Sunday 05 Oct 2025
Sarabangla | Breaking News | Sports | Entertainment

তিস্তার পানি বিপৎসীমার উপরে, রেড অ্যালার্ট জারি

ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট
৫ অক্টোবর ২০২৫ ২১:০১ | আপডেট: ৫ অক্টোবর ২০২৫ ২২:২১

তিস্তার বাঁধ। ছবি: সংগৃহীত

রংপুর: উজানের পাহাড়ি ঢল ও ভারী বৃষ্টিপাতের কারণে তিস্তা নদীর পানি এখন বিপৎসীমার উপরে। রোববার (৫ অক্টোবর) সন্ধ্যায় পানি উন্নয়ন বোর্ড (পাউবো) জানিয়েছে, তিস্তার পানি ডালিয়া পয়েন্টে বিপৎসীমার ১০ সেন্টিমিটার উপর দিয়ে প্রবাহিত হয়েছে। পরিস্থিতির গুরুত্ব বিবেচনায় তিস্তা অববাহিকায় রেড অ্যালার্ট জারি করা হয়েছে, এবং স্থানীয়দের নিরাপদ স্থানে সরে যাওয়ার জন্য মাইকিং করা হচ্ছে।

পাউবোর তথ্য অনুযায়ী, রবিবার সকাল ৯টায় তিস্তার পানি বিপদসীমার ১৫ সেন্টিমিটার নিচ দিয়ে প্রবাহিত হলেও, বিকেল ৩টার দিকে পানি আরও ১৪ সেন্টিমিটার বৃদ্ধি পেয়ে বিপৎসীমার মাত্র ১ সেন্টিমিটার নিচে ছিল। সন্ধ্যার দিকে পানি বিপৎসীমার অতিক্রম করে, যার ফলে রংপুরের গঙ্গাচড়া, কাউনিয়া ও পীরগাছা উপজেলার তিস্তা তীরবর্তী নিম্নাঞ্চল, চর ও দ্বীপচরে পানি প্রবেশ শুরু হয়েছে। রাতে পানি আরও বাড়ার ভয়ে অনেকেই তিস্তার বাঁধে আশ্রয় নিয়েছেন।

বিজ্ঞাপন

পাউবোর নির্বাহী প্রকৌশলী রবিউল ইসলাম জানান, ভারতের সিকিমসহ বাংলাদেশের উত্তরাঞ্চলে ভারী থেকে অতিভারী বৃষ্টিপাতের পূর্বাভাস রয়েছে, যা ৬ অক্টোবর পর্যন্ত অব্যাহত থাকতে পারে। এর ফলে তিস্তার পানি আরও বাড়ার আশঙ্কা রয়েছে।

তিনি আরও বলেন, পরিস্থিতি নিবিড়ভাবে পর্যবেক্ষণ করা হচ্ছে এবং সম্ভাব্য ক্ষয়ক্ষতি রোধে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে সতর্ক করা হয়েছে।

তিস্তার পানি বৃদ্ধির কারণে গঙ্গাচড়া, কাউনিয়া ও পীরগাছার নিম্নাঞ্চলের বাসিন্দারা উদ্বিগ্ন। চর ও দ্বীপচরের বাসিন্দারা তাদের বাড়িঘর ছেড়ে নিরাপদ স্থানে সরে যাচ্ছেন। স্থানীয় বাসিন্দা রহিম উদ্দিন বলেন, প্রতিবছর বর্ষায় তিস্তার পানি আমাদের জীবন দুর্বিষহ করে তোলে। এবারও ঘরে পানি ঢুকছে, ফসল নষ্ট হওয়ার ভয় রয়েছে।

প্রশাসনের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, ত্রাণ ও উদ্ধার কার্যক্রমের প্রস্তুতি নেওয়া হচ্ছে। তবে, স্থানীয়রা দীর্ঘমেয়াদী সমাধান হিসেবে তিস্তা নদীর ব্যাপক পরিকল্পনা বাস্তবায়নের দাবি জানাচ্ছেন।

নোহালী ইউনিয়নের চেয়ারম্যান আশরাফ আলী বলেন, ‘আমার ইউনিয়নটি তিস্তা নদীর তীরবর্তী। প্রায় চার বাসিন্দা ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ার সম্ভাবনা আছে। বিষয়টি উপজেলা প্রশাসনকে জানানো হয়েছে, তারা সহযোগিতার আশ্বাস দিয়েছেন।’

গঙ্গাচড়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মাহমুদ হাসান মৃধা বলেন, বন্যা পরিস্থিতি মোকাবিলায় প্রয়োজনীয় নেওয়া হয়েছে।

রংপুরের বিভাগীয় কমিশনার শহিদুল ইসলাম জানান, এই অঞ্চলের তিস্তা পানি পানি বৃদ্ধি পাওয়ায় এবং অন্যান্য জেলাগুলোর নদ-নদীগুলোতে পানি বৃদ্ধির আশঙ্কায় সংশ্লিষ্ট জেলা প্রশাসক, উপজেলা নিবার্হী কর্মকর্তা এবং প্রকল্প কর্মকর্তাদের ইতোমধ্যেই পরিস্থিতি মোকাবেলার জন্য সকল প্রস্তুতি নেওয়ার নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। যারা পানিবন্দী হয়ে পড়বেন তাদের দ্রুত উঁচু স্থানে আশ্রয়কেন্দ্রে নেওয়ার ব্যবস্থা করবেন তারা। পানিবন্দী মানুষদের খাবারেরও ব্যবস্থা করবেন তারা।

সারাবাংলা/জিজি

তিস্তা বিপদসীমার উপরে রেড অ্যালার্ট