ঢাকা: বেশ জোরেশোরেই চলছে নির্বাচনের প্রস্তুতি, তাই নির্বাচনি খোলেয়াড়দের ফাউল করা থেকে বিরত থাকার আহ্বান জানিয়েছেন প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) এ এম এম নাসির উদ্দিন। বৃহস্পতিবার (২৫ সেপ্টেম্বর) আগারগাঁয়ের নির্বাচন ভবনের নিজ দফতরে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে তিনি এ আহ্বান জানান।
ফেব্রুয়ারির ভোট নিয়ে সিইসি বলেন, ‘ফেব্রুয়ারিতে নির্বাচনের জন্যেই চূড়ান্ত প্রস্তুতি চলছে। এজন্য যা যা করা দরকার তা করা হচ্ছে। প্রধান উপদেষ্টাও নিউইয়র্কে যার সঙ্গে দেখা হচ্ছে বলছেন, ফেব্রুয়ারিতে নির্বাচন। আমরা ঐতিহাসিক নির্বাচন অনুষ্ঠানের জন্য কাজ করছি।’ এক্ষেত্রে সবার সহযোগিতা কামনা করেন তিনি।
এ সময় আগামী নির্বাচনে সবার জন্য সমান সুযোগ তৈরিতে ইসি সর্বশক্তি প্রয়োগ করবে বলেও জানান সিইসি। একজন সম্পাদকের কলামকে উদ্বৃত করে এ এম এম নাসির উদ্দিন বলেন, ‘সম্পাদক লিখেছেন, সব খেলোয়াড় যদি ফাউল করার জন্য মাঠে নামে, তাহলে ম্যাচ পণ্ড করা ছাড়া উপায় নেই। সবাই ফাউল করার জন্য মাঠে নামলে তো মুশকিল। কেউ যেন ফাউল না করে সে বিষয়ে আমরা তৎপর। নির্বাচনে কেউ ফাউল করতে নামবেন না, ভালো নিয়তে নামবেন আশা করি।’ এ বিষয়ে রাজনৈতিক সমঝোতাও আশা করেন তিনি।
ভোটকে সামনে রেখে গণ্ডগোলের চেষ্টা হলেও অতীতের মতো সব ঠাণ্ডা হয়ে যাবে বলেও মনে করেন নাসির উদ্দিন। তিনি বলেন, ‘১৯৯১ সালে অনেক গোলমাল হয়েছে। পরে সব ঠাণ্ডা হয়ে যায়। ’৯৬-এর ইলেকশনের আগেও গোলমাল হয়ে সব ঠাণ্ডা হয়। ২০০৮ সালেও এরকম গোলমাল হয়েছে। সব ঠাণ্ডা হয়ে যাবে, নানান মত থাকবে।’ জাতীয় স্বার্থে সবাই এক জায়গায় আসবে বলেও আশা প্রকাশ করেন সিইসি।
এক প্রশ্নের জবাবে সিইসি জানান, ভোটে সেনা থাকবে। ইসিও সবার জন্য সমান সুযোগ তৈরি করবে। তিনি বলেন, ‘কোনো রাজনীতিবিদ ফাউল খেলার জন্য নির্বাচনের মাঠে নামবেন না। উনারা চাচ্ছেন সুন্দরভাবে খেলতে, লেভেল প্লেয়িং ফিল্ড চাচ্ছেন। আমরা লেভেলে প্লেয়িং ফিল্ড তৈরিতে সর্বশক্তি নিয়োগ করব। এক লাখ আর্মি সদস্য নামবে বলে জানিয়েছেন স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা। আমি খুব কনফিডেন্ট। ভয় পাওয়ার কোনো কারণ নেই।’
জিএম কাদের নেতৃত্বাধীন জাতীয় পার্টি ইসিতে নিবন্ধিত। এরই মধ্যে আনিসুল ইসলাম মাহমুদ ও রুহুল আমিন হাওলাদারের একাংশ মূল জাপা দাবি করে ইসিতে চিঠি দিয়েছে। জাপাকে ইসির সংলাপে ডাকবেন কি না? এমন প্রশ্নের উত্তরে সিইসি বলেন, ‘সময় আসুক দেখব। এখনো তো সংলাপ শুরু করিনি। ঐকমত্য কমিশনের সংলাপ এখনো চলছে। আমরা একটু পরে করব। সিভিল সোসাইটিসহ অন্যদের সঙ্গে আলোচনা করে শেষের দিকে দলের সঙ্গে বসব। এখন (জাপা নিয়ে) রাজনৈতিক বিতর্ক চলছে, দেখি কী হয়।’
জাতীয় পার্টির ভাঙনের মধ্যে কোনটি আসল দল তা নিয়ে কনফিউজড সিইসি বলেন, ‘পাঁচটি জাতীয় পার্টি পেয়েছি। আপনারা কয়টি পেয়েছেন? লাঙ্গলের দাবিদার তো একাধিক। জাপা বললে, আমি কনফিউজড। হাফ ডজন আছে।’
এ সময় দল নিবন্ধন নিয়ে বলেন, ‘এ মাসেই নিবন্ধন দেব বলেছিলাম। এখন পত্রপত্রিকায় নানান অভিযোগ আসছে। তাই আমাদের অতিরিক্ত ইনফরমেশন সংগ্রহ করতে হচ্ছে। সেজন্য দুয়েকদিন দেরি হচ্ছে।’ তবে সিদ্ধান্ত নেওয়ার পরও আপত্তি চেয়ে পত্রিকায় বিজ্ঞপ্তি দেওয়া হবে বলে জানান সিইসি।