ফরিদপুর: ‘সাংবাদিক হইছিস দেইখ্যা কি … … হয়ে গেছিস। পাড়ায় ধইর্যা মাইর্যা ফেলব।’— এভাবেই সালথা প্রেসক্লাবের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ও দৈনিক যুগান্তর প্রতিনিধি শফিকুল ইসলামকে মেরে ফেলার হুমকি দিয়েছেন উপজেলা শ্রমিক লীগের সহ-সভাপতি কালাম বিশ্বাস ও যুবদল নেতা বালাম দাই।
কালাম বিশ্বাস আগে সালথা উপজেলা শ্রমিক লীগের সহ-সভাপতি ছিলেন। আর বালাম দাই নিজেকে যুবদল নেতা দাবি করে থানার দালালি ও শালিস বাণিজ্য করে বিপুল অবৈধ সম্পদের মালিক হয়ে গেছেন এরই মধ্যে। তার নামে চুরি, চাঁদাবাজি, সরকারি সম্পত্তি ভাঙচুরের মামলাসহ একাধিক মামলা রয়েছে।
এ ঘটনায় সালথা থানায় রাতে একটি লিখিত অভিযোগ দাখিল করেন সাংবাদিক শফিকুল ইসলাম। লিখিত অভিযোগে বলা হয়, সালথা বাজারের বটতলায় তাদের মালিকানার একটি দোকান ঘর ভাড়া নেন আনোয়ার মোল্যার ছেলে লিয়াকত মোল্যা (৩৩)। এর পর ভাড়ার পরিবর্তে ওই দোকান ঘরে নিজেরাই ব্যবসার সিদ্ধান্ত নিয়ে ভাড়াটিয়া লিয়াকতকে ঘর ছেড়ে দেওয়ার জন্য মৌখিকভাবে জানান। তাকে নিয়মানুযায়ী তিনমাসের নোটিশও দেওয়া হয়। লিয়াকত মোল্লা দোকান ছাড়বেন না বলে জানালে এদিন সালথা বাজার কমিটির সেক্রেটারির অফিসে বিষয়টি নিয়ে সালিশ বসে।
ওই সালিশের এক পর্যায়ে জামাল ওরফে বালাম দাই (৩০), কালাম বিশ্বাস (৪০), দেলোয়ার মাতুব্বর (৪০), সোহরাপ (৩০) সহ অজ্ঞাতনামা কয়েকজনকে সঙ্গে নিয়ে এসে হুমকি দেয়। বালাম দাই বলে, ‘কোনো সাংবাদিক গুনার টাইম নাই, আমরা এলাকা নিয়ন্ত্রণ করে বেড়াই। লিয়াকত মোল্যা তোদের দোকান ছাড়বে না, তুই যা পারিস তাই করে দেখা।’ আর কালাম বিশ্বাস বলে, ‘তোর মুখ খ্যাতলাইয়্যা দিবো।’
একথা বলে তেড়ে ওঠার পর শফিকুলের বড় ভাই দৈনিক নয়াদিগন্তের সালথা উপজেলা প্রতিনিধি রেজাউল করিম (৩৫) এগিয়ে এলে তাকে মারপিটের চেষ্টা করে। এ সময় সালথা প্রেসক্লাবের সাধারণ সম্পাদক ও দৈনিক সমকালের সালথা উপজেলা প্রতিনিধি সাইফুল ইসলামসহ অন্যরা এগিয়ে এলে তারা প্রাণে মেরে ফেলার হুমকি দিয়ে চলে যায়।
সালথা থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) আতাউর রহমান বলেন, ‘আমি বিষয়টি শুনেছি। কিন্তু এই মুহূর্তে দুর্গাপূজার ডিউটিতে বাইরে রয়েছি। থানায় যেয়ে বিষয়টি দেখব।’
এদিকে, সালথা প্রেসক্লাবের সভাপতি নুরুল ইসলাম নাহিদ সাংবাদিক শফিকুল ইসলাম ও তার ভাইকে প্রাণে মেরে ফেলার হুমকির নিন্দা জানিয়ে দোষীদের দ্রুত গ্রেফতার দাবি করেন।