নোয়াখালী: নোয়াখালীর মাইজদীতে ব্যবসায়ী অপহরণ মামলায় সাবেক পৌর বিএনপির সহসভাপতিসহ তিনজনকে কারাগারে পাঠিয়েছে আদালত।
বুধবার (৮ অক্টোবর) সকালে আসামিরা নোয়াখালী জেলা ও দায়রা জজ আদালতে আত্মসমর্পণ করে জামিনের আবেদন করেন। এ সময় শুনানি শেষে আদালতের বিচারক ড. মোরশেদ ইমতিয়াজ তাদের জামিন আবেদন নামঞ্জুর করে কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দেন।
আসামিরা হলেন-মাইজদী কোর্ট এলাকার মো. আহসান উল্লাহর ছেলে মোহাম্মদ সোহাগ, লক্ষ্মীনারায়ণপুর এলাকার হাজী মো. রফিক উল্যাহর ছেলে নাছিম উদ্দিন এবং পূর্ব রামচন্দ্রপুর এলাকার মফিজ মিয়ার ছেলে সাবেক বিএনপি নেতা বাচ্চু মিয়া সোহেল।
জানা যায়, চলতি বছরের ২৬ জানুয়ারি মাইজদীর হাউজিং এলাকার বাসার সামনে থেকে দ্যা ন্যাশনাল এইচআর লিমিটেড কোম্পানির পরিচালক ও ডা. আবুল হোসেন সরকারের ছেলে হাফেজ মো. রহমত উল্যাহকে অপহরণ করা হয়। পরে আসামিদের মালিকানাধীন মেহরান ডাইন রেস্টুরেন্টের আন্ডারগ্রাউন্ডে নিয়ে তাকে শারীরিক নির্যাতন করা হয়।
বিষয়টি জানাজানি হওয়ার পর ভুক্তভোগীর প্রতিষ্ঠানের এক কর্মচারী ৯৯৯-এ ফোন করলে পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে রহমত উল্যাহকে উদ্ধার করে। পরে চিকিৎসা শেষে তিন দিন পর ২৯ জানুয়ারি তিনি সংশ্লিষ্ট আদালতে মামলা দায়ের করলে আদালত পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন (পিবিআই)-কে তদন্ত করে প্রতিবেদন দেওয়ার নির্দেশ প্রদান করে। প্রায় তিন মাস পর্যন্ত তদন্ত শেষে মামলার সত্যতা নিশ্চিত করে প্রতিবেদন দাখিল করে।
কোর্ট সূত্রে জানা যায়, আদালতে তদন্ত প্রতিবেদন জমা দেওয়ার পর আসামিদের বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করে। পরে আসামিরা আদালতে হাজির না হয়ে হাইকোর্ট থেকে অগ্রিম জামিন নেন। হাইকোর্টের নির্দেশনা অনুযায়ী নিয়মিত জামিনের জন্য তারা জেলা ও দায়রা জজ আদালতে হাজির হলে আদালত তাদের জামিন আবেদন খারিজ করে কারাগারে পাঠানোর আদেশ দেন।
ভুক্তভোগীর আইনজীবী এডভোকেট বেলায়েত হোসেন ও নোয়াখালী আইনজীবী সমিতির সভাপতি এডভোকেট তাজুল ইসলাম বলেন, ব্যবসায়ী রহমত উল্যাহকে হত্যার উদ্দেশ্যে আসামিরা সেদিন রেস্টুরেন্টের আন্ডারগ্রাউন্ডে নিয়ে গিয়েছিল। সৌভাগ্যবশত পুলিশ দ্রুত পৌঁছায়, না হলে প্রাণহানির আশঙ্কা ছিল। পিবিআই তদন্তে ঘটনার সত্যতা প্রমাণিত হয়েছে বলেই আদালত তাদের কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দেন।
আসামি পক্ষের আইনজীবী জেলা বিএনপির সাবেক সাধারণ সম্পাদক অ্যাডভোকেট আব্দুর রহমান বলেন, উভয় পক্ষের মধ্যে ব্যবসায়িক লেনদেন ছিল। সেই বিরোধ থেকে ব্যবসায়ী রহমত উল্যাহ পোস্টার ছাপিয়েছেন। সেসময় তাকে ধরে নিয়ে অত্যাচার করায় অপহরণ মামলা দেওয়া হয়েছে। আসামিরাও পরবর্তীতে মানহানির মামলা দায়ের করেন। আজ অপহরণ মামলায় আসামি তিনজনকেই কারাগারে প্রেরণ করা হয়েছে।