ইসরায়েলের অবরোধ ভাঙতে গাজার উদ্দেশ্যে যাত্রা করা গ্লোবাল সমুদ ফ্লোটিলা (জিএসএফ)–এর একটি নৌযান তিউনিসিয়ার বন্দরে ড্রোন হামলার শিকার হয়েছে বলে দাবি করেছে সংগঠনটি। সোমবার রাতে সিদি বু সাঈদ বন্দরে এ ঘটনা ঘটে। তবে নৌকায় থাকা ছয় যাত্রী ও ক্রু সবাই অক্ষত রয়েছেন।
তিউনিসিয়ার ন্যাশনাল গার্ড অবশ্য এই দাবি নাকচ করে জানিয়েছে, হামলার কোনো প্রমাণ পাওয়া যায়নি। প্রাথমিক তদন্তে ধারণা করা হচ্ছে, সিগারেটের আগুন বা হালকা জ্বালানির কারণে নৌকায় আগুন ধরে যায়। তবে ফ্লোটিলা কর্তৃপক্ষ প্রকাশিত একটি ভিডিওতে দেখা যায়, আকাশ থেকে একটি জ্বলন্ত বস্তু নৌকায় পড়ে বিস্ফোরণ ঘটায়।
জিএসএফ জানিয়েছে, আক্রান্ত নৌকাটির নাম ‘ফ্যামিলি বোট’, যা আগে থেকেই সংগঠনটির অন্যতম প্রধান বাহন হিসেবে ব্যবহৃত হয়ে আসছিল। পর্তুগিজ পতাকাবাহী এ জাহাজটির মূল ডেক ও নিচতলার গুদাম অংশ আগুনে ক্ষতি হয়েছে।
ফ্লোটিলার প্রায় ৫০টি জাহাজের মধ্যে এই নৌকাটি অন্যতম। এগুলোর লক্ষ্য হলো ইসরায়েলের নৌ অবরোধ ভেঙে গাজায় ত্রাণ পৌঁছে দেওয়া। বহরটি গত সপ্তাহে বার্সেলোনা থেকে যাত্রা শুরু করেছে এবং ভূমধ্যসাগর পাড়ি দিয়ে গাজার দিকে যাচ্ছে। এই অভিযানে সুইডিশ জলবায়ু কর্মী গ্রেটা থুনবার্গ ও আইরিশ অভিনেতা লিয়াম কানিংহ্যামসহ বহু আন্তর্জাতিক কর্মী যুক্ত হয়েছেন।
ঘটনার সময় থুনবার্গ নৌকায় ছিলেন না। তবে সেখানে থাকা পর্তুগিজ কর্মী মিগুয়েল দুয়ার্তে সাংবাদিকদের জানান, সোমবার রাতে তিনি মাথার ওপরে ড্রোনের গুনগুন শব্দ শুনতে পান। কিছুক্ষণের মধ্যে ড্রোনটি নৌকার সামনের অংশে চলে যায় এবং একটি বিস্ফোরক বস্তু ফেলে দেয়। এতে আগুন ধরে যায়। দুয়ার্তে বলেন, ‘এটি লজ্জাজনক আক্রমণ। তবে আমাদের পথ আটকানো যাবে না।’
এই নিয়ে এই ফ্লোটিলায় একাধিকবার এমন হামলার অভিযোগ উঠেছে। গত মে মাসে মাল্টার উপকূলে একটি ত্রাণবাহী জাহাজে আগুন ধরে যায়। তখন সংগঠকেরা ইসরায়েলি ড্রোন হামলার অভিযোগ করেন। জুন মাসে আবার গাজার উপকূলে ১২ কর্মীসহ একটি ইয়ট আটক করে ইসরায়েল। সেটিকে তেলআবিব কর্তৃপক্ষ তুচ্ছতাচ্ছিল্য করে ‘সেলফি ইয়ট’ হিসেবে উল্লেখ করেছিল।
সোমবারের ঘটনায় ইসরায়েলি সেনাবাহিনী কোনো মন্তব্য করেনি। তবে জিএসএফ জানিয়েছে, ভয়ভীতি ও হামলা তাদের মানবিক মিশন থামাতে পারবে না।