ঢাকা: ঢাকায় কোনো বাড়ি নেই। রাজধানীর আশপাশেও নেই সম্পত্তি। অনেকটা ভাসমান-অসহায় আর গরিব। রাজউকের প্লট পেতে নিজেদের পরিচয় এভাবেই তুলে ধরেছিলেন সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বোন শেখ রেহানা। মিথ্যা তথ্য দিয়ে প্লট নিয়েছেন দুই সন্তানের নামেও।
বৃহস্পতিবার (২৮ আগস্ট) ঢাকার চার নম্বর বিশেষ জজ আদালতের বিচারক মো. রবিউল আলমের আদালতে রাজউকের তিন কর্মকর্তার জবানবন্দিতে উঠে এসেছে এসব তথ্য।
রাজউকের পূর্বাচল নতুন শহর প্রকল্পে সরকারি প্লট বরাদ্দ নেওয়ার অভিযোগে সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ ২৩ জনের বিরুদ্ধে করা পৃথক তিন মামলায় সাক্ষ্য দেন তারা। তিন সাক্ষী হলেন- রাজউকের উপপরিচালক মো. মাহবুবার রহমান, সহকারী পরিচালক অসীম শীল ও উল্লাস চৌধুরী।
দুদকের প্রসিকিউটর খান মো. মঈনুল হাসান বলেন, তিন মামলায় সাক্ষ্য দিয়েছেন এই তিনজন। পরবর্তী সাক্ষ্যগ্রহণের জন্য আগামী ৪ সেপ্টেম্বর দিন ধার্য করেছেন আদালত। তবে তবে আসামিরা পলাতক থাকায় তাদের পক্ষে কোনো আইনজীবী উপস্থিত ছিলেন না। এজন্য জেরাও হয়নি।
আদালতে দেওয়া সাক্ষীদের তিনটি হলফনামার বরাত দিয়ে প্রসিকিউটর মঈনুল বলেন, ‘প্লট বরাদ্দ নেয়ার সময় জমা দেওয়া তিনটি হলফনামায় মিথ্যা তথ্য দিয়েছেন আসামিরা। তাদের ঢাকা ও ঢাকার বাইরে একাধিক প্লট-বাড়ি থাকার পরও মিথ্যা হলফনামা দিয়ে প্লট বরাদ্দ নিয়েছেন। জব্দ করা ডকুমেন্টে তাদের জীবনবৃত্তান্তসহ ৪৪টি তথ্য অন্তর্ভুক্ত ছিল।’
তিনি আরও বলেন, ‘তাদের নিজ নামে বা তাদের পৌষ্যদের নামে কোনো সম্পত্তি নেই বলে হলফনামায় উল্লেখ করেছেন। তারা নিজেদের ভাসমান, অসহায়, গরিব মানুষ দেখিয়ে প্লট বরাদ্দ নেওয়ার আবেদন করেছিলেন। যেহেতু তাদের ফ্লাট বাড়ি প্রয়োজন, সেহেতু এই মিথ্যা হলফনামা দিয়েছেন তারা।’
এর আগে, ৩১ জুলাই এসব মামলায় আসামিদের বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠন করে বিচার শুরুর আদেশ দেন একই আদালত। একটি মামলায় শেখ রেহানা, টিউলিপ ও শেখ হাসিনাসহ আসামি ১৭ জন। আরেকটিতে আজমিনা সিদ্দিক, টিউলিপ ও শেখ হাসিনাসহ ১৮ জন। অন্য মামলায় রাদওয়ান, টিউলিপ ও শেখ হাসিনাসহ ১৮ জনকে আসামি করা হয়েছে। প্লট বরাদ্দের দুর্নীতির অভিযোগে চলতি বছরের জানুয়ারিতে মোট ছয়টি মামলা করে দুদক।
মামলার অভিযোগে বলা হয়, সরকারের সর্বোচ্চ পদে থাকাকালে ক্ষমতার অপব্যবহার করেন সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও তার পরিবারের সদস্যরা। সম্পদ থাকতেও পূর্বাচল আবাসন প্রকল্পের ২৭ নম্বর সেক্টরে ১০ কাঠা করে প্লট বরাদ্দ নেন তারা।