ঢাকা: বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন, গুম, খুন, নির্যাতন ও মানবতার বিরুদ্ধে অপরাধের সর্বোচ্চ শাস্তি মৃত্যুদণ্ড। এসব অপরাধের জন্য শেখ হাসিনা দায়ী। হতাশ হওয়ার কিছু নেই, হাসিনার বিচার বাংলার মাটিতেই হতে হবে এবং তার সর্বোচ্চ শাস্তি নিশ্চিত করতে হবে।
শুক্রবার (২২ আগস্ট) বিকেলে রাজধানীর মানিক মিয়া এভিনিউয়ে সংসদ ভবনের সামনে এক আলোকচিত্র প্রদর্শনী ও আলোচনা সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ মন্তব্য করেন। গুম হওয়া ব্যক্তিদের পরিবারের সংগঠন ‘মায়ের ডাক’ প্রদর্শনীর আয়োজন করেন।
ফখরুল বলেন, ‘বর্তমান অন্তর্বর্তীকালীন সরকার গুম-খুনের শিকার পরিবারের কান্না থামাতে ব্যর্থ হয়েছে। সরকার গুম কমিশনকে প্রকাশ্যে আনা এবং পাবলিক শুনানি করার প্রতিশ্রুতি পূরণে ব্যর্থ হয়েছে। গুম-খুনের দায়ীদের চিহ্নিত করে বিচারের আওতায় আনার জন্য তাদের জবাবদিহি করতে হবে।’
তিনি আরও বলেন, ‘আমরা আশা করছি সরকার দায়ীদের বের করতে আন্তরিক চেষ্টা করবে।’
অনুষ্ঠানে গুম-খুনের শিকার ব্যক্তিদের স্বজনরা তাদের দীর্ঘদিনের বেদনা ও ক্ষোভ প্রকাশ করেন। তারা বলেন, ‘সরকার পরিবর্তন হলেও এখনো তারা ন্যায়বিচার পাননি, যা হতাশার জন্ম দিচ্ছে।’
তিনি আরও বলেন, ‘বর্তমান সরকার যদি আন্তরিক হয় তবে দায়ীদের খুঁজে বের করার উদ্যোগ নেবে। জনগণ নিরাশ নয়, আন্দোলন কখনও ব্যর্থ হয় না—এই বিশ্বাস নিয়েই বিএনপি সবসময় নির্যাতিত মানুষের পাশে আছে।’
গুমের শিকার মুন্নার প্রসঙ্গ টেনে তিনি জানান, তার বাবা ছেলেকে খুঁজতে খুঁজতে ভারতে পর্যন্ত গিয়েছিলেন। সেখানে ব্যর্থ হয়ে শেষ পর্যন্ত অসুস্থ হয়ে মারা যান। এটি এক ভয়াবহ মানবিক বিপর্যয়, যা আওয়ামী লীগ সরকারের আগে কল্পনাও করা যায়নি।
বিএনপির মহাসচিব বলেন, ‘আমরা নির্বাচন চাই, কিন্তু সেই নির্বাচনের মাধ্যমে সব নির্যাতনের বিচার নিশ্চিতও দ্রুত সম্পন্ন করতে চাই।’
তিনি সরকারের উদ্দেশ্যে বলেন, ‘আমি প্রত্যাশা করবো যে মায়েরা তাদের সন্তান হারিয়েছেন, যে বোনেরা তাদের স্বামী হারিয়েছেন, যে সন্তানরা তাদের পিতাকে হারিয়েছেন। এই গুম হওয়া প্রতিটি ব্যক্তির সম্পর্কে সব তথ্য বের করে আনার চেষ্টা করবে এই সরকার। সে যেই হোক না কেনো? কারাই হোক না কেনো। যতো বড় শক্তিশালীই হোক না কেনো। এইটা সম্পূর্ণভাবে মানবতাবিরোধী হত্যাকাণ্ড। এই হত্যাগুলোর জন্য হাসিনাই দায়ী। হাসিনার বিচার এই দেশের মাটিতেই সর্বোচ্চ শাস্তি হতে হবে।