Monday 06 Oct 2025
Sarabangla | Breaking News | Sports | Entertainment

‘সবার জন্য পরিবেশ বান্ধব ও দুর্যোগ সহনশীল আবাসন নিশ্চিত করতে হবে’

স্পেশাল করেসপন্ডেন্ট
৬ অক্টোবর ২০২৫ ১৭:২৬

পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রণালয় এবং পানি সম্পদ মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান

ঢাকা: পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রণালয় এবং পানি সম্পদ মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান বলেছেন, সবার জন্য দুর্যোগ-সহনশীল, পরিবেশ বান্ধব ও বিকেন্দ্রীকৃত আবাসন ব্যবস্থা গড়ে তুলতে হবে। বসতি কোনো বিলাসিতা নয়, এটিকে একটি মৌলিক মানবাধিকার হিসেবে স্বীকৃতি দিতে হবে।

সোমবার (৬ অক্টোবর) রাজধানীর শেরেবাংলা নগরে বাংলাদেশ-চীন মৈত্রী সম্মেলন কেন্দ্রে ‘পরিকল্পিত উন্নয়নের ধারা, নগর সমস্যায় সাড়া’ প্রতিপাদ্যে বিশ্ব বসতি দিবস ২০২৫ উপলক্ষ্যে আয়োজিত আলোচনা সভায় পরিবেশ উপদেষ্টা এসব কথা বলেন।

তিনি বলেন, ‘শুধু শহরাঞ্চলে নয়, গ্রামাঞ্চলেও রাষ্ট্রীয় ব্যবস্থাপনায় প্রয়োজনীয় সংখ্যক আধুনিক আবাসনের ব্যবস্থা করতে হবে। শুধু মাথা গোঁজার ঠাঁই নয়, বরং বিদ্যুৎ, পানি, গ্যাস, পরিবহণসহ প্রয়োজনীয় অবকাঠামো নিশ্চিত করেই বসতি গড়ে তুলতে হবে।

বিজ্ঞাপন

পরিবেশ উপদেষ্টা বলেন, ‘জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাবে বাংলাদেশের প্রায় এক-তৃতীয়াংশ ভূমি পানির নিচে চলে যাওয়ার আশঙ্কা রয়েছে। সেই বাস্তবতায় এখন থেকেই সুদূরপ্রসারী পরিকল্পনা গ্রহণ না করলে বিপুলসংখ্যক মানুষের পুনর্বাসন একটি ভয়াবহ চ্যালেঞ্জ হয়ে দাঁড়াবে।’

তিনি সরকারি-বেসরকারি অংশীদারিত্ব (পিপিপি) এবং কর্পোরেট সামাজিক দায়বদ্ধতার (সিএসআর) মাধ্যমে নিম্নবিত্ত ও জলবায়ু ঝুঁকিপূর্ণ জনগোষ্ঠীর জন্য সাশ্রয়ী আবাসন নিশ্চিত করার ওপর গুরুত্বারোপ করেন।

তিনি আরও বলেন, ‘মুক্তবাজার অর্থনীতির স্বার্থে একপাক্ষিক নগরায়ণ ও আবাসন ব্যবস্থা সমতা ও অন্তর্ভুক্তির সুযোগ সংকুচিত করছে। ফলে একজন বিত্তশালী একাধিক ফ্ল্যাটের মালিক হলেও একজন মধ্যবিত্ত নাগরিক একটি ফ্ল্যাট কিনতে পারছেন না। বসতি নিশ্চিত করা তাই রাষ্ট্রের সংবিধানসম্মত দায়িত্ব এবং মানবাধিকারের অংশ হওয়া উচিত।’

আলোচনা সভায় গৃহায়ন ও গণপূর্ত এবং শিল্প মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা আদিলুর রহমান খান বলেন, ‘উপকূলীয় শহরগুলোতে জলবায়ু পরিবর্তনের অভিঘাত তীব্র আকারে প্রকাশ পাচ্ছে। ক্রমবর্ধমান জলাবদ্ধতা ও লবণাক্ততা জনজীবন, কৃষি এবং নগর অবকাঠামোকে গভীর সংকটে ফেলে দিচ্ছে। এ সব সমস্যা সমাধানে একটি গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ হলো একটি পরিকল্পিত ও বাসযোগ্য নগর গড়ে তোলা।’

গণপূর্ত উপদেষ্টা আরও বলেন, ‘পরিকল্পিত নগরায়ণ শুধুমাত্র অবকাঠামোর উন্নয়ন নয়, এটি মানুষের জীবনমান উন্নয়নের মূল চাবিকাঠি। আমরা যদি সমন্বিতভাবে ও পরিকল্পিতভাবে কাজ করি, তবে বাংলাদেশের নগরগুলোর বর্তমান সংকটগুলো মোকাবিলা করে এগুলোকে আমরা আধুনিক, টেকসই ও বসবাসযোগ্য নগর রূপে গড়ে তুলতে পারব বলে আমি বিশ্বাস করি।’

আলোচনা সভায় সভাপতিত্ব করেন গৃহায়ন ও গণপূর্ত মন্ত্রণালয়ের সচিব মো. নজরুল ইসলাম। বক্তব্য দেন জাতিসংঘ উন্নয়ন কর্মসূচি (ইউএনডিপি)-এর ডেপুটি আবাসিক সমন্বয়কারী সোনালী দয়ারত্নে। এ ছাড়া গৃহায়ন ও গণপূর্ত মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব মো. আব্দুল মতিন, রাজধানী উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের চেয়ারম্যান ইঞ্জিনিয়ার মো. রিয়াজুল ইসলাম, জাতীয় গৃহায়ন কর্তৃপক্ষের চেয়ারম্যান মোসা. ফেরদৌসী বেগম, গণপূর্ত অধিদফতরের প্রধান প্রকৌশলী মোহাম্মদ শামীম আখতার এবং স্থাপত্য অধিদফতরের প্রধান স্থপতি মো. আসিফুর রহমান ভূঁইয়াসহ বিভিন্ন সংগঠনের প্রতিনিধিরা বক্তব্য দেন।

অনুষ্ঠানে অতিথিরা ‘বিশ্ব বসতি দিবস ২০২৫’-এর স্মারকগ্রন্থের মোড়ক উন্মোচন করেন এবং পরে তিনদিন ব্যাপী বসতি মেলার বিভিন্ন স্টল পরিদর্শন করেন। আলোচনা সভার পূর্বে বিশ্ব বসতি দিবস ২০২৫ উপলক্ষ্যে শেরেবাংলা নগর এলাকায় বর্ণাঢ্য র‍্যালি অনুষ্ঠিত হয়।

সারাবাংলা/এমএমএইচ/এইচআই

আবাসন পরিবেশ উপদেষ্টা বিশ্ব বসতি দিবস সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান

বিজ্ঞাপন

আরো

সম্পর্কিত খবর