Thursday 28 Aug 2025
Sarabangla | Breaking News | Sports | Entertainment

ইসলামী ব্যাংকের ১১০০ কোটি টাকা পাচার, এস আলম পরিবারের বিরুদ্ধে মামলা

স্পেশাল করেসপন্ডেন্ট
২৮ আগস্ট ২০২৫ ২১:১০ | আপডেট: ২৮ আগস্ট ২০২৫ ২২:২৩

এস আলম গ্রুপের চেয়ারম্যান সাইফুল আলম মাসুদ। ছবি: সংগৃহীত

চট্টগ্রাম ব্যুরো: ইসলামী ব্যাংক থেকে প্রায় ১১০০ কোটি টাকা আত্মসাৎ করে পাচারের অভিযোগে বিতর্কিত শিল্পগোষ্ঠী এস আলম গ্রুপের চেয়ারম্যান সাইফুল আলম মাসুদ ও তার স্ত্রী-সন্তান, ভাই-ভাগ্নেসহ ৩১ জনের বিরুদ্ধে মামলা করেছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)।

বৃহস্পতিবার (২৮ আগস্ট) দুদকের প্রধান কার্যালয়ের উপ-পরিচালক তাহাসীন মুনাবীল হক চট্টগ্রাম জেলা কার্যালয়ে মামলাটি করেন। দুদকের চট্টগ্রাম জেলা কার্যালয়ের উপ-পরিচালক সুবেল আহমেদ সারাবাংলাকে বিষয়টি জানিয়েছেন।

মামলার আসামিরা হলেন- এস আলম গ্রুপের চেয়ারম্যান সাইফুল আলম মাসুদ, তার ভাগ্নে মোহাম্মদ মোস্তান বিল্লাহ আদিল, ভাই আব্দুস সামাদ, ওসমান গণি, মোহাম্মদ আবদুল্লাহ হাসান ও রাশেদুল আলম, স্ত্রী ফারজানা পারভীন, ছেলে আশরাফুল আলম ও আহসানুল আলম, মেয়ে মায়মুনা খানম, ভাইয়ের স্ত্রী শারমিন ফাতেমা।

বিজ্ঞাপন

মামলায় ইসলামী ব্যাংকের সাবেক কর্মকর্তাদের মধ্যে মিফতাহ উদ্দীন, মোহাম্মদ সাব্বির, মাহবুব উল আলম, মনিরুল মওলা, কায়সার আলী, এহসানুল ইসলাম, সিরাজুল কবীর, মনজুর হাসান ও তাহের আহমেদ চৌধুরীকে আসামি করা হয়েছে।

এছাড়া, চট্টগ্রামভিত্তিক ব্যবসা প্রতিষ্ঠান ডিগনিটি বিজনেসের মালিক মো. সাইফুদ্দীন, ইউনাইটেড সুপার ট্রেডার্সের মোহাম্মদ গোলাম কিবরিয়া, মিনহাজ করপোরেশনের এমদাদুল ইসলাম, জিনিয়াস ট্রেডিংয়ের আবুল কালাম, ক্রাফট বিজনেসের তারিকুল ইসলাম চৌধুরী, এপারচার ট্রেডিংয়ের এস এম নেছার উল্লাহ, দুলারী এন্টারপ্রাইজের সাদেকুর রহমান, ইউনিক ট্রেডার্সের তারেকুল ইসলাম চৌধুরী, আনসাব এন্টারপ্রাইজের আনসারুল ইসলাম চৌধুরী, গ্রিন এক্সপোর্ট ট্রেডার্সের এম এ মোনায়েম এবং আইআইএস কনসাল্টিংয়ের ওয়াহিদুর রহমানকে আসামি করা হয়েছে।

মামলার অভিযোগে বলা হয়েছে, ২০১৭ থেকে ২০২৪ সালের মধ্যে আসামিরা পরস্পরের যোগসাজশে যোগ্যতা নিরুপণ না করে আয়সীমা বাড়িয়ে দেখিয়ে ইসলামী ব্যাংক থেকে ১ হাজার ৭৭ কোটি ১১ লাখ টাকা চট্টগ্রামভিত্তিক ব্যবসা প্রতিষ্ঠানগুলোর নামে বিভিন্ন ব্যাংকের হিসাব নম্বরে স্থানান্তর করেন। এরপর সেই টাকা এস আলম গ্রুপের মালিকানাধীন এস আলম অ্যান্ড কোম্পানি, এস আলম কোল্ড রোল্ড স্টিল, চেমন ইস্পাত, গ্লোবাল ট্রেডিং, মায়মুনা ট্রেডিং, ইনফিনিটি সি আর স্টিলস, এস আলম ট্রেডিং কোম্পানির নামে থাকা বিভিন্ন হিসেব নম্বরে জমা করেন। সুদে-আসলে সেই টাকার পরিমাণ দাঁড়ায় ১২৮১ কোটি ৪৫ লাখ টাকা, যা এস আলম গ্রুপের কোম্পানিগুলোর মাধ্যমে পাচার করা হয়েছে বলে দুদকের তদন্তে তথ্য মিলেছে।

ক্ষমতার অপব্যবহার ও অপরাধমূলক বিশ্বাসভঙ্গের মাধ্যমে দুর্নীতি ও প্রতারণার আশ্রয় নিয়ে বিপুল পরিমাণ টাকা পাচারের অভিযোগে আসামিদের বিরুদ্ধে দণ্ডবিধির ৪০২, ৪০৯, ১০৯ ও ৪২০ ধারা, দুর্নীতি প্রতিরোধ আইনের ৫(২) ধারা এবং মানিলন্ডারিং প্রতিরোধ আইনের ৪(২) ও ৪(৩) ধারায় মামলাটি করা হয়েছে।

উল্লেখ্য, দেশের বেসরকারি ব্যাংক খাতে সুনামের সাথে নেতৃত্ব দেয়া ইসলামী ব্যাংক গত আওয়ামী লীগ সরকারের আমলে ‘দখলে’ নিয়েছিল এস আলম গ্রুপ। ব্যাংকটির সিংহভাগ মালিকানা তাদের নিয়ন্ত্রণে ছিল। ইসলামী ব্যাংক থেকে বিপুল পরিমাণ টাকা আত্মসাৎ করে পাচারের অভিযোগ আছে এস আলমের বিরুদ্ধে। গত বছরের ৫ আগস্ট ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে সরকার পতনের পর দৃশ্যপট পাল্টে যায়। অন্তর্বর্তী সরকার এসে ব্যাংকটিকে এস আলমের নিয়ন্ত্রণমুক্ত করে।

সারাবাংলা/আরডি/পিটিএম

১১০০ কোটি ইসলামী ব্যাংক এস আলম মামলা

বিজ্ঞাপন

আরো

সম্পর্কিত খবর