রংপুর: স্বাস্থ্য খাতে অনিয়ম বরদাশত করা হবে না জানিয়ে স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ উপদেষ্টা নুরজাহান বেগম বলেছেন, স্বাস্থ্য খাতে চলমান সব অনিয়ম অবিলম্বে দূর করা হবে।
শনিবার (২৩ আগস্ট) দুপুর সাড়ে ১২টায় রংপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল পরিদর্শন শেষে এসব কথা বলেন তিনি। এর আগে, সকালে এক দিনের সফরে রংপুর ও নীলফামারীতে স্বাস্থ্যখাতের পরিস্থিতি দেখতে প্রথমে রংপুরে পৌঁছান স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ উপদেষ্টা।
রংপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের বিভিন্ন ওয়ার্ড পরিদর্শন এবং রোগীদের সঙ্গে কথা শেষে স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ উপদেষ্টা বলেন, ‘হাসপাতালের পরিস্থিতি নাজুক। চিকিৎসা সেবা নিতে এসে ভোগান্তি আছে এটা সত্য তবে চিকিৎসকরা চেষ্টা করছেন যথাসাধ্য। চিকিৎসকরা চেষ্টা করছেন পরিস্থিতি সামাল দেওয়ার। আপনারা জানেন করোনা ভাইরাসের সময় চিকিৎসক, নার্স, টেকনোলজিস্টরা অনেকেই জীবন বাজি রেখে চিকিৎসা দিয়েছেন অনেকেই প্রাণ হারিয়েছেন তাদের আমরা শ্রদ্ধা করি। তারপরও যারা সিন্ডিকেটসহ নানা অপরাধমূলক কাজের সঙ্গে জড়িত সেই সব ডাক্তার নার্স টেকনোলজিস্টদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে। আশা করছি এই পরিস্থিতি অচিরেই ভালো হবে।’
রংপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের চিকিৎসক নার্স কিংবা টেকনোলজিস্ট কেউ যদি অনিয়মিত হয় তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়া হবে জানিয়ে তিনি বলেন, ‘কর্মক্ষেত্রে দেরি করে আসার সুযোগ নেই। কেউ যদি কর্মক্ষেত্রে না আসে বা কাউকে যদি উপস্থিত না পাওয়া যায় তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে। আজকে আমি দেখেছি কয়েকজন আসেনি কর্মক্ষেত্রে তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’
সবাইকে পরিবর্তন হতে হবে জানিয়ে স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ উপদেষ্টা বলেন, ‘আমরা সবাই যদি পরিবর্তন না হই তাহলে দেশ পরিবর্তন কিভাবে হবে? নিজেদের সেলফ এসেসমেন্ট আমরা যদি না করি তাহলে পরিবর্তন সম্ভব নয়।’
তিনি বলেন, রংপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে বেডের থেকে রোগির সংখ্যা বেশি হওয়ায় মেঝেতে চিকিৎসা নিচ্ছেন তারা। তাই সরকার আলাদা করে কিডনি, ক্যান্সার ও হৃদরোগ বিশেষায়িত ৫৬০ বেডের হাসপাতাল তৈরির পরিকল্পনা নিয়েছে। এরইমধ্যে এটার জন্য বাজেট পাস হয়ে গেছে। আমরা করতে না পারলেও যে সরকার আগামীতে আসবে তারা করবে।’
রংপুর শিশু হাসপাতাল চালু প্রসঙ্গে তিনি বলেন, ‘শিশু হাসপাতাল আমি দেখে যাব, এটা চালু না করার কিছু নেই। হাসপাতাল করতে হলে তার জনবল লাগে, যন্ত্রপাতি লাগে, এগুলো আগের সরকার কোনো পরিকল্পনা করে নাই। এটা আমাদের মাথায় আছে।’
এ সময় স্বাস্থ্য অধিদফতরের মহাপরিচালক অধ্যাপক ডা. মো. আবু জাফর, রংপুরের জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ রবিউল ফয়সাল, রংপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের পরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল আশিকুর রহমান, সিভিল সার্জন ডা. শাহিন সুলতানাসহ অন্যান্য কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।
এর আগে, সকাল ১০টায় রংপুরের তারাগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স পরিদর্শনে গিয়ে হাসপাতালের বিভিন্ন বিভাগ ঘুরে দেখেন এবং রোগীদের সঙ্গে কথা বলেন। সেখানে তিনি বলেন, ‘জনগণের স্বাস্থ্যসেবা নিশ্চিত করতে সরকার দৃঢ়প্রতিজ্ঞ।’
স্বাস্থ্য খাতের উন্নয়নে স্থানীয় প্রশাসন এবং স্বাস্থ্যকর্মীদের সঠিকভাবে দায়িত্ব পালনের আহ্বান জানান তিনি।