ঢাকা: স্থানীয় সরকার উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদ এবার ‘সেফ এক্সিট’ প্রসঙ্গে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে পোস্ট দিয়ে তীব্র প্রতিক্রিয়া জানিয়েছেন।
বুধবার (৮ অক্টোবর) রাতে নিজের ফেসবুক অ্যাকাউন্টে দেওয়া এক পোস্টে তিনি বলেন, “যাদের একাধিক দেশের পাসপোর্ট, নাগরিকত্ব নেওয়া তারাই আবার অন্যদের সেফ এক্সিটের তালিকা করে।”
সম্প্রতি জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) আহ্বায়ক নাহিদ ইসলাম একটি টেলিভিশন সাক্ষাৎকারে উপদেষ্টাদের মধ্যে ‘সেফ এক্সিট’ বা নিরাপদ প্রস্থান নিয়ে ভাবনার কথা উল্লেখ করেন। তার সেই মন্তব্য ঘিরেই উপদেষ্টাদের মধ্যে আলোচনা ও প্রতিক্রিয়া শুরু হয়।
আসিফ মাহমুদ তার পোস্টে আরও লেখেন—“যারা ৫ আগস্ট পালিয়েছিল, তাদের সিমপ্যাথাইজাররা কষ্টে মরে যাচ্ছে। বারবার ফ্যাসিস্টদেরই পালাতে হবে। আমাদের জন্ম এ দেশে, মৃত্যুও হবে এ দেশের মাটিতেই ইনশাআল্লাহ। ফ্যাসিস্ট খুনিদের সঙ্গে লড়তে লড়তে আমার ভাইদের মতো শহিদী মৃত্যু কামনা করি।”
এই মন্তব্যের মাধ্যমে তিনি মূলত নাহিদ ইসলামের সাক্ষাৎকারে দেওয়া বক্তব্যের পরিপ্রেক্ষিতেই প্রতিক্রিয়া জানিয়েছেন বলে রাজনৈতিক মহলে আলোচনা চলছে।
এর আগে, একই দিন দুপুরে পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রণালয় এবং পানি সম্পদ মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা সৈয়দা রিজওয়ানা হাসানও নাহিদের বক্তব্যের প্রতিক্রিয়া দেন। তিনি বলেন, “উপদেষ্টারা সেফ এক্সিট খুঁজছে—এই দাবি প্রমাণের দায়িত্ব নাহিদ ইসলামের। আমি কোনো এক্সিট খুঁজছি না, দেশেই ছিলাম, বাকিটা জীবনও এখানেই কাটাব।”
রিজওয়ানা আরও বলেন, সরকারের সঙ্গে সকল রাজনৈতিক দলের মতো নবগঠিত কিছু রাজনৈতিক সংগঠনেরও ভালো সম্পর্ক রয়েছে। কিন্তু নাহিদ ইসলাম কোন অভিমান বা উদ্দেশ্য থেকে ‘সেফ এক্সিট’ প্রসঙ্গ তুলেছেন, তা তাদের দলেরই বিষয়।
“তাদের অনানুষ্ঠানিক বক্তব্য নিয়ে সরকারের পক্ষ থেকে মন্তব্য করা সম্ভব নয়,”—তিনি যোগ করেন।
উল্লেখ, গত কয়েকদিন ধরে ‘সেফ এক্সিট’ শব্দটি রাজনৈতিক অঙ্গনে আলোচনার কেন্দ্রে। এনসিপি আহ্বায়ক নাহিদ ইসলাম তার সাক্ষাৎকারে অভিযোগ করেন— “রাজনৈতিক দলের নেতাদের এবং যেসব উপদেষ্টা হয়েছেন, তাদের অনেককে বিশ্বাস করাটা আমাদের ভুল ছিল। আমরা ছাত্র নেতৃত্বকে শক্তিশালী না করে নাগরিক সমাজ ও রাজনৈতিক দলকে অতিরিক্ত বিশ্বাস করেছি। সেই জায়গায় আমরা প্রতারিত হয়েছি। অনেক উপদেষ্টা নিজেদের আখের গুছিয়েছে বা গণ–অভ্যুত্থানের সঙ্গে প্রতারণা করেছে। সময় এলে তাদের নামও প্রকাশ করব।”
তার এই বক্তব্যের পর থেকেই উপদেষ্টাদের মধ্যে তীব্র প্রতিক্রিয়া দেখা দেয়। কেউ কেউ নাহিদকে ‘অযৌক্তিক’ মন্তব্যের জন্য দায়ী করছেন, আবার কেউ বা তার বক্তব্যকে গুরুত্ব দিয়ে উপদেষ্টাদের ভূমিকা নিয়ে নতুন করে ভাবার আহ্বান জানিয়েছেন।