Monday 25 Aug 2025
Sarabangla | Breaking News | Sports | Entertainment

আইনজীবী খুন: চিন্ময়সহ ৩৯ জনের বিরুদ্ধে অভিযোগপত্র গ্রহণ

স্পেশাল করেসপন্ডেন্ট
২৫ আগস্ট ২০২৫ ১২:৪৯ | আপডেট: ২৫ আগস্ট ২০২৫ ১৫:২৩

নিহত আইনজীবী সাইফুল ইসলাম আলিফ এবং ইসকনের সাবেক সংগঠক চিন্ময় কৃষ্ণ দাস।

চট্টগ্রাম ব্যুরো: ইসকনের সাবেক সংগঠক চিন্ময় কৃষ্ণ দাসের জন্য চট্টগ্রাম আদালতে হাঙ্গামাকে কেন্দ্র করে আইনজীবী সাইফুল ইসলাম আলিফকে খুনের মামলার অভিযোগপত্র গ্রহণের শুনানি সম্পন্ন হয়েছে। আদালত অভিযোগপত্র গ্রহণ করে পলাতক আসামিদের বিরুদ্ধে গ্রেফতারি পরোয়ানা জারির আদেশ দিয়েছেন।

সোমবার (২৫ আগস্ট) সকালে চট্টগ্রাম মহানগর হাকিম এস এম আলাউদ্দীনের আদালতে অভিযোগপত্রের ওপর শুনানি সম্পন্ন হয়েছে।

এর আগে, গত ১০ আগস্ট অভিযোগপত্রের ওপর আংশিক শুনানি শেষে আদালত মামলার বাদীকে হাজির হতে বলেছিলেন। সোমবার বাদী আলিফের বাবা জামাল উদ্দিনের উপস্থিতিতে শুনানি হয়েছে।

বিজ্ঞাপন

আইনজীবী সাইফুল ইসলাম আলিফকে নৃশংসভাবে খুনের ঘটনায় ইসকনের সাবেক সংগঠক চিন্ময় কৃষ্ণ দাস ব্রহ্মচারীকে প্রধান আসামি করে ৩৮ জনের বিরুদ্ধে গত ১ জুলাই আদালতে অভিযোগপত্র দাখিল করে পুলিশ। মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা নগর পুলিশের কোতোয়ালী জোনের সহকারী কমিশনার মাহফুজুর রহমান অভিযোগপত্রটি দাখিল করেন। তবে, এর আগেই পুলিশের আবেদনের প্রেক্ষিতে আদালতের নির্দেশে ৫ মে ওই মামলায় কারাবন্দি চিন্ময়কে গ্রেফতার দেখানো হয়।

অভিযোগপত্রে সুকান্ত দত্ত নামে একজনকে নাম-ঠিকানা সঠিক না পাওয়ায় আসামির তালিকা থেকে বাদ দেওয়ার আবেদন করছিলেন তদন্তকারী কর্মকর্তা। আদালতে শুনানিতে রাষ্ট্র ও বাদীপক্ষে এ বিষয়ে আপত্তি জানানো হয়৷

চট্টগ্রাম মহানগর আদালতের সহকারী পাবলিক প্রসিকিউটর অ্যাডভোকেট মো. রায়হানুল ওয়াজেদ চৌধুরী সারাবাংলাকে জানিয়েছেন, বাদী অভিযোগপত্রের ওপর সন্তুষ্ট জানিয়ে এ বিষয়ে কোনো নারাজি দেবেন না বলে আদালতকে অবহিত করেন। এরপর আদালত মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তার উল্লেখ করা ৩৮ জন এবং অব্যাহতির সুপারিশ করা একজনসহ মোট ৩৯ আসামির বিরুদ্ধে অভিযোগপত্র গ্রহণ করেন। একইসঙ্গে আদালত পলাতক আসামিদের বিরুদ্ধে গ্রেফতারি পরোয়ানা জারির আদেশ দিয়েছেন।

৩৯ আসামির মধ্যে চিন্ময় কৃষ্ণ দাসসহ ২০ জন আসামি কারাগারে এবং ১৯ জন পলাতক আছেন।

আসামিরা হলেন- চন্দন দাস মেথর, রিপন দাস, রাজীব ভট্টাচার্য্য, শুভ কান্তি দাস, আমান দাস, বুঞ্জা, রনব, বিধান, বিকাশ, রমিত প্রকাশ দাস, রুমিত দাস, নয়ন দাস, ওমকার দাস, বিশাল, লালা দাস, সামীর, সোহেল দাশ, শিব কুমার, বিগলাল, পরাশ, গণেশ, ওম দাস, পপি, অজয়, দেবী চরণ, দেব, জয়, লালা মেথর, দুর্লভ দাস, সুমিত দাস, সনু দাস, সকু দাস, ভাজন, আশিক, শাহিত, শিবা দাস, দ্বীপ দাস ও সুকান্ত দত্ত।

চট্টগ্রামের কোতোয়ালী থানায় দায়ের হওয়া রাষ্ট্রদ্রোহ মামলায় গত বছরের ২৫ নভেম্বর রাতে ঢাকার শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর থেকে ইসকনের বহিষ্কৃত সংগঠক ও সনাতনী জাগরণ জোট নামে একটি সংগঠনের মুখপাত্র চিন্ময় কৃষ্ণ দাসকে গ্রেফতার করে ডিএমপির গোয়েন্দা শাখা (ডিবি)। পরদিন ২৬ নভেম্বর তাকে চট্টগ্রাম আদালতে হাজির করা হলে বিচারক কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দেন।

কারাগারে পাঠানোর নির্দেশকে কেন্দ্র করে চট্টগ্রাম আদালত প্রাঙ্গনে ত্রাস সৃষ্টি করে চিন্ময়ের অনুসারীরা। প্রায় তিন ঘণ্টা তাকে বহনকারী প্রিজন ভ্যান আদালত এলাকায় আটকে রাখে তারা। একপর্যায়ে পুলিশ, বিজিবি লাঠিপেটা ও সাউন্ড গ্রেনেড নিক্ষেপ করে বিক্ষোভকারীদের ছত্রভঙ্গ করে দেয়। তখনই সংঘর্ষের সূত্রপাত হয়। পরবর্তীতে নগরীর লালদিঘীর পাড় থেকে কোতোয়ালী এলাকায় সংঘর্ষ ছড়িয়ে পড়ে।

সংঘর্ষের সময় আইনজীবী সাইফুল ইসলাম আলিফকে আদালত প্রাঙ্গণের অদূরে নগরীর বান্ডেল সেবক কলোনির সামনে নৃশংসভাবে কুপিয়ে খুন করা হয়। এ ঘটনায় ২৯ নভেম্বর আলিফের বাবা জামাল উদ্দিন নগরীর কোতোয়ালী থানায় ৩১ জনের নাম উল্লেখ করে অজ্ঞাতনামা আরও ১০-১৫ জনকে আসামি করে মামলা করেন। আসামিরা সবাই চিন্ময়ের অনুসারী হিসেবে পরিচিত।

তবে, জামাল উদ্দিনের করা মামলায় চিন্ময় কৃষ্ণ দাস ব্রহ্মচারীর নাম ছিল না। গত ৫ মে মামলার তদন্ত কর্মকর্তা তদন্তে সম্পৃক্ততা পাবার তথ্য উল্লেখ করে চিন্ময়কে ওই মামলায় গ্রেফতার দেখানোর আবেদন করেন। আদালত গ্রেফতার দেখানোর আদেশ দেন। এরপর আদালতের অনুমতি নিয়ে ওই মামলায় চিন্ময়কে জেলগেটে জিজ্ঞাসাবাদও করেন তদন্ত কর্মকর্তা।

সারাবাংলা/আরডি/এসডব্লিউ

অভিযোগপত্র গ্রহণ আইনজীবী আলিফ হত্যা গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি চিন্ময় কৃষ্ণ দাস

বিজ্ঞাপন

আরো

সম্পর্কিত খবর