ষ। শুনানি শেষে পলাতক মাওলানা তাজউদ্দিন আহমেদ ও হানিফ পরিবহনের মালিক মোহাম্মদ হানিফের পক্ষে স্টেট ডিফেন্স নিয়োগ দেওয়া হয়।
গত ১ জুন এ মামলায় তারেক রহমান ও সাবেক স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী লুৎফুজ্জামান বাবরসহ সব আসামির খালাসের রায়ের বিরুদ্ধে রাষ্ট্রপক্ষকে আপিলের অনুমতি দেন আপিল বিভাগ। হাইকোর্টের রায়ের বিরুদ্ধে রাষ্ট্রপক্ষের লিভ টু আপিল মঞ্জুর করে এ আদেশ দেন প্রধান বিচারপতি ড. সৈয়দ রেফাত আহমেদের নেতৃত্বাধীন ছয় সদস্যের আপিল বিভাগের বেঞ্চ।
ওই দিন আদালতে রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন অতিরিক্ত অ্যাটর্নি জেনারেল মুহাম্মদ আবদুল জব্বার ভূঞা। আসামিপক্ষে ছিলেন জ্যেষ্ঠ আইনজীবী এসএম শাহজাহান ও মোহাম্মদ শিশির মনির।
চলতি বছরের ১৫ মে হাইকোর্টের রায়ের বিরুদ্ধে করা লিভ টু আপিলের ওপর শুনানি শুরু হয়। চলতি বছরের ১২ জানুয়ারি আলোচিত এ মামলায় তারেক রহমান ও সাবেক স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী লুৎফুজ্জামান বাবরসহ সব আসামিকে খালাস দেন হাইকোর্ট। বিচারিক আদালতের রায় বাতিল করে এ রায় ঘোষণা করেন বিচারপতি একেএম আসাদুজ্জামান ও বিচারপতি সৈয়দ এনায়েত হোসেনের হাইকোর্ট বেঞ্চ।
ওই সময় হাইকোর্ট জানান, এসব মামলার বিচারিক আদালতের রায় অবৈধ। কারণ তা অবৈধ উপায়ে দেওয়া হয়েছে। এ রায়ের বিরুদ্ধেই লিভ টু আপিল করে রাষ্ট্রপক্ষ।
উল্লেখ্য, ২০০৪ সালের ২১ আগস্ট বঙ্গবন্ধু অ্যাভিনিউয়ে সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সমাবেশে গ্রেনেড হামলার ঘটনা ঘটে। এতে দলটির ২৪ নেতাকর্মী নিহত হন। আলোচিত এ ঘটনায় হত্যা ও বিস্ফোরক দ্রব্য আইনে দুটি মামলা হয়। ২০১৮ সালের ১০ অক্টোবর দুটি মামলারই রায় দেন বিচারিক আদালত। রায়ে বাবরসহ ১৯ জনকে মৃত্যুদণ্ড, তারেক রহমানসহ ১৯ জনকে যাবজ্জীবন ও ১১ জনকে বিভিন্ন মেয়াদে কারাদণ্ড দেওয়া হয়েছিল।