রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধে নিহত ইউক্রেনের আরও এক হাজার সেনার মরদেহ ফেরত দিয়েছে রাশিয়া। বিনিময়ে মস্কোকে ১৯ জন রুশ সেনার মরদেহ হস্তান্তর করেছে ইউক্রেন। যুক্তরাষ্ট্রের মধ্যস্থতায় যুদ্ধবিরতির আলোচনা চলার মধ্যেই এই মরদেহ হস্তান্তর প্রক্রিয়া সম্পন্ন হয়।
মঙ্গলবার (১৯ আগস্ট) রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনের সহকারী এবং অন্যতম মুখপাত্র ভ্লাদিমির মেডিনস্কি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম টেলিগ্রামে পোস্ট করা এক বার্তায় এই তথ্য জানিয়েছেন।
ইউক্রেনের ডোনেটস্ক, লুহানস্ক এবং ঝাপেরিঝঝিয়ায় প্রাণ হারিয়েছেন এসব সেনারা। এছাড়া, গত আগস্টে রাশিয়ার সীমান্তবর্তী এলাকা কুরস্কে নিহত হওয়া সেনাদের মরদেহও ফেরত দেওয়া হয়েছে। যদিও মস্কো এখনো এ বিষয়ে কোনো মন্তব্য করেনি।
রাশিয়ার রাষ্ট্রীয় সংবাদ সংস্থা তাস জানিয়েছে, মঙ্গলবার ১৯ জন সেনার মরদেহ ফেরত পেয়েছে মস্কো। এর আগে, ১৭ জুলাই একইভাবে এক হাজার সেনা বিনিময় করে দুই দেশ। চুক্তি অনুযায়ী, রাশিয়া বাধ্যবাধকতা লঙ্ঘন করছে বলে অভিযোগ করেছে ইউক্রেন। এর আগে, জুনে তুরস্কের আলোচনায় বন্দি ও মরদেহ বিনিময়ের বিষয়ে একমত হয় উভয় পক্ষ।
গত মে মাস থেকে শান্তি সংলাপ শুরু হয়েছে রাশিয়া ও ইউক্রেনের সরকারি প্রতিনিধিদের মধ্যে। সংলাপ শুরুর এক মাসের মধ্যে, ২ জুন প্রথমবার যুদ্ধে নিহত সেনাদের মরদেহ এবং জীবিত যুদ্ধবন্দিদের বিনিময়ে ঐকমত্যে পৌঁছায় মস্কো ও কিয়েভ। সেইবার ছয় হাজার করে মোট ১২ হাজার সেনার মরদেহ এবং এক হাজার করে মোট দুই হাজার জীবিত যুদ্ধবন্দি বিনিময় করেছিল রাশিয়া ও ইউক্রেন। পরে জুলাইয়ের শেষ দিকে আরও এক হাজার ২০০ জন করে মোট দুই হাজার ৪০০ জন যুদ্ধবন্দি বিনিময়ে সম্মত হয় প্রতিবেশী দুই দেশ।
প্রসঙ্গত, গত তিন মাসেরও বেশি সময় ধরে তুরস্কের ইস্তাম্বুল শহরে রাশিয়া ও ইউক্রেনের সরকারি প্রতিনিধিদের মধ্যে শান্তি সংলাপ চলছে। সংলাপে রুশ প্রতিনিধি দলের নেতৃত্বে আছেন মেডিনেস্কি। সম্প্রতি সেই সংলাপে এ সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়েছে বলে জানিয়েছেন তিনি।
টেলিগ্রাম পোস্টে মেডিনেস্কি জানিয়েছেন, তাদের মূল লক্ষ্য ইস্তাম্বুলের এই সংলাপকে ‘ইস্তাম্বুল চুক্তি’-তে উন্নীত করা। মরদেহ হস্তান্তরের সিদ্ধান্তও সেই আলোকেই নেওয়া হয়েছে।
সম্প্রতি রাশিয়া-ইউক্রেনের যুদ্ধ অবসানে মধ্যস্থতায় ভূমিকা নিয়েছে যুক্তরাষ্ট্র। ২০২২ সালে শুরু হওয়া এই যুদ্ধের অবসানে মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের সঙ্গে বৈঠক করেছেন রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন এবং ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কি।