চট্টগ্রাম ব্যুরো: স্থানীয় গ্রামবাসীর সঙ্গে সংঘর্ষে গুরুতর আহত চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের মধ্যে তিনজনের অবস্থা আশঙ্কাজনক। এর মধ্যে অবস্থার অবনতি হওয়ায় দু’জনকে লাইফ সাপোর্টে নেওয়া হয়েছে। গুরুতর আহত আরেক শিক্ষার্থীকে উন্নত চিকিৎসার জন্য ঢাকায় পাঠানো হয়েছে।
সোমবার (১ সেপ্টেম্বর) চট্টগ্রাম জেলা সিভিল সার্জনের কার্যালয়ের এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, রোববার রাতে নগরীর পাঁচলাইশে বেসরকারি পার্কভিউ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন দুই শিক্ষার্থীকে সেখানে নিবিড় পরিচর্যা কেন্দ্রে (আইসিইউ) লাইফ সাপোর্টে নেওয়া হয়। এরা হলেন- বিশ্ববিদ্যালয়ের আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিভাগের ইমতিয়াজ আহমেদ (২৪) ও সমাজতত্ত্ব বিভাগের মামুন মিয়া (২৩)।
এছাড়া, বেসরকারি ন্যাশনাল হাসপাতালে চিকিৎসাধীন ইসলামিক স্টাডিজ বিভাগের শিক্ষার্থী নাইমুল ইসলামকে (২৪) ঢাকায় পাঠানো হয়েছে। চিকিৎসকেরা জানিয়েছেন, তিনি রক্তনালীতে আঘাতজনিত (ভাস্কুলার ইনজুরি) কারণে চিকিৎসাধীন ছিলেন। গত (রোববার) রাত ১০টার দিকে অস্ত্রোপচারের পর তাকে ঢাকায় পাঠানো হয়েছে।
অন্যদিকে আহত ইমতিয়াজ ও মামুন মাথায় গুরুতর আঘাত নিয়ে পার্কভিউ হাসপাতালে ভর্তি হয়েছিলেন। তাদেরও গত (রোববার) রাতে অস্ত্রোপচার হয়। এর পর অবস্থার অবনতি হওয়ায় তাদের আইসিইউতে লাইফ সাপোর্টে নেওয়া হয়।
চট্টগ্রাম জেলা সিভিল সার্জন ডা. জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী সারাবাংলাকে বলেন, ‘চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের সঙ্গে জোবরা গ্রামবাসীর সংঘর্ষে আহতদের চিকিৎসার বিষয়টি আমরা মনিটরিং করছি। সংঘর্ষে তিন শতাধিক আহত হয়েছেন। এদের মধ্যে তিনজনের অবস্থা আশঙ্কাজনক। দুজন লাইফ সাপোর্টে আছেন। একজনকে ঢাকায় পাঠানো হয়েছে। বাকিরা আশঙ্কামুক্ত। এদের অধিকাংশই প্রাথমিক চিকিৎসা নিয়ে হাসপাতাল ছেড়ে গেছেন।’
সিভিল সার্জনের কার্যালয়ের প্রতিবেদনের তথ্যানুযায়ী, রোববার (৩১ আগস্ট) বিকেল পর্যন্ত সংঘর্ষে আহত ১১৪ জন চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে এবং বিভিন্ন বেসরকারি হাসপাতালে আরও ৩০ জন চিকিৎসা নিতে যান। এ ছাড়া, প্রায় ৩০০ জন চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় মেডিকেল সেন্টারে প্রাথমিক চিকিৎসা নেন।
সর্বশেষ সোমবার দুপুর নাগাদ চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে আটজন এবং বেসরকারি পার্কভিউ হাসপাতালে ছয়জন চিকিৎসাধীন আছেন। বাকিরা চিকিৎসা নিয়ে হাসপাতাল ছেড়েছেন।
গত শনিবার (৩০ আগস্ট) রাতে ও রোববার সকাল থেকে চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের সঙ্গে স্থানীয় গ্রামবাসীর দফায় দফায় সংঘর্ষ হয়। এতে অন্তত তিন শতাধিক আহত হয়, যাদের বেশিরভাগই শিক্ষার্থী। সংঘর্ষের এক পর্যায়ে রোববার দুপুর ২টা থেকে বিশ্ববিদ্যালয় এলাকায় ১৪৪ ধারা জারি করে হাটহাজারী উপজেলা প্রশাসন।