রংপুর: জেলার পীরগাছা উপজেলার কল্যাণী ইউনিয়নের তৈয়ব গ্রামে গৃহবধূ শেফালী বেগমকে গাছের সঙ্গে বেঁধে নির্যাতনের ঘটনায় সতিন আমেনা খাতুনকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ।
ভুক্তভোগীর করা মামলা ও মারধরের ঘটনার ভিডিও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়ার পর রোববার (৫ অক্টোবর) সন্ধ্যায় মহানগর মাহিগঞ্জ থানা পুলিশ অভিযান চালিয়ে তাকে গ্রেফতার করে।
মাহিগঞ্জ থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) আব্দুল কুদ্দুস এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, গত শুক্রবার রাতে শেফালী বেগমকে তার স্বামী নজরুল ইসলাম ও সতিন আমেনা খাতুন মারধর করেন। মধ্যরাতে তাঁকে বাড়ির উঠানে গাছের সঙ্গে বেঁধে ফের নির্যাতন করা হয়। ভোররাতে শেফালীর চিৎকারে প্রতিবেশীরা এগিয়ে এলে স্থানীয়রা ঘটনার ভিডিও ধারণ করে সামাজিক মাধ্যমে ছড়িয়ে দেন। পরে গণমাধ্যমকর্মীদের উপস্থিতিতে প্রতিবেশীরা শেফালীর বাঁধন খুলে দেন।
শেফালী জানান, তিনি নিজতাজ গ্রামের বাসিন্দা। ২০১৪ সালে নজরুল ইসলামের সঙ্গে তার বিয়ে হয়। বিয়ের পর থেকে স্বামী ও সতিন আমেনা তাকে নির্যাতন করতেন। এ কারণে তিনি প্রায় এক বছর ধরে আত্মীয়ের বাড়িতে আশ্রয়ে ছিলেন। শুক্রবার রাতে স্বামীর বাড়িতে এলে নজরুল তাকে তালাক দেওয়ার কথা বলেন। তালাকের কাগজ দেখতে চাইলে নির্যাতন শুরু হয়। শেফালী অভিযোগ করেন, নজরুল, তার চাচাতো ভাই বক্কর, বোন জামাই মঞ্জু, প্রতিবেশী কাশিম ও ইয়াসিন এই নির্যাতনে জড়িত ছিলেন। এ ঘটনায় তিনি ছয়জনের বিরুদ্ধে মামলা করেছেন।
তবে নজরুল দাবি করেন, তিনি শেফালীকে তালাক দিয়েছেন এবং শুক্রবার রাতে তাকে বাড়ির পেছনে বেঁধে রাখা হয়। তবে মারধরের অভিযোগ মিথ্যা।
স্থানীয় ইউপি সদস্য শাহীন মির্জা বলেন, তিনি ঘটনাস্থলে গিয়ে শেফালীকে উদ্ধার করে বাড়িতে পাঠান। স্থানীয়ভাবে আপস-মীমাংসার চেষ্টা চলছে। তবে শেফালী অভিযোগ করেন, আপসের নামে সময়ক্ষেপণ করা হচ্ছে।
ওসি আব্দুল কুদ্দুস জানান, অভিযোগ পাওয়ার পর ঘটনাস্থল পরিদর্শন করা হয়েছে এবং আমেনা খাতুনকে গ্রেফতার করা হয়েছে।